দৈনিক শিক্ষাডটকম, যশোর : যশোরের পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ার্দ্দার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হুসাইনের অপসারণের দাবিতে কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন জেলার বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধিরা।
বৃহস্পতিবার যশোর পৌরসভা হলরুমে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেন তারা।
সংবাদ সম্মেলন থেকে একই দাবিতে তিনদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। এরমধ্যে শুক্রবার মানববন্ধন, শনিবার বিক্ষোভ মিছিল ও রোববার দড়াটানায় বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসুচি ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এরপরও তাঁদের অপসারণ করা না হলে হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে সংবাদ সম্মেলন থেকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
প্রথমে সংবাদ সম্মেলনটি প্রেসক্লাব যশোরে হওয়ার কথা থাকলেও পুলিশি বাধার মুখে তা পরে পৌরসভার হলরুমে করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে যশোর পৌরসভার ১ নম্বর প্যানেল মেয়র শেখ মোকছিমুল বারী অপু লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমরাই তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করছি। কিন্তু যশোরের পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ার্দ্দার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হুসাইন আমাদের জনপ্রতিনিধিদের নানাভাবে হয়রানির মাধ্যমে সম্মানহানি করছেন। তাঁদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার পরিবর্তে জনপ্রতিনিধিদের জনসম্মুখে সম্মানহানি করছেন।’
যশোর সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুল বলেন, ‘গত কয়েক দিন ধরে যশোর পৌরসভার কাউন্সিলর শেখ জাহিদ হোসেন মিলন, শাহেদ হোসেন নয়ন, সাহিদুর রহমান রিপনসহ বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধির অফিস ভাঙচুর করেছে পুলিশ। আর গতকাল রাতে সুনির্দিষ্ট কোনো মামলা না থাকলেও কাউন্সিলর মিলনকে আটক করে নির্যাতন করা হয়েছে। কোনো কিছু ঘটলেই এসব জনপ্রিয় কাউন্সিলরদের অফিস ও বাসভবনে হামলা করে পুলিশ। তাদের এই অপতৎপরতার মাধ্যমে প্রকৃতপক্ষে যারা অপরাধী, সন্ত্রাসী তাদের আড়াল করা হচ্ছে।’
অভিযুক্ত কর্মকর্তারা যশোরে থাকলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার সুযোগ নেই দাবি করে সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুল বলেন, ‘তারা রক্ষক হয়ে ভক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। এ জন্য আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে যশোরের মানুষের জান ও মালের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ সুপার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের অপসারণ দাবি করছি। তাঁদের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে।’
গত ৬ নভেম্বর পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ার্দ্দারের পদোন্নতি হলেও তিনি অন্যত্র যোগদান না করা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন যশোর সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুল, হৈতবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সিদ্দিক, চুড়ামকাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দাউদ হোসেন দফাদার, লেবুতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলীমুজ্জামান মিলন, উপশহর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এহসানুর রহমান লিটু, হৈবতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ সোহরাব হোসেন, রামনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসান লাইফ, নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ, যশোর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাহিদুর রহমান রিপন, ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর রাজিবুল আলম, ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাহেদ হোসেন নয়ন ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান বাবুল।
এ ছাড়া জনপ্রতিনিধিদের কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মেহেদী হাসান মিন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম আফজাল হোসেন, যশোর জেলা শ্রমিক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জেলা পরিষদ সদস্য জবেদ আলীসহ প্রমুখ।