কোম্পানীগঞ্জে শিক্ষিকা ধর্ষণমামলা প্রত্যাহার না করলে নুসরাতের পরিণতি!

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

কোম্পানীগঞ্জে ধর্ষণের মামলা করে বিপাকে পড়েছেন ধর্ষণের শিকার মাদরাসা শিক্ষিকা ও তার পরিবার। মামলাটি তুলে না নিলে ফেনীর সোনাগাজীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাতের মতো এই শিক্ষিকাকেও পুড়িয়ে মারার হুমকি দিয়েছে ধর্ষণে অভিযুক্ত আহমেদ মিশন। শুধু তাই নয়, শিক্ষিকার তিন বোনসহ পরিবারের সবাইকে হত্যার হুমকি দিয়েছে সে। গত শুক্রবার বিকেলে একটি বিদেশি ফোন নম্বর থেকে কল করে এ হুমকি দেওয়া হয়। এ ঘটনায় গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে ভুক্তভোগী পরিবারটি। দৈনিক সমকালের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য দেয়া হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ধর্ষণ মামলার বাদী ওই শিক্ষিকা অভিযোগ করেছেন, অভিযুক্ত আহমেদকে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বিদেশে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছে পুলিশ। তিনি তাকে দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তুমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

জানা যায়, ধর্ষণের শিকার মেয়েটি স্থানীয় বামনী ডিগ্রি কলেজে স্নাতক প্রথম বর্ষে পড়েন এবং একটি মাদ্রাসায় অতিথি শিক্ষিকা হিসেবে পড়ান। দু'বছর আগে কোম্পানীগঞ্জের মুসাপুর গ্রামের প্রয়াত এরফান মিয়ার ছেলে কাতার প্রবাসী আহমেদ মিশনের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার পরিচয় হয়। এরপর আহমেদের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে  তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়  আহমেদ। 

ভুক্তভোগী শিক্ষিকা  বলেছেন, আহমেদ মিশন দুই মাস আগে কাতার থেকে দেশে ফিরে আসে। এরপর একাধিকবার সে তাকে বাইরে ও বাড়িতে দেখা করার প্রস্তাব দেয়। এতে তিনি অসম্মতি জানান। এ ঘটনার পর আহমেদ তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। 

শিক্ষিকা আরও জানান, ঈদ-পরবর্তী গত মঙ্গলবার তার মা ভাইবোনদের নিয়ে স্বজনদের বাড়িতে বেড়াতে যান। রাতে প্রকৃতির ডাকে বাড়ির বাইরে গেলে ওতপেতে থাকা আহমেদ তার শয়নকক্ষে প্রবেশ করে। এরপর তিনি ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে ঘুমাতে গেলে আহমেদ তার মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করে। এ সময় তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে আহমেদ পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় গত বুধবার তিনি কোম্পানীগঞ্জ থানায় মামলা করেন। পুলিশ বৃহস্পতিবার এই শিক্ষিকাকে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে পাঠায়। 

শিক্ষিকা জানান, শুক্রবার বিকেলে আহমেদ একটি বিদেশি নম্বর থেকে তার ফোনে কল দিয়ে মামলা করার কারণ জানতে চায় এবং গালাগাল করে। এরপর ঘর থেকে বের না হওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলে, মামলা প্রত্যাহার না করলে মাদরাসাছাত্রী নুসরাতের মতো পরিণতি হবে। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার ছবি দিয়ে সম্মানহানি করারও হুমকি দেয় আহমেদ। এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন তরুণী ওই শিক্ষিকা। 

তিনি অভিযোগ করেন, বুধবার সকালে থানায় মামলা করতে গেলে এসআই আনোয়ার তার কাছ থেকে মামলার খরচ বাবদ ১৫০০ টাকা নেন। তবে টাকা নিয়েও পুলিশ তাকে সহযোগিতা করেনি। উপরন্তু পুলিশ লম্পট আহমেদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে তাকে এলাকা থেকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছে। 

এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আনোয়ার টাকা নেওয়ার অভিযোগটি অস্বীকার করে বলেন, আসামিকে ধরার জন্য পুলিশি চেষ্টা অব্যাহত আছে। মামলাটি দু-একদিনের মধ্যে তদন্ত শুরু করবো। আসামি দেশে আছে না বিদেশ পালিয়ে গেছে, সে ব্যাপারে তিনি নিশ্চিত নন বলে জানান। 

থানার ওসি আসাদুজ্জামান বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে মামলা নিয়েছি। আসামিকে ধরার জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। 

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মাহমুদ হাসান জনি বলেন, ধর্ষণ মামলার ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলা কিংবা বাদীর কাছ থেকে কোনো টাকা লেনদেনের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
স্কুল-মাদরাসা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ হাইকোর্টের - dainik shiksha স্কুল-মাদরাসা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ হাইকোর্টের ঢাকাসহ ১৩ জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কাল বন্ধ - dainik shiksha ঢাকাসহ ১৩ জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কাল বন্ধ প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের মৌখিক পরীক্ষা শুরু ৯ মে - dainik shiksha প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের মৌখিক পরীক্ষা শুরু ৯ মে বেসরকারি শিক্ষকদের বদলি নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশ হাইকোর্টের - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষকদের বদলি নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশ হাইকোর্টের প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নতুন নির্দেশনা টেম্পু চাপায় কলেজছাত্রী নিহত - dainik shiksha টেম্পু চাপায় কলেজছাত্রী নিহত কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0025680065155029