জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়মুক্তিযোদ্ধার মুক্তিযুদ্ধ ও চাকুরীকাল নিয়ে প্রশ্ন

জবি প্রতিনিধি |

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. আনোয়ারা বেগম মুক্তিযোদ্ধার চাকরীকাল এক বছরের সুবিধা পাবেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে। এ সংক্রান্ত সরকারের কোন নির্দেশনা বা আদালতের আদেশ আছে কিনা যাচাই করতে বিশ্বিদ্যালয় প্রশাসন আইন উপদেষ্টার কাছে পরামর্শ চেয়েছেন। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধার মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে প্রশ্ন ও তাকে অবমাননা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।

জানা যায়, জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের ২০১৪ সালের একটি নির্দেশনা অনুযায়ী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য দপ্তর-সংস্থা তাদের অধীনে কর্মরত মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তা-কর্মচারীগণকে স্ব স্ব সংস্থার চাকুরীর বিধানবলী অনুসরণে বর্ধিত এক বছর চাকুরী করার সুযোগ প্রদান করে আসছে। উক্ত নির্দেশনা অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধা গণকর্মচারীগণের চাকুরীর মেয়াদ বৃদ্ধিও ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ঠ কর্মচারী কর্তৃক চাকুরীতে প্রবেশের সময় নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ঘোষনা করার বিষয়টিকে অত্যাবশ্যক করা হয়েছে। ড. আনোয়ারা বেগম  তার বোন মনোয়ারা ও তার ভাই সরদার আব্দুর রশিদ ১৯৭১ সালে ৯ নং সেক্টরের অধীনে পটুয়াখালী জেলায় রনাঙ্গনে মুক্তিযুদ্ধ করেন। তারা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ায় তার মাকে পাকিস্তানী বাহিনী ধরে নিয়ে নির্যাতন করেন। এ ঘটনা পটুয়াখালী জেলার সবার কাছে আলোচিত। ড. আনোয়ারা বেগম ১৯৮১ সালে পিএসসির অধীনে শিক্ষা ক্যাডারে যোগদান করেন। এ সময় মুক্তিযুদ্ধ কমান্ড কাউন্সিল থেকে একটি সনদ পিএসসিতে জমা দেন তিনি। তার মুক্তিযোদ্ধার লাল সনদ ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয় থেকে সনদ আছে। ১৯৮৭ সালে জগন্নাথ কলেজে যোগদান করেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন থেকে তিনি এখানে কর্মরত আছেন। ২০১৩ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত পিএসসির সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০২১ সালের ১২ ফ্রেবুয়ারি তার স্বাভাবিক চাকরীর মেয়াদ শেষ। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী তিনি আরও এক বছর বেশি চাকরীর সুবিধা পাবেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সুত্রে জানা তথ্যে, একটি উড়ো চিঠিতে ড. আনোয়ারা বেগম মুক্তিযোদ্ধার এক বছরের সুবিধা পাবেন না বলে অভিযোগ করেন। তার প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আনোয়ারা বেগমের চাকরীসীমার বিষয়টি দেয়া যাবে কিনা তা যাচাই করতে বিশ্ববিদ্যালয় আইন উপদেষ্টা ব্যারিষ্টার কে এম তানজিব-উল-আলমের কাছে পরামর্শ চেয়ে একটি চিঠি পাঠান।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মুক্তিযোদ্ধা ড. আনোয়ারা বেগম মুক্তিযুদ্ধ করেছেন কিনা বা তিনি মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন কিনা? এনিয়ে প্রশ্ন না মুক্তিযোদ্ধার এক বছরের চাকরী সীমা বৃদ্বি সরকারি নির্দেশনা বা আদালতের রায়  আছে কিনা কোন বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয় আইন উপদেষ্টার কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে তা জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্টার প্রকৌশলী ওহিদুজ্জামানের কাছে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন ড.আনোয়ারা বেগম সংশ্লিষ্ট একটি চিঠি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন উপদেষ্টা ব্যারিষ্টার কে এম তানজিব-উল-আলমের কাছে পাঠানো হয়েছে। কোন বিষয়ে পাঠানো হয়েছে জানতে চাইলে বলেন, এ বিষয়ে বিভিন্ন মহলে বিতর্ক আছে এবং বিষয়টি জটিল তাই এ বিষয়ে মন্তব্য করছি না। 

এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা ড. আনোয়ারা বেগম বলেন, স্বাধীনতা বিরোধী একটি চক্র বিভিন্ন সময়ে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন  করার চেষ্টা করছেন। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের জুনিয়র এক শিক্ষক আমি লাঠি দিয়ে যুদ্ধ করেছি কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার বিচার করেনি। বিএনপি-জামাত সরকারের আমলেও আমার পরিবার বিভিন্নভাবে নির্যাতিত হয়েছে। স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আমার মুক্তিযুদ্ধের সকল সনদ থাকার পরেও মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধার চাকরী সুবিধাভোগের বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ করতে বিশ্ববিদ্যালয় আইন উপদেষ্ঠার  কাছে পরামর্শ চাওয়া হয়েছে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন উপদেষ্টা ব্যারিষ্টার কে এম তানজিব-উল-আলমের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0031311511993408