ভারতের একটি স্কুলে এক মুসলিম শিক্ষার্থীকে চড় মারতে অন্য সকল সহপাঠিদের নির্দেশ নিয়েছেন এক শিক্ষিকা। এ ঘটনায় ভারত জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। ওই শিশুটিকে থাপ্পড় মারার ঘটনার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে।
ভারতের উত্তর প্রদেশের মুজাফফরনগরের এক বেসরকারি বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। প্রকাশিত ওই ভিডিওতে দেখা যায়, শ্রেণিকক্ষের মাঝামাঝি চেয়ার-টেবিল পাতা। বসে রয়েছেন শিক্ষিকা। এক পাশে মেঝেতে শিক্ষার্থীরা বসা, অন্য পাশে এক শিশুশিক্ষার্থী দাঁড়িয়ে। এক এক করে শিশুশিক্ষার্থীরা উঠে আসছে, দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীকে মারছে। এরপর নিজের জায়গায় গিয়ে বসে পড়ছে। পুরো ঘটনা ঘটছে শিক্ষিকার সামনে, তার তত্ত্বাবধানে।
ওই শিক্ষিকার নাম তৃপ্তি তেয়াগি। ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়, সব মুসলিম শিক্ষার্থীর চলে যাওয়া উচিত। এ সময় শিক্ষিকাকে আরো জোরে চড় দিতে উৎসাহ দিতেও শোনা যায়।
সহপাঠিদের হাতে থাপ্পড় খাওয়া ওই শিক্ষার্থীর নাম মোহাম্মদ আলতমাশ। শিশুর বাবা মোহাম্মদ ইরশাদ জানান, পড়া মুখস্ত করতে না পারায় তার ছেলেকে একে একে থাপ্পড় দিতে বাকি শিক্ষার্থীদের নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষিকা।
শিশুটির বাবা আরও বলেন, এ ঘটনা দেশে মুসলিমদের প্রতি ঘৃণা ছড়ানোর পরিণতি। শিক্ষিকা এই ঘটনায় ক্ষমা চাইলেও তিনি নিজের সন্তানকে আর এই স্কুলে রাখবেন না বলে জানান ইরশাদ।
পুলিশ জানিয়েছে, শিশু ও তার অভিভাবকের বিবৃতি নেওয়ার পর মামলা নথিভুক্ত করা হবে।
ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর অনেকে সামাজিক মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। তারা দেশে চলমান ইসলাম বিদ্বেষকে এর জন্য দায়ী করেছেন।
এ ঘটনার সমালোচনা করে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এক্সে (সাবেক টুইটার) একটি বার্তা দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, 'নিরীহ শিশুদের মনেও বৈষম্যের বিষ বপন করা হচ্ছে। বিদ্যালয়ের মতো পবিত্র একটি জায়গাকে ঘৃণার বাজারে পরিণত করা হয়েছে।
একজন শিক্ষক দেশের জন্য এর চেয়ে খারাপ আর কিছু করতে পারেন না। ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার এই একই কেরোসিন ছড়িয়ে দেশের প্রতিটি কোনায় আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।'মুজাফফরনগরের প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শুভম শুক্লা বলেন, তিনি ওই বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদকে একটি চিঠি দিয়ে এ ঘটনায় তাদের প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছেন।