মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী সালাহউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর একটি নামফলক গুঁড়িয়ে দিয়েছে চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ছাত্রলীগ এবং সাধারণ ছাত্রদের ক্ষোভের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড.মোহাম্মদ কাওসার আহমেদ বলেন, নতুন উপাচার্য মহোদয় আসার পর আমি উনাকে বলেছি, হাইকোর্টের অর্ডার আছে যে কোন দণ্ডিত যুদ্ধাপরাধীর নামে স্থাপনা বা নামফলক রাখা যাবে না। ছাত্রদের মধ্যেও ক্ষোভ আছে। সুতরাং সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর নামে যে নামফলক আছে সেটা রাখা উচিৎ হবে না।
‘ক্যাম্পাসে কিছু কনস্ট্রাকশন কাজ চলছে। তাদের মাধ্যমে গত সপ্তাহে আমরা নামফলকটি ভেঙে ফেলেছি। উপাচার্য মহোদয়ই এই নির্দেশনা আমাদের দিয়েছেন। ’
সূত্রমতে, ২০০৩ সালের ৩ জুলাই সীতাকুণ্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে উপাচার্যের কার্যালয়ের অদূরে ছাত্র আবাসিক ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী। এই যুদ্ধাপরাধী তখন মন্ত্রীর মর্যাদায় প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন।
ওআইসি’র ইসলামীক সলিডারিটি ফান্ডের অর্থায়নে ছাত্র ভবন নির্মিত হয়েছিল। ওআইসির মহাসচিব প্রার্থী হিসেবে সালাহউদ্দিন কাদেরকে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল বলে জানান প্রক্টর কাওসার।
জামায়াত ঘরানার প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পর থেকে ক্যাম্পাসে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন শুরু হয়েছে। ছাত্রলীগ নেতারা কয়েক দফা প্রক্টরের সঙ্গে সাক্ষাত করে সালাহউদ্দিন কাদেরের নামফলকটি সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানান। তখন প্রক্টর তাদের দাবির বিষয়টি উপাচার্যকে অবহিত করার আশ্বাস দিয়েছিলেন।
প্রক্টর কাওসার আহমেদ বলেন, ছাত্রলীগের মৌখিকভাবে দাবি জানিয়েছিল। এরপর আজ (সোমবার) তারা আনুষ্ঠানিকভাবে স্মারকলিপি দিয়েছে। কিন্তু তারা স্মারকলিপি দেওয়ার আগেই আমরা নামফলকটি ভেঙে ফেলেছি।
২০১৫ সালের ১৮ নভেম্বর বিতর্কিত রাজনীতিক, যুদ্ধাপরাধী সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়।
আমৃত্যু বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বাড়ি রাউজানের গহিরা গ্রামে। রাউজান ও রাঙ্গুনিয়া থেকে একাধিকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। সর্বশেষ ২০০৮ সালে ফটিকছড়ি থেকেও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন