মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষায় ইংরেজি ও সাধারণ জ্ঞান কতটা গুরুত্বপূর্ণ

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

এমবিবিএসে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ জানুয়ারি। কেন্দ্রে এক ঘণ্টার মেধার যুদ্ধে সাফল্যের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে মেডিক্যাল ভর্তিচ্ছুকদের স্বপ্ন। কঠিন প্রতিযোগিতায় সময়ের যথাযথ ব্যবহার ও শেষ সময়ে পরীক্ষার প্রস্তুতির নানা কৌশল নিয়ে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন ডা. মৌসুমী। 

এইচএসসির পর আমি নিজে একটি কোচিং সেন্টারে ভর্তি হয়েছিলাম ঠিকই, তবে ভর্তি কোচিং যে একজন মেডিক্যাল ভর্তিচ্ছুকের জন্য অনেক বেশি জরুরি, তা আমি মনে করি না।

কোচিং সেন্টারের ভূমিকা থাকে না, তা বলব না। সেখানে সবচে’ ভালো বিষয়টি হলো, পড়াশোনায় সেখানে একটি রেগুলারিটি মানা হয়। একজন শিক্ষার্থী যখন একটি কোচিং সেন্টারে ভর্তি থাকে, তখন একটি নির্দিষ্ট রুটিন অনুযায়ী তাকে ক্লাস করতে হয় ও নিয়মিত পরীক্ষা দিতে হয়। এতে নির্ধারিত সময়ের ভেতরে তার সিলেবাস শেষ হয় আর পরীক্ষা দেবার অভ্যাসটা গড়ে ওঠে।

এ ছাড়া কোচিংয়ে নানা মেডিক্যাল শিক্ষার্থীদের সান্নিধ্য পাওয়া যায়। তাই, তারা যে গাইডলাইন দেন শিক্ষার্থীদের, সত্যি বলতে তা ভালোই কাজে দেয়। তবে কোনও শিক্ষার্থী যদি বাড়িতেই একটি সুন্দর রুটিন বানিয়ে সে অনুযায়ী সিলেবাসগুলো শেষ করে ফেলে, তাহলে আমি আলাদা কোচিংয়ে যাবার কোনও প্রয়োজন দেখি না।

ডিজিটাল যুগে ইউটিউবেই মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষার জন্য কত লেকচার যে আছে! প্রতি বিষয়ের প্রতি চ্যাপ্টারভিত্তিক ভিডিও রয়েছে সেখানে। সেগুলো দেখলেই একজন শিক্ষার্থী কোচিংয়ের ক্লাসের মতোই চমৎকার একটি দিকনির্দেশনা পেয়ে যায়। তবে কোচিংয়ে ভর্তি না হলে অবশ্যই বাসায় নিজ উদ্যোগে নিয়মিত পরীক্ষা দিতে হবে। পরীক্ষা যদি না দেওয়া যায়, তবে যতই পড়া হোক না কেন, খুব একটা ফলপ্রসূ হবে না সে পড়া। যত পরীক্ষা দেওয়া যাবে, ভুলগুলো তত বেশি চোখে পড়বে।

বাজারে প্রশ্নব্যাংক আছে প্রচুর। নিজের পছন্দমতো ভালো একটি প্রশ্নব্যাংক কিনে সেখানে শিক্ষার্থীরা রোজ পরীক্ষা দেবে। একটি OMR sheet সংগ্রহ করে অনেকগুলো ফটোকপি করে নিলে, রোজ সেই শিটে পরীক্ষা দিতে দিতে মূল পরীক্ষায় ঠিকভাবে বৃত্ত ভরাটের অভ্যাসটি গড়ে উঠবে। আর এই নিয়ম মেনে যদি কেউ দিনের পড়া দিনেই শেষ করে আর রোজ অধ্যায়ভিত্তিক পরীক্ষা দিতে থাকে, তবে তার কোচিং সেন্টারে যাবার কোনও দরকার নেই।

তিনি বলেন, ইংরেজি আর সাধারণ জ্ঞান মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষার এক ট্রাম্পকার্ড বলা যায়। ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি আর বায়োলোজি নিয়েই সবাই এত ব্যস্ত থাকে, যে এ দুটো বিষয় অনেক অনাদর আর অবহেলায় পড়ে থাকে। কিন্তু মজার বিষয় হলো এ দুটো বিষয়ে যদি কেউ ভালো করতে পারে, তবে প্রতিযোগিতায় সে অনেকের চেয়ে বহু দূর এগিয়ে যায়।

ইংরেজির প্রস্তুতি নিতে আগে বিগত বছরের প্রশ্ন অ্যানালাইসিস জরুরি। দেখতে হবে কোন বিষয়গুলো থেকে প্রশ্ন আসে বেশি। শিক্ষার্থীরা সেগুলোরই একটি গোছানো তালিকা করে ফেলবে। এরপর যে বইটি পড়তে ভালো লাগে, সেখান থেকে সে টপিকটি নিয়ম বুঝে পড়বে। ঢালাওভাবে মুখস্থ করে কোনও লাভই নেই। পরীক্ষায় কোনও নতুন প্রশ্ন এলে তখন তা খুব কঠিন মনে হবে। তাই ওরা ইংরেজি গ্রামারের নিয়মগুলো বোঝে যদি, তবে নতুন যত প্রশ্নই আসুক-না-কেন, খুব সহজেই তা উত্তর করতে পারবে।

সাধারণ জ্ঞানের ক্ষেত্রেও ভালো করা খুব সহজ। এবার  বাংলাদেশ ছাড়াও আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়েও প্রশ্ন আসবে পরীক্ষায়। ফলে এবার প্রশ্নের প্যাটার্ন ভিন্ন রকম হতে পারে।

সাধারণ জ্ঞান ও ইংরেজি বিষয়ের পেছনে রোজ ঘণ্টাখানেক সময় দেওয়াটা ভালো। ৩০ মিনিট রাখা হোক ইংরেজিতে, আর ৩০ মিনিট সাধারণ জ্ঞানে। রোজ রোজ যদি এই দুটি বিষয় পড়তে থাকে শিক্ষার্থীরা, কারও সাধ্য নেই ইংরেজি আর সাধারণ জ্ঞানে তাদের পিছিয়ে দেয়।

পরীক্ষার আগে শেষ মুহূর্তের করণীয়:  এই ভর্তি পরীক্ষায় অনেক তথ্য মাথায় রাখতে হয়। তাই রোজ রোজ যদি পুরোনো পড়া রিভিশন না হয়, তবে পুরোনো পড়াগুলো একজন ভুলে যেতে পারে আর এটি খুব স্বাভাবিক ঘটনা। তাই প্রথম তিন মাসে প্রতিদিন কিছু সময় পুরোনো পড়া তো আমি রিভিশন দিতামই, শেষ সময়ে রিভিশনের মাত্রাটা আরও বাড়িয়ে দিয়েছিলাম। নতুন কিছু পড়তে যাওয়ার চেয়ে তখন এত দিন যা পড়েছি, তা ভালোভাবে মাথায় রাখাটাই বেশি জরুরি লেগেছিল। আর শেষ মুহূর্তে আমি পরীক্ষা দেওয়ার মাত্রাও বাড়িয়ে দিয়েছিলাম। আগে যে কথাটা বলেছি, আমিও তেমন অনেকগুলো OMR শিট ফটোকপি করে রেখেছিলাম। রোজ ঘড়ি ধরে একদম ৫০-৫৫ মিনিট সময় নিয়ে পরীক্ষাগুলো দিতাম। আর এই বেশি পরীক্ষা দেওয়ার চর্চাটা আমার দারুণ কাজে দিয়েছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
প্রাথমিক শিক্ষকদের ১০ম গ্রেডসহ দ্রুত শতভাগ পদোন্নতির দাবি - dainik shiksha প্রাথমিক শিক্ষকদের ১০ম গ্রেডসহ দ্রুত শতভাগ পদোন্নতির দাবি বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা - dainik shiksha বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা ভুল পাঠ্যবই ছাপা, মজুরি না পেয়ে শ্রমিকদের বিক্ষোভ ডেমরায় - dainik shiksha ভুল পাঠ্যবই ছাপা, মজুরি না পেয়ে শ্রমিকদের বিক্ষোভ ডেমরায় একই দিনে তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা, বিপাকে শিক্ষার্থীরা - dainik shiksha একই দিনে তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা, বিপাকে শিক্ষার্থীরা ৬০ হাজার জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি আসছে - dainik shiksha ৬০ হাজার জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি আসছে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে জাতির দুর্ভাগ্য কবি একুশে পদক বা স্বাধীনতা পুরস্কার পাননি: সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা - dainik shiksha জাতির দুর্ভাগ্য কবি একুশে পদক বা স্বাধীনতা পুরস্কার পাননি: সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে গুচ্ছ পদ্ধতি চালু ও আবেদন ফি কমানোর দাবি হাসনাতের - dainik shiksha গুচ্ছ পদ্ধতি চালু ও আবেদন ফি কমানোর দাবি হাসনাতের please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028438568115234