মনুষ্যবিহীন বোমারু বিমান। বিকট শব্দে রানওয়েতে চক্কর দিয়ে কয়েক সেকেন্ড এর মধ্যে বিমানটি আকাশে উড্ডয়ন করে। রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে শত্রু পক্ষের নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করে নিরাপদে নিজ ঘাঁটিতে ফিরে আসতে সক্ষম। ব্যাটারি চালিত দ্রুতগামী এমন যুদ্ধবিমান তৈরি করে সাধারণ মানুষকে অবাক করে দিয়েছে সাতক্ষীরা জেলার তালার তরুণ বোরহান মোড়ল।
চলতি মাসে তালা সরকারি বি.দে. মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগে এসএসসি পাস করেছে বোরহান মাড়ল। তার বাড়ি তালা উপজেলার আলাদিপুর গ্রামে। বোরহানের পিতা আতিয়ার মোড়ল একজন রাইসমিল ব্যবসায়ী।
বোমারু বিমানের উদ্ভাবক বোরহান মোড়ল জানান, করোনাকালীন সময়ে স্কুল বন্ধ থাকায় নিজে বাড়িতে অলস সময় কাটছিল তার। এসময় মোবাইলের মাধ্যমে ইউটিউবে বিমান তৈরির ভিডিও দেখে ঘরে বসেই ককশিট, মোটর, ব্যাটারি ও বিভিন্ন ডিভাইস দিয়ে নিজের প্রচেষ্টায় তৈরি করে যুদ্ধবিমান। ১০-১৫ বার বিমানটি উড়াতে ব্যর্থ হওয়ার পর অবশেষে তার স্বপ্ন বাস্তবে রূপ পায় বলে জানান তিনি।
পরিবার ও প্রতিবেশীরা জানান, তার বাড়ির কাছেই নিজেদের রাইস মিলের চাতালকে বিমানের রানওয়ে হিসেবে ব্যবহার করে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে দ্রুতগতিতে রানওয়ে অতিক্রম করে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে বিমানটি আকাশে উড্ডয়ন করতে সক্ষম হয়। এক কেজি ওজনের বিমানটি ১০ গ্রাম ওজনের আতশবাজি বহন করে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে বিমানটি উড্ডয়নরত অবস্থায় নির্দিষ্ট লক্ষ্য বস্তুতে আতশবাজির বিস্ফোরণ ঘটিয়ে শত্রুর ঘায়েল করে নির্দিষ্ট গন্তব্যে ফিরতে পরে।
বোরহানের বিশ্বাস, এই প্রযুক্তিতে উন্নতমানের উপকরণের মাধ্যমে মনুষ্যবিহীন বোমারু বিমান তৈরি করা সম্ভব।
জাতপুর বাজারের রাইস মিলের চাতালে বোরহানের আবিষ্কৃত বিমান যখন বিকট শব্দে রানওয়ে অতিক্রম করে আশেপাশে মানুষের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়।
বোরহানের প্রত্যাশা সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে তিনি একদিন মনুষ্যবিহীন বোমারু বিমান তৈরি করতে পারবেন।
সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মো. হুমায়ূন কবির বলেন, এই বিমানটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে কিভাবে বোমারু বিমান করা যায় সেদিকে তিনি বিশেষভাবে দৃষ্টি রাখবেন।