নোয়াখালীর চাটখিল কামিল মাদরাসার সভাপতি ফয়সাল আল মাহমুদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে মাদরাসার গভর্নিং বডির সভার রেজুলেশন পরিবর্তনের অভিযোগ উঠেছে। প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির সদস্য ও অধ্যক্ষের অভিযোগ, সভায় সভাপতি ও অধ্যক্ষের যৌথ স্বাক্ষরে মাদরাসার আর্থিক লেনদেন চালানোর সিদ্ধান্ত হলেও সভাপতি অবৈধভাবে রেজুলেশন পরিবর্তন করে একজন অভিভাবক সদস্যকে আর্থিক লেনদেনের ক্ষমতা দিচ্ছেন। এ পরিস্থিতিতে সভাপতিকে গভর্নিং বডি থেকে বাদ দেয়ার দাবি তুলেছেন প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে সভাপতি ফয়সাল আল মাহমুদের দাবি, গভর্নিং বডির সবার সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখানে নিয়মবহির্ভূতভাবে কিছু হয়নি।
জানা গেছে, গত ২৫ নভেম্বর প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভায় সভাপতি, সহ-সভাপতির, শিক্ষক প্রতিনিধি অভিভাবক সদস্য, বিদ্যোৎসাহী সদস্য ও সদস্য সচিব উপস্থিত ছিলেন। নিয়ম অনুযায়ী সভায় প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় এজেন্ডাভিত্তিক বিষয়ের ওপর আলোচনা করে সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় এবং সিদ্ধান্তগুলো রেজুলেশন আকারে লিপিবদ্ধ করা হয়।
পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি মেহেদি হাসান রুবেল ভূঁইয়ার অভিযোগ, সব সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে গভর্নিং বডির সভাপতি এবং সদস্য সচিবের (অধ্যক্ষ) যৌথ স্বাক্ষরে মাদরাসার সব অ্যাকাউন্ট পরিচালিত হবে। কিন্তু সভা শেষে পরদিন সকালে সভাপতি ফয়সাল মাহমুদ এবং অভিভাবক সদস্য কামাল হোসেন অধ্যক্ষকে জিম্মি করে রেজুলেশনে অ্যাকাউন্ট পরিচালনা সংক্রান্ত বিষয়টি পরিবর্তন করেন। তিনি তাতে সংযুক্ত করেন, সভাপতির অবর্তমানে অভিভাবক সদস্য কামাল হোসেনের যৌথ স্বাক্ষরে লেনদেন করা যাবে, তাদের তিনজনের যেকোনো দুইজনে স্বাক্ষরে ব্যাংকের লেনদেন পরিচালিত হবে। এ কথা মিটিংয়ে আলোচনা না করে ওই মিটিংয়ের রেজুলেশনে তা সংযোজন করা হয়। সবার সিদ্ধান্তের পরেও সভাপতি কেনো অধ্যক্ষকে জিম্মি করে এ কাজ আমার বোধগম্য নয়। পরবর্তী সভায় গভর্নিং বডির অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
মাদরাসার অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) ও গভর্নিং বডির সদস্য সচিব বশির উল্যা বলেন, সভার পরেরদিন সকালে সভাপতি এবং কমিটির সদস্য কামাল হোসেন আমাকে জিম্মি করে রেজুলেশনে কিছু অংশ সংযোজন করতে বাধ্য করেন। পরে বিষয়টি আমি সহ-সভাপতিকে জানালে তিনি অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে বিষয়টি আলোচনা করেন।
পরিচালনা কমিটির দাতা সদস্য জাকির হোসেন জাহাঙ্গীর জানান, সভাপতি নিজে একজন আইনজীবী হয়েও এ ধরনের বেআইনি কাজ কিভাবে করেছেন সেজন্য আমরা তার অপসারণ দাবি করছি। সেইসঙ্গে অভিভাবক সদস্য কামাল হোসেনকেও পরিচালনা কমিটি থেকে বহিষ্কারের দাবি জানাচ্ছি।
এসব বিষয়ে মন্তব্য জানতে প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি ফয়সাল আল মাহমুদ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, গভর্নিং বডির একজন সহসভাপতি উদ্দেশমূলকভাবে অভিযোগ তুলেছেন। যে সিদ্ধান্ত হয়েছে তা সবার সঙ্গে আলোচনা করেই নেয়া হয়েছে। নিয়মবহির্ভুতভাবে কিছু করা হয়নি।