কয়েক দফা পেছানোর পর ২২ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) মেডিকেল অফিসার নিয়োগে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর দশ দিন অতিবাহিত হলেও এখনও ফলাফল প্রকাশ হয়নি। এতে চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে বেড়েছে উৎকণ্ঠা।
চাকরিপ্রার্থীরা বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সব পরীক্ষার ফল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার দিনই প্রকাশ করা হয়। অথচ, ইতোমধ্যে দশ দিন অতিবাহিত হলেও ফল প্রকাশ হচ্ছে না। কেন হচ্ছে না, সে বিষয়টিও কেউ বলতে পারছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন চাকরিপ্রার্থী বলেন, এ পরীক্ষাটি নিয়ে জটিলতা কাটছেই না। বিগত উপাচার্যের সময় এই দু’শ চিকিৎসক নিয়োগ হওয়ার কথা ছিল। তারপর নতুন প্রশাসন দায়িত্ব গ্রহণ করলে নিয়োগ পরীক্ষার জন্য আমাদের নিয়মিত আন্দোলন করতে হয়েছে। এ পরীক্ষার দিন ধার্য করার জন্য সংক্ষুব্ধ প্রার্থীরা উপ-উপাচার্যকে (শিক্ষা) অবরুদ্ধ করে রাখে। এত কিছুর পর পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও এখন ফল প্রকাশ করা হচ্ছে না।
এমনকি প্রশাসনও নীরব ভূমিকা পালন করছে। এতে করে আমাদের মনে চাকরির নিরপেক্ষতা নিয়ে নানা সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। নিয়োগ পরীক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পদস্থ এক কর্মকর্তা জানিয়েছে, মাত্র ১৮০ জন মেডিকেল অফিসার এবং ২০ জন ডেন্টাল সার্জন নিয়োগে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু চিকিৎসকদের বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন এবং রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক মহলের বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তিরা দেড় হাজারের বেশি সুপারিশ করেছেন। একই কারণে একবার পরীক্ষার তারিখ পেছানো হয়। এবার পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও ফল প্রকাশে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। সে কারণেই ফল প্রকাশ বিলম্বিত হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, ফল প্রকাশে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। তবে, আশা করি আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ করা হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বরে বিএসএমএমইউতে দু’শ চিকিৎসক নিয়োগে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওই সময় অজ্ঞাত কারণে পরীক্ষা স্থগিত করে কর্তৃপক্ষ। পরীক্ষা স্থগিত করাকে কেন্দ্র করে সেই সময় চাকরিপ্রার্থী চিকিৎসকরা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন এবং ২৭ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টা থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত তিন প্রো-ভিসি, কোষাধ্যক্ষ ও প্রক্টরসহ পদস্থ কর্মকর্তাদের অবরোধ করে রাখেন। এরপর প্রশাসন থেকে জানানো হয়, নভেম্বরে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে পরীক্ষা গ্রহণের ভেন্যু না পাওয়ায় সেই পরীক্ষা বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) অনুষ্ঠিত হয় ২২ মার্চ। দু’শ পদের বিপরীতে পরীক্ষায় অংশ নেয় ৮ হাজার ৫৫১ চিকিৎসক। অর্থাৎ এক পদের বিপরীতে লড়ছেন ৪৩ জন।