মুলাদীতে নোট-গাইডের রমরমা বাণিজ্য

বরিশাল প্রতিনিধি |

মুলাদীতে আইন-নিয়মনীতিমালা উপেক্ষা করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সহায়ক বইয়ের নামে চলছে নিষিদ্ধ নোট বই-গাইডের রমরমা বাণিজ্য। মোটা অঙ্কের আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের নিুমানের নোট বই-গাইড-সহায়ক বই কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে উপজেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা চরম বিপাকে পড়েছে। নিষিদ্ধ বই বাণিজ্যে উপজেলার ‘নামিদামি!!’ প্রতিষ্ঠানগুলো সবার চেয়ে এগিয়ে রয়েছে বলে জানান অভিভাবকরা। যেসব প্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রী বেশি বই প্রকাশনীর কাছে তাদের চাহিদা থাকায় বাণিজ্যের পরিমাণও তাদের বেশি হচ্ছে। বছরের প্রথমে ক্লাস শুরুতেই উপজেলার অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা তাদের ছাত্রছাত্রীদের নির্দিষ্ট প্রকাশনীর নোট-গাইড-সহায়ক বই কিনতে বাধ্য করছে। জানা গেছে উপজেলায় ৩৭টি মাধ্যমিক ও নিু মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১৯টি মাদ্রাসা এবং ১৩৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জানুয়ারিতে শিক্ষাবর্ষ শুরু হয়।

বর্তমান সরকার শিক্ষা ব্যবস্থার সুদূরপ্রসারী উন্নয়নের লক্ষ্যে জানুয়ারিতেই বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিচ্ছে। শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল হিসেবে গড়ে ওঠার প্রত্যয়ে সরকার প্রাথমিক পর্যায়ে অর্থাৎ প্রথম শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত সব ধরনের নোট-গাইড-সহায়ক বই নিষিদ্ধ করে। কিন্তু মুলাদীতে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান বছরের শুরুতেই বিভিন্ন প্রকাশনীর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের ‘উৎকোচ-ডোনেশন’ নিয়ে নোট-গাইড-সহায়ক বই এক হিসেবে ‘পাঠ্য’ করে দিয়েছে। যে প্রকাশনীর বই ‘পাঠ্য’ করে দেয়া হয় শিক্ষার্থীদের ওই বই অবশ্যই কিনতে হবে। ওই প্রকাশনী তাদের বইয়ের পৃষ্ঠা নাম্বার যুক্ত সিলেবাস প্রণয়ন করে প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করে থাকে এবং প্রকাশনীর লোকজন প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করে থাকে।

প্রকাশনীর সরবরাহকৃত পৃষ্ঠা নাম্বার যুক্ত সিলেবাস এবং প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করায় শিক্ষার্থীরা কমন পড়ার লক্ষ্য নিয়ে লেখাপড়া করে। ফলে সরকার শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সুদূরপ্রসারী শিক্ষা ফল লাভে ব্যর্থ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অভিভাবকরা। উপজেলায় যেসব বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী বেশি; নিষিদ্ধ বই প্রকাশনীর কাছে তাদের ‘ডিমান্ড’ তত বেশি। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাশাপাশি বই বাণিজ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোও পিছিয়ে নেই। শিক্ষার্থীদের কাছে বিভিন্ন সহায়ক বই পৌঁছে দিতে সহায়তা করে শিক্ষকরা। ফলে অভিভাবকরা অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাদের সন্তানদের জন্য নিষিদ্ধ গাইড বই কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। এ নিয়ে অভিভাবকদের মাঝে চরম ক্ষোভ ও হতাশা সৃষ্টি হলেও তারা কোনো কিছুই করতে পারছেন না। অভিভাবকরা অবিলম্বে এসব নিষিদ্ধ নোট-গাইড-সহায়ক বইয়ের রমরমা বাণিজ্য বন্ধের জন্য প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুস সালাম জানান, মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে গাইড বই কিনতে বাধ্য করার বিষয়টি আমি শুনেছি। সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছি। প্রমাণ পেলে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার চাকরির বয়স নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর চিঠির পর সমাবেশের ডাক দিলো ৩৫ প্রত্যাশীরা - dainik shiksha চাকরির বয়স নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর চিঠির পর সমাবেশের ডাক দিলো ৩৫ প্রত্যাশীরা স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি কি এপ্রিলে এগিয়ে আনা দরকার? - dainik shiksha স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি কি এপ্রিলে এগিয়ে আনা দরকার? কলেজের শিক্ষকদের ডিজিটাল বদলির আবেদন শুরু রোববার - dainik shiksha কলেজের শিক্ষকদের ডিজিটাল বদলির আবেদন শুরু রোববার দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029339790344238