শরীয়তপুর জেলা শহরের পাশের একটি ইটভাটা থেকে নিবির খান (১১) নামের এক শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার ভোরে পালং মডেল থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। ঐ শিশু জেলা শহরের শিশুকানন কিন্ডারগার্টেন স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ছিল। সে সদর উপজেলার খিলগাঁও এলাকার মনির খানের ছেলে। সোমবার বিকাল থেকে সে নিখোঁজ ছিল। দুর্বৃত্তরা ঐ শিশুকে অপহরণ করে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছিল। টাকা না পেয়ে হত্যা করেছে বলে জানায় পুলিশ। ঐ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ তিন ব্যক্তিকে আটক করেছে।
পালং মডেল থানা সূত্র জানায়, শরীয়তপুর সদর উপজেলার ডোমসার ইউনিয়নের খিলগাঁও এলাকার মনির খান মালয়েশিয়া প্রবাসী। তার বড় ছেলে নিবির খান। সোমবার দুপুরে মা নিপা আক্তারের সঙ্গে স্কুল থেকে সে বাড়িতে ফেরে। দুপুরের খাবার খেয়ে বাড়িতে খেলা করছিল। বিকালে দুর্বৃত্তরা তাকে অপহরণ করে। সন্ধ্যার দিকে নিপা আক্তারের মোবাইল ফোনে ফোন করে ছেলেকে অপহরণের কথা জানায় দুর্বৃত্তরা। তখন নিবিরকে মুক্ত করে দেওয়ার জন্য ৫০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। নিপা আক্তার ঘটনাটি তার স্বজনদের জানান। তারা পালং মডেল থানায় অভিযোগ করেন। পুলিশ ঐ নম্বরের সূত্র ধরে তিন ব্যক্তিকে আটক করে। আটক ব্যক্তিরা হলো সিয়াম, তুহিন গাজী ও শাকিল গাজী। আটক তিন জনের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশ মনির খানের বাড়ির পাশের একটি ইটভাটার গর্ত থেকে নিবিরের লাশ উদ্ধার করে।
নিবিরের চাচা নাসির খান বলেন, আমাদের সন্তানকে দুর্বৃত্তরা টাকার জন্য অপহরণ করে হত্যা করবে তা ভাবতে পারিনি। ফোন করে টাকা চেয়ে আর সময় দেয়নি। পুলিশ নিয়ে আমরা ছেলেকে জীবিত উদ্ধারের চেষ্টা চালাই। যারা নিবিরের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
শিশুকানন কিন্ডারগার্টেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক বাদল পাল বলেন, শরীয়তপুর একটি শান্ত শহর। এখানে অপহরণ করে শিশু হত্যার ঘটনা আমাদের উদ্বিগ্ন করেছে। নিবিরের মতো মেধাবী ও ভদ্র ছেলের এমন করুণ পরিণতি আমরা মানতে পারছি না। আমরা অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেন বলেন, শিশুটিকে মাথায় আঘাত করে ও গলাটিপে হত্যা করা হয়েছে। ঐ ঘটনায় আরো কারা জড়িত তা শনাক্তের কাজ চলছে।