১৭ শিক্ষকের পদোন্নতিমানিকছড়ির প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান ব্যাহত

মানিকছড়ি (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি |

সম্প্রতি মানিকছড়ি উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৭ জন সহকারী শিক্ষক  প্রধান শিক্ষক হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে অন্যত্র বদলি হওয়ায় এবং একাধিক শিক্ষক প্রশিক্ষণে ও প্রেষণে থাকায় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠদান দারুণভাবে ব্যাহত হচ্ছে। দ্রুত শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগ না হলে আসন্ন বার্ষিক পরীক্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত হবে শিক্ষার্থীরা এমনটাই  আশঙ্কা করছেন অভিভাবকরা। 

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৪৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রধান ও সহকারী  শিক্ষক পদে শূন্যতা রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ১/২ জন শিক্ষক প্রশিক্ষণে এবং অনেক ক্ষেত্রে একাধিক শিক্ষক অন্য উপজেলা কিংবা জেলা সদরে প্রেষণে থেকে বেতন নিচ্ছে। এতে করে উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষায় স্থবিরতা লেগেই আছে। এরই মধ্যে চলতি মাসে ১৭ জন সহকারী শিক্ষক একযোগে প্রধান শিক্ষক (চলতি দায়িত্বে) পদে পদোন্নতি লাভ করেন। ফলে সহকারী শিক্ষক পদে শুণ্যতা বেড়ে যায়।

 সম্প্রতি উপজেলার বিভিন্ন স্কুল থেকে একযোগে ১৭ জন সহকারী শিক্ষক প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি লাভ করেনে। ফলে শিক্ষকশূন্যতা বেড়ে যাওয়ায় শ্রেণি কার্যক্রমে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়। যেমন উপজেলার রাজবাড়ী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১১জন শিক্ষকের মধ্যে পদোন্নতিতে ৪ জন, প্রশিক্ষণে ২জন। কর্মরত ৫জন শিক্ষক প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণিসহ ৬টি ক্লাস করতে হয়। অর্থাৎ ৫ জনে ৬ ক্লাসে পড়াতে হয়। গচ্ছাবিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৯ জন শিক্ষকের মধ্যে পদোন্নতিতে ২ জন, প্রশিক্ষণে ১ জন, ২ জন প্রেষণে। অবশিষ্ট ৪ জন শিক্ষক, প্রাক-প্রাথমিক, প্রথম-অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস নিতে গিয়ে বেসামাল অবস্থায়। গাড়ীটানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৮ জন শিক্ষকের মধ্যে ২ জনের পদোন্নতি।

অবশিষ্ট ৬ জনকে ৬ ক্লাসে ব্যস্ত থাকতে হয় সারাক্ষণ। এভাবে অন্য স্কুলগুলোতেও পদোন্নতি, প্রেষণে ও প্রশিক্ষণে শিক্ষক থাকায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া গচ্ছাবিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান কার্যক্রম চালু হলেও সেখানে শিক্ষক পদ রয়েছেন মাত্র ৯। এর মধ্য থেকে ইতোমধ্যে পদোন্নতিতে ২ জন, প্রশিক্ষণে ১ জন, প্রেষণে ২ জন শিক্ষক চলে যাওয়ায় ৫৯৮ জন শিক্ষার্থীর পাঠদান নিয়ে শিক্ষকরা যেমন বেকাদায় পড়েছেন, অন্যদিকে অভিভাবকরা পড়েছে মহাসঙ্কটে। যদিও এ বছর বিদ্যালয়টি উপজেলার শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এ প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, শত বাধা-বিপত্তি ডিঙিয়ে এ বিজয়। প্রায় ৬ শত ছেলে-মেয়ে নিয়ে ৪ জন এবং প্রেষণে প্রাপ্ত ২ জনসহ ৬ জন শিক্ষক অক্লান্ত পরিশ্রম করছে। এভাবে হাত-পা বেঁধে সাতাঁর কাটতে দেয়া অযৌক্তিক।

রাজবাড়ী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ক্যজ মারমা শিক্ষক স্বল্পতার প্রসঙ্গে বলেন, এমনিতে উপজেলায় শিক্ষক সঙ্কট কাটছে না। এরই মধ্যে পদোন্নতি, প্রেষণে অন্যত্র চলে যাওয়া, শিক্ষার্থী অনুপাতে শিক্ষক পদ না থাকায় পুরো প্রাথমিক শিক্ষায় এখানে সঙ্কট চলছে, পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নজরল ইসলাম বলেন, বর্তমানে এ উপজেলায় ৩ জন প্রধান শিক্ষক, ৫১ জন সহকারী শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে। সম্প্রতি ১৭ জন শিক্ষক পদোন্নতি পাওয়ায় শ্রেণি কার্যক্রমে কিছুটা সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি জেলা শিক্ষা অফিসসহ ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।  

 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0036149024963379