মাদ্রাসাছাত্রকে বলাৎকারের চেষ্টা: শিক্ষককে পিটুনি

বরিশাল প্রতিনিধি |

বরিশাল নগরীর আমতলা পানির ট্যাংকি এলাকায় মনিরুল কুরআন নূরানী হাফেজী ও কওমী মাদ্রাসায় ১১ বছর বয়সি এক আবাসিক ছাত্রকে বলাৎকারের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে মাদ্রাসার শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

বুধবার (১৬ই আগস্ট) ওই এলাকার হেলাল এন্টারপ্রাইজ নামক ভবনের মাদ্রাসাটিতে এই ঘটনায় জনতার রোশানল থেকে রক্ষা পেতে অভিযুক্ত শিক্ষক হাফেজ মো. রাতুলকে কয়েকটি চর থাপ্পর দিয়ে মাদ্রাসা থেকে বের করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষক হাফেজ মো. রাতুল বরিশাল নগরীর বেলতলা এলাকার বাসিন্দা এবং মনিরুল কুরআন নূরানী হাফেজী ও কওমী মাদ্রাসার আরবী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

এদিকে অভিযোগ উঠেছে কোন প্রকার নিয়ম-কানুন না মেনেই মনিরুল কুরআন নূরানী হাফেজী ও কওমী মাদ্রাসাটি একটি ভাড়া বাড়িতে পরিচালিত হয়ে আসছে। এখানে কোন মহিলা শিক্ষক না থাকলেও আবাসিক হলে ছাত্রীদের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে।

বলাৎকার চেষ্টার শিকার শিশুটি জানায়, সে পড়া পারেনি। তাই শিক্ষক (হুজুর) তাকে শাস্তির নামে বুধবার সকাল ৮টার দিকে ডেকে নিয়ে বলাৎকারের চেষ্টা করে। এসময় তিনি কোন রকম দৌরে পালিয়ে মাদ্রাসার সামনে রাস্তায় নেমে এসে কান্না করে।

ঘটনাটি সন্দেহজনক মনে হলে স্থানীয়রা শিশুর কাছ থেকে বিস্তারিত জেনে তার পরিবারকে সংবাদ দেয়ার পাশাপাশি মাদ্রাসার পরিচালক মনিরুল ইসলাম ও অভিযুক্ত শিক্ষক রাতুলকে অবরুদ্ধ করে ফেলে। এক পর্যায় স্থানীয়দের রোশানল থেকে বাঁচতে রাতুল নামের শিক্ষককে মারধর করে মাদ্রাসা থেকে বের করে দেয়।

স্থানীয়রা জানান, মনিরুল কুরআন নূরানী হাফেজী ও কওমী মাদ্রাসাটিতে ইতিপূর্বে ছাত্রদের বলাৎকার, নির্যাতন সহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে পরিচালক এবং শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। মাদ্রাসা পরিচালক ও শিক্ষকদের নির্যাতন থেকে বাঁচতে অনেক শিক্ষার্থী পালিয়েও গেছে।

তাছাড়া মাস কয়েক পূর্বে এক এতিম শিশুকে বেত্রাঘাতের মাধ্যমে নির্মম ভাবে নির্যাতনের অভিযোগে মাদ্রাসার পরিচালক মনিরুল ইসলামকে আটকও করেছিলো কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ।

সূত্রগুলো আরো জানায়, মনিরুল ইসলাম এর ওই মাদ্রাসাটি ছাড়াও তালিমুল নিছা মহিলা কওমী মাদ্রাসা নামক আরো একটি মাদ্রাসা রয়েছে। এ মাদ্রাসাটিতে শিশু শিক্ষার্থীদের যৌন নিপীড়নের অভিযোগ করে এলাকাবাসী। এর ফলে মহিলা মাদ্রাসাটির ভবন মালিক তার ভবনের ভাড়া বাতিল করে কর্তৃপক্ষকে বিতারিত করে দেন।

এদিকে সরেজমিনে ভাড়া ভবনে থাকা মাদ্রাসাটিতে দেখাগেছে, দুটি সাইন বোর্ডে মাদ্রাসার দুটি নাম রয়েছে। মাদ্রাসা দুটি হলেও শিক্ষা কার্যক্রম চলছে একই স্থানে। এমনকি একই ভবনে রয়েছে শিক্ষার্থীদের আবাসিক সুবিধাও। যে খানে ছেলে এবং মেয়ে শিক্ষার্থীরা বসবাস করছে।

তবে মাদ্রাসা দুটিতে ছাত্রী থাকলেও সেখানে নেই নারী শিক্ষক। আবাসিক হলের সুপারের দায়িত্বে আছেন একজন পুরুষ শিক্ষক। এর ফলে বিষয়টি নিয়ে উদ্ভিগ্ন হয়ে পড়েছেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা। তাছাড়া মাদ্রাসায় শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হলেও প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় কোন কাগজপত্রই নেই দেখাতে পারেননি কর্তৃপক্ষ।

অভিযোগের বিষয় নিয়ে মাদ্রাসা দুটির পরিচালক মনিরুল ইসলাম এর আলাপকালে তিনি বলেন, বলাৎকার চেষ্টার অভিযোগ সত্যি। তাই তাৎক্ষনিক ভাবেই ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। তাকে মারধর করে মাদ্রাসা থেকে চাকুরীচ্যুত এবং বিতারিত করা হয়েছে।

মাদ্রাসায় অব্যবস্থপনা এবং কাগজপত্রের বিষয়ে বলেন, সুন্দর ভাবেই আমাদের মাদ্রাসা পরিচালিত হচ্ছে। একটি মহল মাদ্রাসাটি নিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তাছাড়া মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালাতে কোন কাগজপত্রের প্রয়োজন নেই বলে দাবী করেছেন তিনি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা - dainik shiksha শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0097119808197021