ময়লার দুর্গন্ধে ভোগান্তিতে ৪ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা

শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি |

পর্যটন শহর শ্রীমঙ্গলের দীর্ঘদিনের সমস্যা হলো কলেজ সড়কের পাশে অবস্থিত পৌরসভার ময়লার ভাগার। এই ভাগাড়ের উৎকট দুর্গন্ধের কারণে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় এলাকাবাসীর।

ময়লার ভাগাড়টির পাশেই ৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। ময়লার অসহনীয় গন্ধ ভাগাড় ছাড়িয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পৌঁছার কারণে দুর্গন্ধে পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটছে শিক্ষার্থীদের।

শ্রীমঙ্গল পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ময়লার ভাগাড় কলেজ সড়ক থেকে স্থানান্তরের উদ্যোগ নিলেও মামলা জটিলতায় স্থানান্তরিত হচ্ছে না ভাগাড়টি। এর আগে ২০১৮ সালে ময়লার ভাগারটি অপসারণের দাবিতে ক্লাস বর্জন করে আন্দোলনে নেমেছিল স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। সে সময় তৎকালীন জেলা প্রশাসকের আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করলেও শিক্ষার্থীদের এই দাবি ৪ বছরেও পূরণ হয়নি, কেউ কথা রাখেননি। 

গতকাল গিয়ে দেখা যায়, ময়লার ভাগাড়ের দক্ষিণ ও পূর্ব পাশে শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজ ও দি বাডস রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। আর পশ্চিমে রয়েছে গাউছিয়া শফিকিয়া সুন্নিয়া দাখিল মাদ্রাসা ও মসজিদ। এ তিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসায় আসা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দেখা গেছে নাকে মুখে রুমাল বা হাত চেপে চলাচল করতে।

পাশেই বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা। সেখানেও কয়েক হাজার মানুষের বসবাস। ময়লার দুর্গন্ধে রীতিমতো অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে সবাই। শ্রীমঙ্গল পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, ভাগাড়টি স্থানান্তরের জন্য গত ২০১৭ সালে উপজেলার সদর ইউনিয়নের জেটি রোড এলাকায় ১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা দিয়ে নতুন ভাগাড়ের জন্য ২ দশমিক ৪৩ একর জমি ক্রয় করা হয়েছিল। সে সময় জমিতে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের সময় ওই এলাকার ফয়েজ উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি আদালতে মামলা করেন। এই মামলার প্রেক্ষিতে আদালত ২০২৩ সালের ১৩ই মে পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশের কারণে পৌরসভা থেকে উদ্যোগ নেয়া কলেজ সড়ক থেকে ময়লার ভাগাড় অপসারণের কাজটি বন্ধ হয়ে যায়।

এ বিষয়ে শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী মো. রহমান মিয়া বলেন, কলেজ ক্যাম্পাস কিংবা ক্লাস রুম, সব জায়গায় ময়লার গন্ধ বাতাসে ভেসে আসে। ক্লাসের ভিতরও আমাদের নাকে-মুখে রুমাল চেপে বসতে হয়। ময়লার উৎকট গন্ধে কলেজে ক্লাস করা মুশকিল। বিষয়টি সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের বিবেচনা করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ দীপ চাঁন কানু বলেন, দীর্ঘদিন থেকে শিক্ষার্থীরা দুর্গন্ধের কারণে চরম ভোগান্তিতে আছে। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সবার সন্তান লেখাপড়া করে। শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে ভাগাড়াটি দ্রুত অপসারণ প্রয়োজন। 
শ্রীমঙ্গল পৌর সভার মেয়র মো. মহসীন মিয়া বলেন, এটি পৌরসভার একমাত্র ময়লার ভাগাড়। আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর কথা বিবেচনা করে এই জায়গা থেকে ভাগাড় স্থানান্তরের জন্য উপজেলার জেটি রোড এলাকায় জায়গা কিনেছি। সেখানে ময়লা ফেলার সব ব্যবস্থা সম্পূর্ণ করা হয়। কিন্তু ওই এলাকার এক লোক জায়গাটিতে ময়লা না ফেলার জন্য আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। কলেজের সামনে থেকে ভাগাড় সরানোর জন্য আমরা পৌরসভার পক্ষ থেকে যতটুকু চেষ্টা করার তা করেছি। জমি ক্রয় করেছি, সেখানে কাজও শুরু করেছিলাম। এখন মামলা ফেস করেছি।  মামলাটিও উচ্চ আদালতে বার বার স্টে করে রাখা হচ্ছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
চলতি মাসে টানা ৪ দিনের ছুটি মিলবে যেভাবে - dainik shiksha চলতি মাসে টানা ৪ দিনের ছুটি মিলবে যেভাবে সিইসিসহ পাঁচ কমিশনারের পদত্যাগ - dainik shiksha সিইসিসহ পাঁচ কমিশনারের পদত্যাগ রাষ্ট্রপতি যেকোনো সময় পদত্যাগ করতে পারেন - dainik shiksha রাষ্ট্রপতি যেকোনো সময় পদত্যাগ করতে পারেন বাতিল কারিকুলামে শিক্ষার্থীরা আরও একবছর ভুগবেন কেন? - dainik shiksha বাতিল কারিকুলামে শিক্ষার্থীরা আরও একবছর ভুগবেন কেন? ডিআইএতে টাকার খেলা, অভিযুক্তরাই স্কুল অডিটে - dainik shiksha ডিআইএতে টাকার খেলা, অভিযুক্তরাই স্কুল অডিটে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই নতুন অ্যাডহক কমিটি হবে - dainik shiksha সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই নতুন অ্যাডহক কমিটি হবে প্রাথমিকে স্বতন্ত্র ক্যাডার সার্ভিস চালুর দাবি - dainik shiksha প্রাথমিকে স্বতন্ত্র ক্যাডার সার্ভিস চালুর দাবি দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0047578811645508