বরিশালের বানারীপাড়ায় খাল থেকে মাদরাসা ছাত্রের লাশ উদ্ধারের আটদিন পর হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও তিন শিক্ষকসহ ৫ জনকে আসামী করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে পরস্পর যোগসাজসে হত্যার উদ্দেশ্যে লাশ গুম করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
বরিশাল জেলার বানারীপাড়া থানায় রোববার (২৭ অক্টোবর) রাতে নিহতের ভাই সৈয়দ আল রুম্মান বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোমিন উদ্দিন বলেন, মামলার তদন্ত কাজ শুরু হয়েছে। ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ইয়াসিনকে পিটিয়ে ও লাথি দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার পর লাশ গুম করতে খালে ফেলে দেয়া হয়। আসামিরা পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপতারের চেষ্টা চলছে।
মামলার বাদী সৈয়দ আল রুম্মান বলেন, ‘গত জুলাই মাসে ইয়াসিনকে ওই মাদরাসায় ভর্তি করা হয়। সে কোরআনের ২৮ পারা হাফেজ ছিলো। গত ১৭ অক্টোবর মাকে ফোন করে মাদরাসার অধ্যক্ষ আব্দুর রব মিয়া জানান ইয়াসিনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। নিরীহ ও শান্ত প্রকৃতির ইয়াসিন কাউকে না জানিয়ে কোথাও যায় না। তার নিখোঁজের বিষয়টি প্রথমে মেনে নিতে পারিনি।’
রুম্মান অভিযোগ করে বলেন, ‘অধ্যক্ষ আব্দুর রব মিয়া মাদরাসার আশেপাশে খুঁজতে না দিয়ে তাদের মিস গাইড করার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে খালের মধ্যে লাশ পাওয়া যায়।’
রুম্মান জানান, ‘ইয়াসিনের দাফনের পর মাদরাসায় গিয়ে জানতে পারি তার নিখোঁজের বিষয়টি আশেপাশের কেউ জানতো না। মাদরাসার অন্যান্য ছাত্রদের মাধ্যমে জানতে পারি ঘটনার দিন শিক্ষক আহমাদুল্লাহ আহম্মদ হুজুরের নেতৃত্বে ছাত্ররা মাটি এনে মাদরাসার উঠোনে রাখে। সৌখিন পরিবেশে বেড়ে ইয়াসিন কখনোই শ্রমমূলক কাজ করেনি। তাই ক্লান্ত হয়ে পাকা ঘরের মেঝেতে বসে পড়ে। তখন মাদরাসার শিক্ষক রায়হান হাওলাদার তাকে এলোপাতাড়ি পিটিয়েছে।’
‘এক পর্যায়ে ওর বুকে, চোখে মুখে সজোরে লাথি দেয়। এতে ইয়াসিন দেয়ালে ধাক্কা খেয়ে পড়ে সেখানে অজ্ঞান হয়ে যায়। এরপর ইয়াসিনকে কাঁথা দিয়ে পেঁচিয়ে আব্দুর রব মিয়া, রায়হান হাওলাদার, আহমাদুল্লাহ আহম্মদসহ কয়েকজন ধরে গুদাম ঘরে রাখে। পরে রাতে ইয়াসিনের লাশ গুম করার উদ্দেশ্য নদীতে ফেলে দেয়। ইয়াসিনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে জড়িতদের শাস্তি চেয়েছেন ভাই রুম্মান।’