যুক্তরাষ্ট্র কাঁপছে লিওনেল মেসি জ্বরে। বিশ্বকাপজীয় তারকা দেশটির ক্লাব ইন্টার মায়ামিতে যোগ দেয়ার পর থেকে সেখানে নতুন করে জেগে উঠেছে ফুটবলের জোয়ার। মাঠ-কিংবা মাঠের বাইরে সব জায়গাতেই চলছে মেসি ম্যানিয়া। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গিয়েছে যে এলএমটেনের অটোগ্রাফ নিতে গিয়ে চাকরি হারালেও তাকে আমলে নিচ্ছেন না লোকে। হ্যাঁ, এমন ঘটনাই ঘটেছে ইন্টার মায়ামির মাঠ ডিআরভি পিএনকে স্টেডিয়ামে।
অবশ্য মেসির মতো তারকা ফুটবলারকে সামনে পেয়ে আবেগ সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করা বেশ কঠিন যে কারোর জন্যই। আবেগের বশে কলম্বিয়ান নাগরিক ক্রিশ্চিয়ান সালামাঞ্চা নিজের কাজ ভুলে নিয়ে ফেলেছিলেন মেসির অটোগ্রাফ। আর যায় কোথায়। পর মুহূর্তেই চাকরি হারান তিনি।
ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) মায়ামির মাঠ ডিআরভি পিএনকে স্টেডিয়ামে। সেদিন লিগস কাপের রাউন্ড অব থার্টি টুর ম্যাচে অরল্যান্ডো সিটির মুখোমুখি হয় মেসিরা। ঘটনাচক্রে সে সময় স্টেডিয়াম এলাকায় ক্লিনারের কাজে নিয়োজিত ছিলেন কলম্বিয়ান নাগরিক ক্রিশ্চিয়ান সালামাঞ্চা।
চুক্তি অনুসারে সেদিনই চাকরিতে তার প্রথম দিন ছিল। কিন্তু কেই বা জানত এদিনই তার চাকরির শেষ দিন। চাকরি যাওয়া ও মেসির সঙ্গে দেখা হওয়ার বিষয়টি এমনভাবেই বর্ণনা করছিলেন সালামাঞ্চা নিজেই। এ সময় তিনি জানান, মাঝের সময়টাতে যা ঘটেছে তা হয়তো তিনি কখনোই ভুলতে পারবেন না।
জনপ্রিয় ফুটবল বিষয়ক ওয়েবসাইট গোলডটকম তাদের প্রতিবেদন জানায়, সালামাঞ্চা বলেন, যেখানে বাস পার্ক করে, সেখানে আমাকে বাথরুম পরিষ্কার করতে হয়েছিল। সৌভাগ্যবশত, আমি যখন সেখানে গিয়েছিলাম, তখন বাসটা এসেছিল এবং সব খেলোয়াড় বেরিয়ে আসছিলেন। সবার শেষেই বেরিয়ে আসেন মেসি।
তারপর তিনি বলেন, মেসিকে দেখে নিজেকে আর আটকাতে পারিনি। তাকে চিৎকার করে বললাম, ‘এই যে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন!’ আমার ডাক শুনে তিনি ফিরে তাকালেন। আমি ওপরের ইউনিফর্মটি ওপরে তুলে ধরি, যার নিচে আর্জেন্টিনার জার্সি ছিল এবং আমার সঙ্গে একটা মার্কারও ছিল। তিনি আমাকে অটোগ্রাফ দিলেন।
এমন অভিজ্ঞতার পরের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে এই কলম্বিয়ান নাগরিক বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে নিরাপত্তারক্ষীরা সেখানে চলে আসে। তারা আমাকে বাইরে নিয়ে গেলেন এবং চাকরি থেকে বরখাস্ত করলেন। কিন্তু এর প্রতিটি মুহূর্ত মূল্যবান ছিল।
উল্লেখ্য, ডিআরভি পিএনকে স্টেডিয়ামে যারা কাজ করে থাকেন তাদের সবাইকে পেশাদার আচরণ বজায় রাখার নির্দেশ দেয়া হয়। সেটা ক্লাবের কর্মী হোক কিংবা বাইরের কোনো কোম্পানির নিয়োগ করা কর্মী হোক, সবার জন্য একই নিয়ম প্রযোজ্য। তাদের বলা হয়, মাঠে আসা কোনো খেলোয়াড়কে বিরক্ত করা যাবে না। কিন্তু মেসির মতো বিশ্বসেরা তারকা দেখে সেই নিয়ম মানতে পারেননি এই কলম্বিয়ান।
জানা যায় সালামাঞ্চার স্ত্রীও একই স্টেডিয়ামে কাজ করেন। পরবর্তীতে তার স্বামী চাকরি হারানো খবর তাকে দেয়া হয় যেন সালামাঞ্চার জিনিসপত্রগুলো স্টেডিয়ামের বাইরে নিয়ে আসতে পারেন।
লিগস কাপে সেদিন মেসির জোড়া গোলে অরল্যান্ডো সিটিকে ৩-১ গোলে হারিয়েছিল মায়ামি। আগামী সোমবার ভোরে লিগস কাপের শেষ ষোলোর লড়াইয়ে এফসি ডালাসের মুখোমুখি হবে মেসিরা। প্রতিপক্ষের মাঠ টোয়াটা স্টেডিয়ামে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে। এই ম্যাচের টিকিট ছাড়ার ১৮ মিনিটের মধ্যেই তা শেষ হয়ে যায়। তবে মেজর লিগ সকারে মেসিকে দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে ২১ আগস্ট পর্যন্ত। সেদিন শার্লটের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে মেসির লিগযাত্রা।