মাদরাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত শুরু

বরিশাল প্রতিনিধি |

বরিশালের উত্তর জনপদের ঐতিহ্যবাহী গৌরনদী উপজেলার কাসেমাবাদ (হরিসোনা) সিদ্দিকিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ আবু সাইদ কামেল কাওছারের বিরুদ্ধে মাদরাসার তিনজন শিক্ষক অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে জানিয়েছেন। লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে তদন্ত প্রতিবেদন দেবার জন্য গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

শুক্রবার সকালে মোবাইল ফোনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসরাত জাহান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে তদন্তের নির্দেশ পাওয়ার পর তিনি বিষয়টি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেবার জন্য অনুরোধ করেছেন। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মাদরাসার তিনজন শিক্ষকের আবেদনে অধ্যক্ষ কাওছারের বিরুদ্ধে মাদরাসার বিভিন্নখাত থেকে দুর্নীতির মাধ্যমে প্রায় পৌনে তিন কোটি টাকা আত্মসাৎ, স্বেচ্ছাচারিতা, জুলুম ও অত্যাচারের বিভিন্ন অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়াও চারদলীয় জোট সরকারের আমলে বিএনপি দলীয় সাবেক সাংসদ জহির উদ্দিন স্বপনের ঘনিষ্ট ক্যাডার হিসেবে চিহ্নিত অধ্যক্ষের ভাগ্নে নাছরুল খলিফাকে মাদরাসার গাছ বিনা মূল্যে দেয়ারও অভিযোগ করা হয়েছে।

এমনকি মাদরাসার একাধিক শিক্ষকের নামে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে সে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়েছে। তবে অভিযোগকারী শিক্ষকরা অধ্যক্ষ কাওছারের বিরুদ্ধে কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি বলে দাবি করেছেন। মাদরাসার সহকারী কম্পিউটার শিক্ষক ফিরোজ আলম জানান, কেউ হয়তো আমার নাম ব্যবহার করে অধ্যক্ষর বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে। তবে তদন্ত করা হলে অভিযোগের অধিকাংশরই সত্যতা পাওয়া যাবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

মাদরাসার সহকারী কম্পিউটার শিক্ষক ফিরোজ আলম বলেন, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ২৪ সেপ্টেম্বর তার প্রথম স্ত্রীর নাম ব্যবহার করে কে বা কারা তার (ফিরোজ) বিরুদ্ধে মাদরাসায় অভিযোগ প্রদান করেন। এরপর মাদ্রাসা থেকে তাকে নোটিশ প্রদান করা হয়। তিনি (ফিরোজ) নোটিশের সন্তোষজনক জবাব দেবার পরেও তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয় অধ্যক্ষ। তিনি আরও বলেন, আমার প্রথম স্ত্রীর নাম ও স্বাক্ষর জাল করে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করানো হয়েছে। সে বিষয়টি আমার প্রথম স্ত্রী অধ্যক্ষকে লিখিতভাবে জানানো সত্ত্বেও অধ্যক্ষ তার (ফিরোজ) বেতন ছাড়ার জন্য দুই লাখ টাকা দাবি করেন। তিনি আরও বলেন, অধ্যক্ষের দাবিকৃত দুই লাখ টাকা দিতে না পারায় গত ১০ মাস যাবত তার বেতন বন্ধ থাকায় স্ত্রী সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

এ বিষয়ে কাসেমাবাদ সিদ্দিকিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ আবু সাইয়েদ কামেল মো. কাওছার জানান, একটি বিশেষ মহল ষড়যন্ত্র করে তার সুনাম ক্ষুণ্ণ করার জন্য মাদরাসার তিনজন শিক্ষকের নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন জায়গায় আবেদন করেছেন। যার কোনোটিই সত্য নয়। এ বিষয়ে শিক্ষকরা সভা করে রেজুলেশনও করেছেন। তবে রেজুলেশনে প্রায় সব শিক্ষকদের স্বাক্ষর থাকলেও আরবি প্রভাষক আবু ছালেহ ও সহকারী কম্পিউটার শিক্ষক ফিরোজ আলমের স্বাক্ষর পাওয়া যায়নি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি ১২শ’ শিক্ষার্থীর আতঙ্কে দিন কাটছে - dainik shiksha কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি ১২শ’ শিক্ষার্থীর আতঙ্কে দিন কাটছে বিলেত সফরে শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha বিলেত সফরে শিক্ষামন্ত্রী ডলার সংকটে কঠিন হচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা - dainik shiksha ডলার সংকটে কঠিন হচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা সুপাড়ি চুরির সন্দেহে দুই ছাত্রকে নির্যা*তন - dainik shiksha সুপাড়ি চুরির সন্দেহে দুই ছাত্রকে নির্যা*তন ডক্টরেট ডিগ্রি পেলো বিড়াল - dainik shiksha ডক্টরেট ডিগ্রি পেলো বিড়াল নামী স্কুলগুলোর ফলে পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে - dainik shiksha নামী স্কুলগুলোর ফলে পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0043590068817139