যু*দ্ধাপরাধী হিসেবে নেতানিয়াহুকে গ্রেফতার করা উচিত: হামাস

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। টানা ৯ মাসেরও বেশি সময় ধরে চালানো এই হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৩৯ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। বর্বর এই আগ্রাসনের জেরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে বাড়ছে ক্ষোভ।

এমনকি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে উঠেছে গণহত্যার অভিযোগও। এমন অবস্থায় যুদ্ধাপরাধী হিসেবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে গ্রেফতার করা উচিত বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস।

একইসঙ্গে নেতানিয়াহুকে মার্কিন কংগ্রেসে ভাষণের সুযোগ দেয়ারও সমালোচনা করেছে গোষ্ঠীটি। বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

বার্তাসংস্থাটি বলেছে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে আমেরিকান কংগ্রেসে ভাষণ দেয়ার সুযোগের নিন্দা করে হামাস বৃহস্পতিবার বলেছে, তাকে যুদ্ধাপরাধী হিসাবে গ্রেফতার করা উচিত ছিল।

মূলত নেতানিয়াহু গত বুধবার মার্কিন কংগ্রেসে একটি বক্তৃতা দিয়েছেন। তার সেই ভাষণের সময় হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস এবং সিনেটের প্রায় অর্ধেক ডেমোক্র্যাটিক আইনপ্রণেতা গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের আগ্রাসন এবং অপরাধের প্রতিবাদে ওয়াক আউট করেছিলেন।

পরে হামাস এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘বিশ্বের সামনে নিজের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার সুযোগ দেয়ার পরিবর্তে এবং গাজায় গণহত্যা ও জাতিগত নিধনযজ্ঞ ঢেকে দেয়ার জন্য প্ল্যাটফর্ম দেয়ার পরিবর্তে নেতানিয়াহুকে একজন যুদ্ধাপরাধী হিসাবে গ্রেফতার করা উচিত ছিল এবং তাকে আইসিসি (আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত) এর কাছে হস্তান্তর করা উচিত ছিল।’

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী এই সশস্ত্র গোষ্ঠীটি আরও বলেছে, ‘নেতানিয়াহুর বক্তৃতা তার সামরিক, নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক সংকটের গভীরতাই প্রতিফলিত করেছে।’

হামাস নেতানিয়াহুকে রাফাহ এবং নুসেইরাতের বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে সংঘটিত ‘ভয়াবহ গণহত্যা’ উপেক্ষা করার পাশাপাশি অনেক বন্দিকে মুক্ত করার মতো মিথ্যা বিজয়ের দাবি করার বিষয়েও অভিযুক্ত করেছে।

প্রসঙ্গত, নেতানিয়াহু গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছেন। বৃহস্পতিবার তিনি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের সাথে দেখা করেন। এছাড়া ইসরায়েলে ফেরার আগে শুক্রবার ফ্লোরিডায় সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে দেখা করার কথাও রয়েছে তার।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, গাজায় চলমান আগ্রাসনে প্রায় ৩৯ হাজার ২০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। এছাড়া আরও ৯০ হাজারেরও বেশি মানুষ এই বর্বর আগ্রাসনে আহত হয়েছেন।

ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।

মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষক লাঞ্ছিত ও পদত্যাগে বাধ্য করার প্রতিবাদ, কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি বিটিএর - dainik shiksha শিক্ষক লাঞ্ছিত ও পদত্যাগে বাধ্য করার প্রতিবাদ, কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি বিটিএর মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবি - dainik shiksha মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবি আন্দোলনে অসুস্থ ১১ নার্সিং শিক্ষার্থী - dainik shiksha আন্দোলনে অসুস্থ ১১ নার্সিং শিক্ষার্থী প্রধান শিক্ষককে জোর করে পদত্যাগপত্রে সই - dainik shiksha প্রধান শিক্ষককে জোর করে পদত্যাগপত্রে সই জলবায়ু পরিবর্তন মারাত্মক প্রভাব ফেলছে শিক্ষা খাতে - dainik shiksha জলবায়ু পরিবর্তন মারাত্মক প্রভাব ফেলছে শিক্ষা খাতে বয়স ৩৫ করার দাবিতে শাহবাগে চাকরি প্রত্যাশীদের মহাসমাবেশ - dainik shiksha বয়স ৩৫ করার দাবিতে শাহবাগে চাকরি প্রত্যাশীদের মহাসমাবেশ এমপিওভুক্তি: দীপু মনির ভাই টিপুচক্রের শতকোটি টাকার বাণিজ্য - dainik shiksha এমপিওভুক্তি: দীপু মনির ভাই টিপুচক্রের শতকোটি টাকার বাণিজ্য অধ্যক্ষকে পদত্যাগে বাধ্য, আওয়ামী লীগ নেতাকে স্থলাভিষিক্ত করার চেষ্টা - dainik shiksha অধ্যক্ষকে পদত্যাগে বাধ্য, আওয়ামী লীগ নেতাকে স্থলাভিষিক্ত করার চেষ্টা ভুয়া নিয়োগে এমপিও: এক মাদরাসার ১৫ শিক্ষকের সনদ যাচাই করবে অধিদপ্তর - dainik shiksha ভুয়া নিয়োগে এমপিও: এক মাদরাসার ১৫ শিক্ষকের সনদ যাচাই করবে অধিদপ্তর বার্ষিক পরীক্ষার উদ্দীপকসহ ও উদ্দীপক ছাড়া প্রশ্ন - dainik shiksha বার্ষিক পরীক্ষার উদ্দীপকসহ ও উদ্দীপক ছাড়া প্রশ্ন একসঙ্গে তিন প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন তুলতেন মাদরাসা কর্মচারী - dainik shiksha একসঙ্গে তিন প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন তুলতেন মাদরাসা কর্মচারী কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030179023742676