বিক্ষোভ শেষে মানববন্ধনে সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি এ জে মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, বিএনপির আইন সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব কায়সার কামাল, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক বদরুদ্দোজা বাদল, মো: রুহুল কুদ্দুস কাজল, আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সভাপতি আবদুল জব্বার ভূইয়া, সাধারণ সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলাম সজল, আইনজীবী মোহাম্মদ আলী প্রমুখ। মানববন্ধনে অংশ নেন আইনজীবী আবেদ রাজা, মনির হোসেন, মো: আক্তারুজ্জামান, রাগীব রউফ চৌধুরী, হুমায়ুন কবির মঞ্জু, মোরশেদ আল মামুন লিটন, মনিরুজ্জামান আসাদ, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক ট্রেজারার মো: কামাল হোসেন, সাবেক সহ-সম্পাদক মো: মাহবুবুর রহমান খান, মাহফুজ বিন ইউসুফ, মো: শহিদুল ইসলাম সপু, সৈয়দ মো: তাজরুল হোসেন, কে আর খান পাঠান, রেজাউল করিম, মাহফুজুর রহমান মিলন, আবদুল্লাহ আল মাহবুব, গাজী তৌহিদুল ইসলাম, মাহমুদ হাসান, মো: জহিরুল ইসলাম সুমন, নাসির উদ্দিন খান সম্রাট, মাসুদ রানা, মো: মাকসুদ উল্লাহ, মু: কাইয়ুম প্রমুখ।
বিএনপি-আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীদের মুখোমুখি বিক্ষোভ : মানববন্ধন শেষে বেলা সোয়া ২টার দিকে বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের প্রবেশের মুখে আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীদের মুখোমুখি হন। এতে কিছু সময় দুই পক্ষের আইনজীবীরা পাল্টাপাল্টি স্লোগান দেন। দুই পক্ষের আইনজীবীদের পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ সমাবেশে আদালত অঙ্গনে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। অন্য দিকে দুই পক্ষের আইনজীবীদের সঙ্ঘাত এড়াতে আদালত এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা বিক্ষোভ করে সুপ্রিম কোর্ট বার ভবনের সামনে সরকার সমর্থক আইনজীবীদের মুখোমুখি হলে পুলিশ বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের আটকে দেন। এ সময় দুই পক্ষের আইনজীবীদের পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভের পর দুই পক্ষের আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্ট বার ভবনে প্রবেশ করেন। বার ভবনে প্রবেশের পর সভাপতি ও সম্পাদকের কক্ষের সামনে অবস্থান নিয়ে সরকার সমর্থক আইনজীবীরা বিক্ষোভ করেন। অন্য দিকে বিএনপি সমর্থকরা নিচতলায় কিছু সময় বিক্ষোভ করে চলে যান।
কর্মসূচি : আগামীকাল ৩১ মে বেলা ১টায় সুপ্রিম কোর্টসহ দেশের সব জেলা বারে বিচার বিভাগ সম্পর্কে কটূক্তি ও সুশীলদের হত্যার হুমকিদাতা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের বিচারের দাবিতে আইনজীবী সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। ফোরামের সভাপতি সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মানববন্ধন : বেলা দেড়টা থেকে সোয়া ২টা পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে প্রধান গেটে মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্য সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, আপনি সুপ্রিম কোর্টকে কলঙ্কিত করেছেন। এটাকে আইনের আওতায় আনতে হবে।
বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, বিনা ভোটে দখলদার মেয়র তাপস বিচার বিভাগের জন্য হুমকি স্বরূপ। তিনি সুশীলদের বস্তায় ভরে বুড়িগঙ্গার কালো পানিতে নিক্ষেপ করার যে বক্তব্য দিয়েছেন তা পরিকল্পিত ও ফৌজদারি অপরাধ। আমরা অবিলম্বে তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানাচ্ছি। তিনি গণতন্ত্র পুনঃউদ্ধারে আইনজীবী সমাজকে এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে মোকাবেলা করার আহ্বান জানান।
ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘একজন চিফ জাস্টিসকেও নামিয়ে দিয়েছিলাম’ এমন বক্তব্য দেয়ার পরও সুপ্রিম কোর্ট কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আপনারা ব্যবস্থা নেন। আমি বলতে চাই আপিল বিভাগ হলো দেশের বিচার বিভাগের অভিভাবক। এখনো কেন তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। আপনারা কি ভয় পান, দয়া করে সাহস করুন।
ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, অবিলম্বে মেয়র তাপসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীদের প্রতিবাদ সমাবেশ : এ দিকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক আব্দুন নূর দুলালের নেতৃত্ব শতাধিক আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টবার ভবনের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ আয়োজিত সমাবেশে আব্দুন নূর দুলাল অন্যতম সংবিধান প্রণেতা প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলামকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমাদের সংক্ষিপ্ত কথা, একেবারে সোজা সাপ্টা বাংলা। যারা আমোদের এই দলে ছিল, যারা দলের উচ্ছিষ্টে পরিণত হয়েছে, বঙ্গবন্ধুর আমল থেকে এই মানুষদের আমরা জেনেছি। তাদের আমরা চিনেছি, যখন ওয়ান-ইলেভেন নেমেছে, তখর আমাদের এক নেতা এই সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি ছিলেন। জননেত্রী শেখ হাসিনাকে যখন গ্রেফতার করা হয় তখন তার কী ভূমিকা ছিল তা জাতি জানতে চায়। আপনি আমাদের লোক নন। বঙ্গবন্ধু যেদিন আপনাকে বহিষ্কার করেছে, সেদিন থেকে এই জাতি আপনাকে চিনেছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আপনাকে চিনেছে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা আপনাকে চিনেছে। জননেত্রী শেখ হাসিনার দিকে কেউ যদি অঙুলি নির্দেশ করে সেই আঙুল আমরা নামিয়ে দেয়ার যোগ্যতা রাখি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তা আছে।