ফান্ড তৈরির নামে ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে অতিরিক্ত মূল্যে মনোনয়ন ফরম বিক্রি করে সমালোচনা মুখে পড়েছে বরিশাল নগরীর ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সদস্য পদে প্রতিটি মনোনয়ন ফরম বাবদ প্রার্থীদের কাছ থেকে ৯ হাজার টাকা করে আদায় করছেন তারা। এনিয়ে শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানাগেছে, দীর্ঘদিন আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে চলার পর নির্বাচনের আয়োজন করেছে ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ৩ অক্টোবর শিক্ষক এবং অভিভাবক সদস্য পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ভোটের মাধ্যমে ৫ জন অভিভাবক সদস্য ও ৩ জন শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচিত করা হবে। ইতোমধ্যে নির্বাচনে অংশগ্রহনে ইচ্ছুক সদস্য প্রার্থীর নিকট মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। ১৪ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া ফরম বিতরণ কার্যক্রম শেষ হবে ১৬ সেপ্টেম্বর। কার্যক্রম শুরুর প্রথম দিনেই চারজন প্রার্থী ফরম সংগ্রহ করেছেন। তবে ফরম বিক্রিতে বর্তমান ম্যানেজিং কমিটিসহ স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তারা স্কুলের ফান্ড এবং উন্নয়নের কথা বলে সদস্য পদে প্রতিটি মনোনয়ন ফরম ৯ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন।
বরিশাল ল’কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক জিএস রফিকুল ইসলাম ঝন্টু বলেন, ৯ হাজার টাকায় মনোনয়ন ফরম বিক্রি চরম অনিয়ম। সাধারণ শিক্ষক এবং অভিভাবকদের উপর বোঝা চাপিয়ে দিয়ে স্কুলের ফান্ড তৈরী করার বিধান কতটা যৌক্তিক সে বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি শফিকুল ইসলাম বাবু জানান, প্রথমত গোপনে ফরম বিক্রির চেষ্টা করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। যে কারনে তারা কোন প্রকাশ নোটিশও দেয়নি। খবর পেয়ে ফরম সংগ্রহ করতে গেলে আমাদের কাছে বিক্রি করতে চাননি প্রধান শিক্ষক। ৯ হাজার টাকা করে সদস্য ফরম আদায় করছে তারা। এটা কোন আইনে আছে তা আমার বোধগম্য নয়।
এব্যাপারে ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সেলিনা চৌধুরী ডলি বলেন, আমাদের স্কুলে ফান্ড নেই। যার কারনে ৫ জন নিয়মিত এবং ৭ জন খন্ডকালীন শিক্ষককে নিয়মিত বেতন দেয়া যাচ্ছে না। তার ওপর শিক্ষার্থীরা নিয়মিত বেতন এমনকি পরীক্ষার ফি পর্যন্ত দিচ্ছে না। এসব কারনেই স্কুল উন্নয়নের জন্য বর্তমান ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনে মনোনয়ন ফরম ৯ হাজার টাকায় বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির আহ্বায়ক কামরুল ইসলাম জুয়েল এর বক্তব্য জানতে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মোহাম্মদ ইউনুস মিয়া বলেন, ঘটনাটি আমিও শুনেছি। এখানে অনিয়ম হচ্ছে। ৯ হাজার টাকায় ফরম বিক্রি করা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। তবে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেখছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোশারেফ হোসেন বলেন, ৯ হাজার টাকা মনোনয়ন ফি আদায় করা হলে সেটা অযৌক্তিক। তবে বিষয়টি আমার জানা নেই। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নাসরিন জুবায়দা আক্তার বলেন, ৯ হাজার টাকা মনোনয়ন ফরম বিক্রির সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। কিন্তু এমন অভিযোগ কেউ করেনি।