চাকরি স্থায়ীর দাবিতে রাজধানীর মালিবাগে রেললাইন অবরোধ করেছে তারা। এতে করে সারাদেশের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) রাজধাবীর মালিবাগ রেললাইন অবরোধ করে রেলের অস্থায়ী শ্রমিকরা।
রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১০টা থেকে মালিবাগ রেললাইন অবরোধের পর এখন পর্যন্ত ঢাকা থেকে তারাকান্দি যাওয়া অগ্নিবীনা এক্সপ্রেস, জামালপুর এক্সপ্রেস ও একটি লোকাল ট্রেন কমলাপুর স্টেশন থেকে সঠিক সময়ে ছাড়তে পারেনি। তারা স্টেশনে আটকে আছে।
গতকাল শনিবারের (২ সেপ্টেম্বর) মধ্যে চাকরি স্থায়ীকরণে কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় আজ ঢাকায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তারা। এর আগে অস্থায়ী শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ীকরণের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার আশ্বাস দিয়েছিল রেল কর্তৃপক্ষ। যার ফলে গত ১৬ জুলাই থেকে সে আন্দোলন স্থগিত ছিল। যা আজ আবার শুরু হয়েছে।
জানা যায়, সরকারী গেজেট বাস্তবায়নের মাধ্যমে চাকরি স্থায়ীকরনের দাবিতে রেলপথ মন্ত্রী, রেলওয়ে সচিব ও রেলওয়ের কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার গিয়েও কোন সমাধান পাওয়া যায়ানি। তাই অস্থায়ী শ্রমিকরা অবস্থান কর্মসূচী পালন করছে।
হাজারো শ্রমিক রেলপথে অবস্থান নেয়ায় মালিবাগ রেলগেইটে আটকা পড়ে ঢাকা থেকে রংপুর যাওয়ার ট্রেন ‘রংপুর এক্সপ্রেস’। যার করণে ঢাকার সঙ্গে ট্রেন যোগাযোগ আপাতত বন্ধ।
এর আগে রানিং স্টাফ কর্মচারি সমিতিও আন্দোলনে যায়। গত রোববার (২৭ আগস্ট) মধ্যরাত থেকে কর্মবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে পরের দিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সেই কর্মসূচি পালন করেছে রেলের রানিং স্টাফ কর্মচারি সমিতি। পরে বিভিন্ন আশ্বাসে রেলের রানিং স্টাফ কর্মচারি সমিতি তাদের পূর্বঘোষিত কর্মবিরতি সাময়িকভাবে প্রত্যাহার করে নেয়। ওই সময় সারা দেশে ট্রেনের শিডিউলে ব্যাপক বিপর্যয়ের আশঙ্কা দূর হয় কর্মসূচি প্রত্যাহার করায়।
মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্সের বাড়তি টাকা ও সেই অনুসারে পেনশন দেয়ার দাবিতে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিলেন রেলের রানিং স্টাফরা। তবে এদিন সন্ধ্যায় রেলের রানিং স্টাফ কর্মচারি সমিতি কর্মবিরতি সাময়িকভাবে প্রত্যাহার করে নেয়।
রানিং স্টাফদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ব্রিটিশ রেল আইন অনুযায়ী চলন্ত ট্রেনে দায়িত্ব পালন করা কর্মীদের মূল বেতনের সঙ্গে অতিরিক্ত কাজের জন্য বাড়তি টাকা দেয়া হয়। যা মাইলেজ প্রথা নামে পরিচিত। মূল বেতন অনুযায়ী প্রাপ্য পেনশন থেকে দেয়া হয় ৭৫ শতাংশ বেশি টাকা। এভাবেই বেতন ও পেনশন পেয়ে আসছিলেন রানিং স্টাফরা।
তবে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের রানিং স্টাফদের মাইলেজ সুবিধা সীমিত করে প্রজ্ঞাপন জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়। পেনশনে পাওয়া অতিরিক্ত ৭৫ শতাংশ টাকাও বাতিল করা হয়। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করেও সুফল পাননি তারা।
এ অবস্থায় রোববার মধ্যরাত থেকে কর্মবিতরতির ডাক দিয়েছিলেন রানিং স্টাফরা। রেলের রানিং স্টাফদের মধ্যে রয়েছেন ট্রেন চালক, সহকারী চালক, টিটিই ও ট্রেন পরিচালকরা।