দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক : রেলপথে নাশকতা সৃষ্টি করে জনমনে ভীতি ও প্রাণনাশের পরিকল্পনা থেকেই ১৩ ডিসেম্বর গাজীপুরের বনখড়িয়া এলাকায় রেললাইন কেটে নাশকতা করা হয়। যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর নির্দেশনায় রেললাইন কাটেন ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি ও বর্তমান যুবদল নেতা মো. ইখতিয়ার রহমান কবির (৪৩)।
গতকাল রোববার রাতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর শনির আখরা কাঁচাবাজার এলাকা থেকে রেললাইন কাটার সরঞ্জামাদিসহ কবির ও লালবাগ থানার ২৪ নম্বর ওয়ার্ড মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি মো. ইমন হোসেনকে (১৯) গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট।
আজ সোমবার ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান সিটিটিসির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান।
আসাদুজ্জামান জানান, রেলপথে নাশকতা সৃষ্টি করে জনমনে ভীতি ও প্রাণনাশের পরিকল্পনা করা হয়। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে যুবদলের শীর্ষ নেতা সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর নির্দেশে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহসভাপতি ইখতিয়ার রহমান কবিরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কবির গাজীপুরের আজিমুদ্দিন সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক তোহা ও গাজীপুর মহানগর ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুমের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তাদেরকে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার জন্য তোহা ও মাসুম মিলে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ২৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসান আজমল ভূঁইয়ার বাসায় একটি মিটিং করে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কৌশল ঠিক করে।
আসাদুজ্জামান আরও জানান, প্রথমে রেললাইনের নাট-বল্টু খুলে ট্রেন চলাচলে বাধা সৃষ্টির পরিকল্পনা থাকলেও তাতে ব্যর্থ হয়ে কাটার পরিকল্পনা করে। লালবাগ থানার ২৪ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সভাপতি ইমন হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁকে বড় লোহার পাত কাটার প্রশিক্ষণ নিতে বলেন। এরপর স্থানীয়ভাবে গ্যাস সিলিন্ডার কেনা হয়। কবির, ইমন, তোহা ও মাসুম মিলে রাজধানীর পুরান ঢাকার নবাবপুর মার্কেটের একটি দোকান থেকে সকল যন্ত্রপাতি ১০ ডিসেম্বর কিনে ইমনের বাসায় রাখা হয়।
১২ ডিসেম্বর ইমনের বাসা থেকে যন্ত্রপাতি গাজীপুর নিয়ে যাওয়া হয়। একই দিন ইমন ও কবির কমলাপুর থেকে ট্রেনে করে জয়দেবপুর রেলস্টেশনে যায়। তোহা ও মাসুম চলাচলের জন্য মাইক্রোবাস ভাড়া করা, গ্যাস সিলিন্ডার কেনাসহ সকল প্রস্তুতি নিয়ে রাখে। ট্রেনের শিডিউল জেনে ১৩ তারিখ রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে রওনা দেয়। এই সময়ে বেশ কয়েকজনকে পথ থেকে তুলে নেওয়া হয়। পরে ঘটনাস্থলে মোট ৯ জনে একত্রিত হয়ে রেললাইন কাটার কাজ শুরু করে। আগে থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়া ইমন অন্যদের সহযোগিতায় রেললাইন কাটে।