মাদরাসায় শিক্ষার্থী কমেছে বেড়েছে সাধারণ শিক্ষা ও কারিগরিতে

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

গত ৯ বছরে সাধারণ শিক্ষা ও পলিটেকনিকে শিক্ষার্থীসংখ্যা উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় বাড়লেও কমছে মাদরাসায়। মানসম্মত শিক্ষক, পর্যাপ্ত অবকাঠামোসহ প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে না পারায় মাদরাসায় শিক্ষার্থী ধরে রাখা যাচ্ছে না বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। রোববার (৩০ জুন) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন নিজামুল হক।

২০১০ খ্রিষ্টাব্দে দাখিল স্তরে শিক্ষার্থী ছিল ২৪ লাখ ৪৪ হাজার। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে এ সংখ্যা প্রায় ২ লাখ কমে গিয়ে দাঁড়ায় ২২ লাখ ৬১ হাজারে। আলিমে শিক্ষার্থী ৭ লাখ ১৯ হাজার থেকে কমে ৬ লাখ ৫৪ হাজার হয়েছে।

সাধারণ শিক্ষায় মাধ্যমিক স্তরে একই সময়ে শিক্ষার্থী ৭০ লাখ ৩০ হাজার থেকে বেড়ে হয়েছে ৯৯ লাখ ৪৩ হাজার। উচ্চমাধ্যমিকে ৪ লাখ ৬৮ হাজার থেকে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে বেড়ে হয়েছে ৭ লাখ ৪১ হাজার। আর পলিটেকনিকে একই সময়ে শিক্ষার্থী বেড়ে ৮৩ হাজার থেকে আড়াই লাখ হয়েছে।

মাদরাসায় শিক্ষার্থীসংখ্যা কমে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মাদরাসা-শিক্ষকদের সংগঠন জমিয়াতুল মোদাররেছীনের মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা শাব্বীর আহমদ মোমতাজীও। তিনি বলেন, মাদরাসার শিক্ষার্থীরা নানাভাবে বঞ্চিত। প্রাথমিকে শিক্ষার্থীদের কোনো উপবৃত্তি নেই। এছাড়া বিভিন্ন স্তরে যেসব শিক্ষক রয়েছেন তাঁদের বেশিরভাগেরই কোনো প্রশিক্ষণ নেই। অবকাঠামো সমস্যা তো আছেই। চাকরি এবং উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বঞ্চিত হবার কথা জানান তিনি। তিনি বলেন, মাদরাসাশিক্ষার এ সমস্যা জেনে অভিভাবকরা তাঁদের সন্তানকে মাদরাসায় পাঠাতে আগ্রহ পাচ্ছেন না। মাদরাসাশিক্ষায় তথ্যপ্রযুক্তিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হলেও এ বিষয়ে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ নেই। দেশে প্রতিবছরই সরকারি স্কুল-কলেজের সংখ্যা বাড়ছে। অথচ দেশে মাত্র তিনটি সরকারি মাদরাসা রয়েছে।

তথ্যমতে, দেশের ৭৫ শতাংশ মাদরাসায় কোনো বিজ্ঞানাগার নেই। এতে বিজ্ঞান বিষয়ে ব্যবহারিক শিক্ষাগ্রহণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। প্রয়োজনীয় অবকাঠামো না থাকায় দাখিল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিজ্ঞানশিক্ষায় অংশগ্রহণের হার অনেক কম। এসএসসিতে মাত্র পাঁচটি প্রতিষ্ঠান শূন্য পাস করলেও দাখিলে ১০৭টি প্রতিষ্ঠান থেকে কেউ পাস করেনি।

মাদরাসাশিক্ষা মনিটরিংয়ের অভাব রয়েছে মনে করেন অভিভাবকরা। তাঁরা বলেন, অনেক মাদরাসায় শিক্ষার্থীর চেয়ে শিক্ষক সংখ্যা বেশি। আবার অনেক স্থানে মাদরাসা চালু করা হলেও বেতন-ভাতার অভাবে শিক্ষকরা মাদরাসায় ঠিকমতো আসেন না। ক্লাস নেন না। ফলে এসব মাদরাসায় শিক্ষার্থী সংখ্যা কমছে প্রতিনিয়ত।

মাদরাসা বোর্ডের প্রাক্তন চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম ছায়েফ উল্যার মতে, সারাদেশে ৯ হাজার ৩৮৫টি মাদরাসা রয়েছে। এসবের মধ্যে দাখিল ও আলিম স্তরের মাদরাসা রয়েছে। ইবতেদায়ি মাদরাসাও রয়েছে। একসময় সারাদেশে ১৬ হাজারের মতো ইবতেদায়ি ছিল। বর্তমানে সেটি কমে ৭ হাজারে এসেছে।

মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কায়সার আহমেদ বলেন, কেন শিক্ষার্থীসংখ্যা কমছে তা দেখতে হবে। তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থী কমে যাওয়া এবং পাশের হার কাঙ্ক্ষিত না থাকায় অনেক মাদরাসায় শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে আমি শুনেছি।’


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ ছাত্র আহত, হাসপাতালে ১১ - dainik shiksha বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ ছাত্র আহত, হাসপাতালে ১১ যতো লিখেছি, ছিঁড়েছি তার বেশি - dainik shiksha যতো লিখেছি, ছিঁড়েছি তার বেশি তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি - dainik shiksha তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ - dainik shiksha সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই - dainik shiksha শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই বিদ্যালয়ের ক্লাস থামিয়ে ভোট চাইলেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী - dainik shiksha বিদ্যালয়ের ক্লাস থামিয়ে ভোট চাইলেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0037720203399658