মার্কস পেতে যৌন সম্পর্কের প্রস্তাব, সেই শিক্ষিকাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড

দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক |

দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক: মার্কস পেতে হলে করতে হবে যৌন সম্পর্ক। ৬ বছর আগে এই যৌন কেলেঙ্কারিটি প্রকাশ্যে আসতেই তামিলনাড়ুসহ গোটা ভারতে সৃষ্টি হয়েছিল আলোড়ন। আর ছাত্রীদের এমন প্রলোভন দেখানোর অভিযোগ উঠেছিল রাজ্যটির এক সহকারী অধ্যাপকের বিরুদ্ধে। 

দীর্ঘ শুনানির পর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সেই শিক্ষিকাকে দেওয়া হয়েছে ১০ বছরের কারাদণ্ড। সঙ্গে করা হয়েছে আর্থিক জরিমানাও। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের জন্য ছাত্রীদের কাছে যৌন সুবিধা চাওয়ার দায়ে সাবেক সহকারী অধ্যাপক নির্মলা দেবীকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিলনাড়ুর একটি আদালত।

অভিযুক্ত নির্মলা দেবী তামিলনাড়ুর মাদুরাই কামরাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ দেবঙ্গ আর্ট কলেজের সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। গত সোমবার দেওয়া আদালতের রায়ে তাকে পাঁচটি ধারার অধীনে দোষী সাব্যস্ত করা হয়, যার মধ্যে চার নারীকে পাচারের চেষ্টার অভিযোগও রয়েছে।

এছাড়া তাকে প্রায় আড়াই লাখ রুপি জরিমানা করা হয়েছে। মামলায় একজন পুরুষ সহকারী অধ্যাপকসহ আরও দুজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, যৌন সম্পর্কের বদলে দেওয়া হবে বেশি নম্বর! ৬ বছর আগের সেই যৌন কেলেঙ্কারির মামলায় শুনানি শেষ করে গত সোমবার তামিলনাড়ুর শ্রীভিল্লিপুথুর মহিলা আদালত নির্মলা দেবীকে দোষী সাব্যস্ত করে। পরে আদালত তার রায়ে নির্মলা দেবীকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়। সেই সঙ্গে ২.৪২ লাখ রুপি জরিমানাও করা হয়েছে।

এই মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ভি মুরুগন এবং গবেষক এস কারুপ্পাসামির বিরুদ্ধেও জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছিল। যদিও প্রমাণের অভাবে ওই দুজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন বিচারক টি বাগভাথিয়াম্মাল। এই মামলায় মোট ১০৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।

যার মধ্যে নির্যাতিত ছাত্রীদের পাশাপাশি তাদের অভিভাবক, কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষকরাও রয়েছেন।

অবশ্য গত শুক্রবারই এই মামলার রায় দেওয়ার কথা ছিল। তবে নির্মলা দেবী আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় মামলাটি সোমবার পর্যন্ত স্থগিত রাখা হয়। সোমবার তিন অভিযুক্ত আইনজীবীদের সঙ্গে আদালতে উপস্থিত ছিলেন। যদিও সাজা ঘোষণার জন্য আরও দুদিনের সময় চেয়েছিলেন নির্মলা দেবীর আইনজীবী। তবে তাতে আপত্তি জানান সরকারি আইনজীবী।

কী ঘটেছিল?

ভারতে তোলপাড় ফেলে দেওয়া এই ঘটনাটি প্রকাশ্যে এসেছিল ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিল মাসে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেসময় একটি অডিও টেপ ভাইরাল হয়েছিল। তাতে তৎকালীন অধ্যাপক নির্মলা দেবীর সঙ্গে কলেজ ছাত্রীদের কথাবার্তা ভাইরাল হয়।

অডিও টেপে বলতে শোনা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিশেষ সম্পর্কের বদলে পরীক্ষায় ৮৫ শতাংশ পর্যন্ত নম্বর পাওয়া যাবে। আর সেই সঙ্গে অর্থও পাওয়া যাবে। কলেজ ছাত্রীদের নির্মলা দেবী সেই প্রস্তাব দিলেও অবশ্য তারা রাজি হননি। 

এই নিয়ে নির্মলার বিরুদ্ধে সেই সময় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন ৪ ছাত্রী। যদিও নির্মলা সেই সময় এই কথা অস্বীকার করেছিলেন। কিন্তু, এমন ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয় তামিলনাড়ুতে।

বিভিন্ন নারী সংগঠন এবং বিরোধী দল এই ঘটনায় সরব হয়েছিল। পরে সেই ঘটনায় অভ্যন্তরীন তদন্তের পর নির্মলা দেবীকে বরখাস্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সরকার প্রতিটি নাগরিকের অধিকার রক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ - dainik shiksha সরকার প্রতিটি নাগরিকের অধিকার রক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ কারিগরির এসএসসি ও দাখিলের রেজিস্ট্রেশনের সময় ফের বাড়লো - dainik shiksha কারিগরির এসএসসি ও দাখিলের রেজিস্ট্রেশনের সময় ফের বাড়লো প্রাথমিকের ডিজির অপসারণ ছাড়া কাজে ফিরবেন না কর্মকর্তা-কর্মচারীরা - dainik shiksha প্রাথমিকের ডিজির অপসারণ ছাড়া কাজে ফিরবেন না কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ‘তুমি কে আমি কে? আদুভাই আদুভাই’ স্লোগান শেকৃবি শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha ‘তুমি কে আমি কে? আদুভাই আদুভাই’ স্লোগান শেকৃবি শিক্ষার্থীদের মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতে একগুচ্ছ প্রস্তাব - dainik shiksha মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতে একগুচ্ছ প্রস্তাব ঢাবির নতুন প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমদ - dainik shiksha ঢাবির নতুন প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমদ কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0054559707641602