গৌরবময় হারানো ঐতিহ্য ফিরে পেতে ইসলামের সোনালি যুগের মতো মুসলিম জাতিকে আবারও শিক্ষা-গবেষণা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার (৩০ মে) গাজীপুরে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) ৩৫তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ইসলামের সোনালি যুগে বিশ্বসভ্যতা, বিজ্ঞান, সাহিত্য, ইতিহাস, দর্শন, রসায়ন, গণিত, চিকিৎসা, জ্যোতির্বিদ্যা ও ভূগোলশাস্ত্রের বিভিন্ন শাখায় মুসলমানদের অবদান এক গৌরবময় ঐতিহ্যের ইতিহাস গড়ে তুলেছে। মুসলমানরা শৌর্য-বীর্য, জ্ঞান-বিজ্ঞান এবং সাহিত্য-সংস্কৃতিতে শ্রেষ্ঠত্ব দেখিয়েছে।
তিনি বলেন, সেই গৌরবময় ঐতিহ্যের অধিকারী মুসলমানরা কেন পিছিয়ে পড়লো, তা আমাদের বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন। নিজেদের মধ্যে কলহ, একে অপরের প্রতি সৌহার্দ্য এবং শ্রদ্ধার অভাব, জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চায় পিছিয়ে পড়াসহ নানা কারণে আজ মুসলমানরা পিছিয়ে পড়েছে। এই সম্মান ফিরে পেতে মুসলমানদের আবার শিক্ষা-গবেষণায় বিনিয়োগ করতে হবে এবং বিজ্ঞান ও আধুনিক প্রযুক্তির উন্নয়ন করতে হবে।
মুসলিম জাতি তার হারানো গৌরব ফিরে পাবে আশা প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, আজকে মুসলিমদের দখলে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে সম্পদ রয়েছে। এই সম্পদকে বিজ্ঞান ও আধুনিক প্রযুক্তির উন্নয়নে কাজে লাগিয়ে আমাদের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে পারি, সেটাই আমি বিশ্বাস করি। আমি যখনই যেখানে যাই আমি এ অনুরোধ করি।
মুসলিমদের জ্ঞান-বিজ্ঞানে পিছিয়ে পড়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আধুনিক যুগে, দুঃখজনকভাবে, মুসলিম বিশ্বে মাত্র ৩টি নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে; যা বিশ্বব্যাপী গবেষণা ও উন্নয়নে তাঁদের অপর্যাপ্ত অবদানকে প্রতিফলিত করে। এখন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে মুসলমানদের আরও প্রচেষ্টার প্রয়োজন, যাতে তাঁরা বেশি করে অবদান রাখতে পারেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ব যখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবোটিক্স, ইন্টারনেট অব থিংস, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং এবং অন্যান্য প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে প্রবেশ করছে, তখন আমাদের পিছিয়ে থাকলে চলবে না। আমাদের সরকার এ বিষয়ে সব সময় উৎসাহ দিচ্ছে।
ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) ৩৫তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির চ্যান্সেলর ও ওআইসির মহাসচিব হিসেইন ব্রাহিম তাহা। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক প্রাপ্তদের হাতে পদক তুলে দেন।