মাদরাসা শিক্ষকদের উচ্চতর গ্রেডের আবেদন অগ্রায়ণ করছেন না শিক্ষা কর্মকর্তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

বহু প্রতীক্ষার পর মাদরাসা শিক্ষকদের উচ্চতর গ্রেডের আবেদন গ্রহণ শুরু হয়েছে। শিক্ষকদের আবেদনের জন্য মেমিস সফটওয়্যার প্রস্তুত। শিক্ষকরা আবেদনের নির্ধারিত সময়ে অর্থাৎ ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনলাইনে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির আবেদন করতে পারবেন। কিন্তু সারাদেশের শিক্ষকরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানিয়েছেন, অধিদপ্তর থেকে আদেশ জারি না হওয়ায় মাঠ পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তারা শিক্ষকদের আবেদন অগ্রায়ণ করছেন না। 

মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, শিক্ষকদের আবেদনের জন্য কোন আলাদা আদেশ জারি করার দরকার নেই। নির্ধারিত সময়ে সব শিক্ষককে আবেদন করতে হবে। কোন শিক্ষা কর্মকর্তা বিভ্রান্ত হলে অধিদপ্তরে যোগাযোগ করে বিভ্রান্তি দূর করতে পারবেন। 

জানা গেছে, মেমিস সফটওয়্যারর মাধ্যমে প্রতিমাসের ১ তারিখ থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত মাদরাসার শিক্ষক-কর্মচারীরা অনলাইনে এমপিওভুক্তিসহ অন্যান্য আবেদন করার সুযোগ পান। ১ বছর আগে আদেশ জারি করা হলেও চলতি ফেব্রুয়ারি মাস থেকে শিক্ষকদের উচ্চতর গ্রেডের আবেদনের জন্য মেমিস সফটওয়্যার খুলে দেয়া হয়েছে। অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, শিক্ষকরা এমপিও আবেদনের নির্ধারিত সময়ে উচ্চতর গ্রেডের আবেদন করতে পারবেন। তবে, মাদরাসা শিক্ষকরা চাকরির ১০ বছর পূর্তিতে প্রাপ্য উচ্চতর গ্রেডের আবেদন করতে পারবেন। ১৬ বছর পুর্তির উচ্চতর গ্রেডের আবেদন এখনো নেয়া হচ্ছে না। এ বিষয়ে মামলা চলমান থাকায় শিক্ষকদের দ্বিতীয় বা ১৬ বছর পুর্তিতে প্রাপ্য উচ্চতর গ্রেডের আবেদন নেয়ার নির্দেশনা এখনো অর্থ মন্ত্রণালয় দেয়ানি বলে মন্তব্য করেছেন কর্মকর্তারা।

কিন্তু সারাদেশের শিক্ষকরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, মাঠ পর্যায়ের অনেক কর্মকর্তা আবেদন অগ্রায়ণ করছেন না। এর কারণ কর্মকর্তারা অধিদপ্তর থেকে কোন আদেশ পাননি। 

পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারী উপজেলার পানি সাইল দাখিল মাদরাসার সহকারী শিক্ষক মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. তোবারক হোসেন বলেছেন পরিপত্র প্রকাশ ছাড়া ফাইল নেয়া হবে না। 

ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার গৌরীনাথপুর দাখিল মাদরাসার শিক্ষক এস এম মিনহাজ কাদির দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের সুস্পষ্ট আদেশ না থাকায় শিক্ষকদের আবেদন নেয়া হচ্ছে না। 

যদিও অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, শিক্ষকদের উচ্চতর গ্রেডের আবেদনের জন্য মেমিস সফটওয়্যার প্রস্তুত। শিক্ষকরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। আবেদনের নির্ধারিত সময়ে শিক্ষকরা উচ্চতর গ্রেডের আবেদন করতে পারবেন। এ জন্য আলাদা আদেশের দরকার নেই। তারা আবেদন করতে পারবেন। কোন কোন কর্মকর্তার মতে, মাদরাসা শিক্ষকদের কাছ থেকে ঘুষ বাবদ কিছু টাকা আদায়ের ফন্দি করে কেউ কেউ আবেদন অগ্রায়ণ না করে থাকতে পারেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কে এম রুহুল আমীন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, শিক্ষকদের আবেদনের জন্য কোন আলাদা আদেশ জারি করার দরকার নেই। কোন শিক্ষা কর্মকর্তা বিভ্রান্ত হলে অধিদপ্তরে যোগাযোগ করে বিভ্রান্তি দূর করতে পারবেন। শিক্ষক ও শিক্ষক কর্মকর্তাদের প্রতি অনুরোধ সুস্পষ্টভাবে অধিদপ্তরকে জানান কোন উপজেলা বা জেলা থেকে আবেদন অগ্রায়ণ করা হচ্ছে না। আমরা মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে বিভ্রান্তি দূর করবো।  

এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী মাদরাসা শিক্ষকদের উচ্চতর স্কেল দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সে অনুযায়ী মাদরাসা শিক্ষকদের উচ্চতর স্কেলের আবেদন পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হলেও যোগ্য শিক্ষকদের আবেদন করতে পারছিলেন। কারণ মেমিস সফটওয়্যারে আবেদনের সুযোগ দেয়া হচ্ছিল না। সে জটিলতা কেটেছে। শিক্ষকদের আবেদনের সুযোগ দেয়া হয়েছে। 

২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ২ জানুয়ারি কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ থেকে মাদরাসা শিক্ষকদের উচ্চতর গ্রেড দেয়ার আদেশ জারি করা হয়েছিল। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদারাস শিক্ষা বিভাগ থেকে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠানো আদেশে বলা হয়, মাদরাসার জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০১৮ জারির তারিখ অর্থাৎ ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ জুলাই থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর হবে। সে অনুযায়ী মাদরাসার শিক্ষক-কর্মচারীদের অনুকূলে সৃষ্ট বিভিন্ন সুবিধা বা উচ্চতর স্কেল দেয়ার লক্ষ্যে মাদরাসার জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক বিধি বিধান অনুসরণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0025520324707031