মেয়েকে বাঁচাতে কিডনি বিক্রি করতে চান স্কুলশিক্ষক পিতা

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি |

তিন বছরের ছোট শিশু অধরার জন্য কাঁদছেন অসহায় এক শিক্ষক পিতা। একমাত্র  মেয়ের চিকিৎসার খরচ চালাতে গিয়ে সহায়-সম্বল যা ছিল প্রায় সবই বিক্রি করেছেন। তারপরও সুস্থ করে তুলতে পারেননি ছোট অধরাকে। ভারতের চিকিৎসকরা বলেছে, অধরাকে বাঁচাতে বাংলাদেশি টাকার প্রায় ৮০ লাখ টাকার মতো লাগবে। চিকিৎসকের এমন কথায় শিক্ষক পিতা জাহিদ হাসানের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়েছে। আর একমাত্র কন্যার এই অবস্থায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন অধরার মা বিথী আক্তার। কোথায় পাবেন এতগুলো টাকা। চোখের সামনে ধুঁকে ধুঁকে ছোট মেয়েটি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়বে সেটাও মানতে পারছেন না পরিবারের সদস্যরা।

তাই মেয়েকে বাঁচাতে তাদের এখন একমাত্র আশা ভরসার শেষ ঠিকানা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহানুভূতি। শুধু তাই নয় মেয়েকে বাঁচাতে অসহায় শিক্ষক পিতা জাহিদ হাসান প্রয়োজনে তার শরীর থেকে কিডনি বিক্রি করবেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের তিনি  মর্মষ্পর্শী এই আবেগের কথা তুলে ধরেছেন।

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার দুর্লভদী গ্রামের স্কুলশিক্ষক মো. জাহিদ হাসানের তিন বছরের মেয়ে অধরা হাসান। ছোট এই শিশুটির হার্টের ছিদ্র তিন বছর ধরে। পাশাপাশি ফুসফুসের অতিরিক্ত চাপ। মরণব্যাধী এই দুটি রোগ নিয়ে অবুঝ অধরা দীর্ঘদিন ধরে জীবন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে। অধরার বয়স যখন ৫ মাস তখন জন্মগত এই রোগ ধরা পড়ে। রোগ শনাক্ত হওয়ার পর থেকে মেয়েকে নিয়ে চিকিৎসকের কাছে বিরামহীনভাবে ছুটে চলছেন তো চলছেনই। জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে দীর্ঘদিন ডা. জাকিয়া এবং ডা. শাহরিয়ারের অধীনে চিকিৎসা চালিয়ে যান। শেষ পর্যন্ত চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী উন্নত চিকিৎসার জন্য অধরাকে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়। ভারতের চিকিৎসায় প্রচুর অর্থ ব্যয়, তারপরও প্রায় দুইবছর ধরে প্রতি ৬ মাস পর পর অধরাকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কিন্তু সুস্থতার লক্ষণ নেই। ভারতের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন ছোট শিশু অধরার ছিদ্র হওয়া হার্ট ওষুধ সেবনে ৫০ ভাগ সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে ফুসফুস ট্রান্সফার করতে হবে। যা করতে বাংলাদেশি টাকার ৮০ লাখ টাকার মতো লাগবে।

অধরার পিতা স্থানীয় বাঘিয়া এসকে শহীদ রফিক উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। মেয়ের চিকিৎসা ও তাকে সুস্থ করে তোলার জন্য টানা তিনবছর অনেক অর্থ খরচ করেছেন। অর্থ কড়ি, জমি জমা সবই বিক্রি করে এই স্কুল শিক্ষক পিতা এখন নিঃস্ব। তারপর ভারতের চিসিৎকের বিশাল অঙ্কের চিকিৎসা খরচের কথা শুনে অসহায় এই মানুষটির মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে।

বাবা জাহিদ হাসান ও তার স্ত্রী বীথি আক্তার অসহায় মানুষের মতো প্রতিটি মুহূর্তে ছোট মেয়েকে বুকে জড়িয়ে শুধু কাঁদছেন। মেয়ের চিন্তায় তারা চোখের পাতা এক করতে পারছেন না। বাবা জাহিদ হাসানের কান্নাজড়িত আকুতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি আমার কলিজার টুকরো ‘অধরাকে’ বাঁচান প্লিজ।

শুধু তাই এই শিক্ষক পিতা তার আদরের মেয়ে অধরাকে বাঁচাতে নিজের শরীরের কিডনি বিক্রি করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে এ কথা তুলে ধরেছেন তিনি। অশ্রুসিক্ত চোখে জানালেন, মেয়েকে যদি বাঁচাতেই না পারি তাহলে নিজের জীবন বৃথা হয়ে যাবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি ১২শ’ শিক্ষার্থীর আতঙ্কে দিন কাটছে - dainik shiksha কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি ১২শ’ শিক্ষার্থীর আতঙ্কে দিন কাটছে বিলেত সফরে শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha বিলেত সফরে শিক্ষামন্ত্রী ডলার সংকটে কঠিন হচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা - dainik shiksha ডলার সংকটে কঠিন হচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা সুপাড়ি চুরির সন্দেহে দুই ছাত্রকে নির্যা*তন - dainik shiksha সুপাড়ি চুরির সন্দেহে দুই ছাত্রকে নির্যা*তন ডক্টরেট ডিগ্রি পেলো বিড়াল - dainik shiksha ডক্টরেট ডিগ্রি পেলো বিড়াল নামী স্কুলগুলোর ফলে পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে - dainik shiksha নামী স্কুলগুলোর ফলে পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0046689510345459