ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের এক ছাত্রীকে ব্লাকমেইল করে প্রথমে শারীরিক সম্পর্ক ও পরে জোর করে বিয়ে করে আমিনুল ইসলাম তপু নামে এক প্রতারক। পরে মেয়েটি জানতে পারেন প্রতারক তপু বিবাহিত এবং তার সন্তান রয়েছে। একপর্যায়ে ওই ছাত্রী তপুর বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় মামলা করেন। শুক্রবার ডিবির সাইবার ক্রাইম ইউনিট প্রতারক তপুকে রাজধানী থেকে গ্রেফতার করে। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারণার বিষয়টি স্বীকার করে সে।
সাইবার ক্রাইম ইউনিটের এডিসি নাজমুল ইসলাম জানান, শনিবার (১৪ জুলাই) আসামিকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাওয়া হলে বিজ্ঞ আদালত রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে আরও চাঞ্চ্যলকর তথ্য পাওয়া যেতে পারে বলেও জানান তিনি।
আসামির বরাত দিয়ে নাজমুল ইসলাম আরও জানান, ওই ছাত্রীর মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আমিনুল ইসলাম তপুকে গ্রেফতার করা হয়। সে ওই ছাত্রীকে মিথ্যা তথ্য ও ভুয়া ঠিকানা দিয়ে জোর করে বিয়ে করে। এরপর পাঁচ বছর ধরে মেয়েটিকে ইউজ করে। মেয়েটি যখন জানতে পারে সে ভুয়া পরিচয় দিয়ে তার সঙ্গে প্রতারণা করছে, তখন সে নিজেকে সরিয়ে নিতে চাইছিল। কিন্তু তপু তার সঙ্গে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি-ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেবে বলে তাকে হুমকি দেয়।
তিনি বলেন, প্রতারক তপুকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আমরা জানতে পেরেছি সে একাধিক মেয়েকে এভাবে ব্লাকমেইল করে শারীরিক সম্পর্ক করে এবং এর ভিডিও ও স্থিরচিত্র ধারণ করে রাখে। কখনও তার কথার বাইরে গেলে ছবি-ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিত সে।
মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, ২০১০ সালে এইচএসসি পাসের পর ঢাকায় মেডিকেল ভর্তি কোচিং করতে আসেন ওই ছাত্রী। কোচিং করা অবস্থায় আমিনুল ইসলাম তপু নামে ওই প্রতারকের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। সে ওই ছাত্রীকে নানা রকম মিথ্যা তথ্য দিয়ে বন্ধুত্ব করে এবং তার সঙ্গে বেশ কিছু অন্তরঙ্গ ছবি ধারণ করে। ২০১১-১২ সেশনে ওই ছাত্রী ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। মেডিকেলে পড়া অবস্থায় তপুর সঙ্গে তার যোগাযোগ কমে যায়। এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে আগের সেই অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি দিয়ে ব্লাকমেইল করতে থাকে। ছবি ও ভিডিও অনলাইনে প্রকাশ করারও হুশিয়ারি দেয়। একপর্যায়ে তাকে বিয়ে করতেও বাধ্য করে তপু। ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে ফার্মগেটের একটি কাজী অফিসে তাদের বিয়ে হয়। এরপর বিভিন্ন সময় শারীরিক সম্পর্ক করে তার ছবি ও ভিডিও ধারণ করে রাখে তপু। পরে মেয়েটি জানতে পারেন, তপুর নাম ঠিকানা সব ভুয়া এবং তার স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। তখন তিনি তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার চেষ্টা করেন। এতে তপু ক্ষিপ্ত হয়ে সেই ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করার ক্রমাগত হুমকি দিতে থাকে। একপর্যায়ে মামলা করতে বাধ্য হন তিনি।