মাস তিনেক আগে দাখিল পরীক্ষার জন্য ফরম পূরণ করেছিল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার শিলাইকুঠি বালাবাড়ি দাখিল মাদরাসার ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার। তার বাড়ি বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের সরকারপাড়া এলাকায়। ফরম পূরণের জন্য মাদরাসা কর্তৃপক্ষ তার কাছে ২৫০০ টাকা নেয়। এরপর পরীক্ষার জন্য পড়াশুনা করলেও প্রবেশপত্র পায়নি সুমাইয়া।
শনিবার মাদরাসায় প্রবেশপত্র দেয়ার কথা। সেই প্রবেশপত্র আনতে যায় সুমাইয়া। প্রবেশপত্রের জন্য অন্যদের মতো মাদরাসা কর্তৃপক্ষকে ৫০০ টাকাও দেয় সে। প্রবেশপত্র নিতে গিয়ে দেখে যে তার নামে কোনো প্রবেশপত্র আসেনি। পরে জানতে পারে তার ফরম পূরণই করেনি মাদরাসা কর্তৃপক্ষ। তার বদলে ভুল করে দুই বছর আগে বিয়ে হয়ে লেখাপড়া থেকে ছিটকে পড়া সুরাইয়া নামের এক ছাত্রীর ফরম পূরণ করে দিয়েছে তারা।
শুরুতে বিশ্বাস করতে পারছিল না সে। পরে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পরে তার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে। মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে সে। তার পরিবারের সদস্যরাও ভেঙে পড়েন। দশ বছর লেখাপড়া করে দাখিল পরীক্ষার যে স্বপ্ন দেখেছিল প্রত্যন্ত গ্রামের শিক্ষার্থী তা বুঝি আর পূরণ হলো না। বিষয়টি জানাজানি হলে পুরো এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। স্থানীয়রা মাদরাসা কর্তৃপক্ষের এমন দয়িত্বহীন কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানান।
ওই ছাত্রীর বড় বোন মোর্শেদা আক্তার বলেন, মাদরাসায় গিয়ে প্রবেশপত্র আনতে গিয়ে যখন আমার বোন জানতে পারে যে তার ফরম পূরণই হয়নি তারপর থেকে সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। এখন সে যদি কোনো অঘটন ঘটিয়ে ফেলে এর দায় কে নেবে?
মাদরাসার সুপার বদরুল আলম সরকার বলেন, সুমাইয়ার পরিবর্তে ভুলক্রমে সুরাইয়া নামের এক ছাত্রীর ফরম পূরণ হয়ে গেছে। আমরা আজকেই বিষয়টি জানতে পেরেছি। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও বোর্ডের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছি। দেখি কি করা যায়। তবে এই ভুলের দায়ভার কার- এমন প্রশ্নের জবাব দিতে পারেননি এই প্রতিষ্ঠান প্রধান।
এ বিষয়ে তেঁতুলিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শওকত আলী বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। এটি প্রতিষ্ঠান প্রধানে গাফিলতি। প্রবেশপত্র এসেছে অন্তত দুই সপ্তাহ আগে। তারা খুলেছে আজ। এই শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে না পারলে এর দায় দায়িত্ব প্রতিষ্ঠান প্রধানের। আমি সুপারকে নির্দেশ দিয়েছি যেভাবেই হোক ওই শিক্ষার্থী যেন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য।