পরীক্ষা একাডেমিক জীবনের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ। তবে ভালো ফল অর্জন করা নিয়ে বাড়তি চাপ, অস্থিরতা, বিরক্তি, ক্লান্তি, দুশ্চিন্তার কারণে মনোযোগ দিতে অসুবিধাসহ অনেকেই নানাবিধ সমস্যায় পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে সঠিক কৌশলের সাহায্যে পরীক্ষার চাপ ও উদ্বেগ কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। আজ আমরা চ্যালেঞ্জিং পরীক্ষার সময় আত্মবিশ্বাস ধরে রেখে পরিস্থিতি সামলে নেওয়ার কিছু কৌশল জানব।
একটি সুন্দর পরিকল্পনা করো
মূলত পরীক্ষাকেন্দ্রিক ভয় ও টেনশনের উদ্ভব হয়, যখন আমাদের প্রত্যাশার সঙ্গে পরিকল্পনা ঠিকঠাক না যায়। তাই পরীক্ষার সেরা একটি প্রস্তুতির জন্য কার্যকর পরিকল্পনা তৈরি করা আবশ্যক। এই পরিকল্পনায় একটি টাইমলাইন ধরে সিলেবাসটি বিভক্ত করে নাও। গুরুত্বের ওপর ভিত্তি করে বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দাও এবং রিভিশনের জন্য পর্যাপ্ত সময় বরাদ্দ রাখো। এই পদ্ধতি কেবল প্রোডাকটিভিটি বাড়াবে না; বরং শেষ মুহূর্তের দুশ্চিন্তাও কমাবে।
সমস্যায় পড়লে শেয়ার করো
পরীক্ষার চাপ কিংবা পরীক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তা—এটি সাধারণ একটি অভিজ্ঞতা। সমস্যার সমাধান না হওয়া থেকেও কিন্তু পরীক্ষার প্রেশার বাড়তে পারে। আর তাই সহপাঠী, পরিবারের সদস্য কিংবা শিক্ষককে সমস্যাগুলোর কথা জানানো যেতে পারে। হতে পারে এর মাধ্যমেই তোমার মানসিক চাপ কমে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হবে। সমস্যাগুলো নিয়ে অযথা টেনশন না করে, সেগুলো শেখার এবং উন্নতির সুযোগ হিসেবে এসেছে এমন ইতিবাচক চিন্তা করো।
নিজের ওপর আস্থা রাখো
নেতিবাচক চিন্তা অথবা দুশ্চিন্তা তৈরি করে এমন কারও সঙ্গে পরীক্ষার আগে সাক্ষাৎ করা উচিত নয়। কারণ, আতঙ্ক সংক্রামক। পরীক্ষার আগে আতঙ্কিত হলে চাপের মাত্রা তীব্র হয়। অতীতের অর্জনগুলোয় ফোকাস করো—এটি ইতিবাচক চিন্তার প্রসার ঘটাবে এবং তুমি যে ভালোভাবে প্রস্তুত, এরও জানান দেবে। নিজের ওপর বিশ্বাস রাখো। কেননা, তুমিই তোমার সামর্থ্যের ব্যাপারে সবচেয়ে ভালো জানো।
পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে
পরীক্ষার আগের রাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানো গুরুত্বপূর্ণ। এটা স্মৃতিশক্তি ধারণ এবং প্রোডাকটিভিটি উন্নত করতে সাহায্য করে। এতে অনেকাংশেই উদ্বেগ কমে যাবে।
পরীক্ষার দিনের প্রস্তুতি
পরীক্ষার দিন শান্ত থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আগেই তৈরি করে রাখা তালিকা থেকে পরীক্ষার হলে কী কী নিয়ে যেতে হবে, সেটা নিশ্চিত করো। সকালে খাবার খেয়ে সম্ভব হলে একবার রিভিশন দিয়ে নাও। পরীক্ষার আগেই কেন্দ্রে পৌঁছাও। পরীক্ষা শুরু করার আগে মনকে শিথিল করতে গভীর শ্বাস নাও। প্রশ্নে উল্লিখিত নির্দেশাবলি সতর্কতার সঙ্গে পড়ে নাও এবং সেই অনুসারে সময় বরাদ্দ করো। কোনো চ্যালেঞ্জিং প্রশ্নের সম্মুখীন হলে আতঙ্কিত না হয়ে সামনের প্রশ্নগুলোর দিকে যাও এবং পরে সময় বের করে সেগুলোতে মনোযোগ দাও। সময়ের দিকে খেয়াল রেখো এবং লেখা শেষ হলে একবার রিভিশন দিয়ো।
অনেক শিক্ষার্থী এমন আছে যে পড়ার কারণে খাবার ও ঘুমে অত্যন্ত ব্যাঘাত ঘটায়। মনে রাখতে হবে, একাডেমিক যাত্রায় পরীক্ষা একটি মাত্র ধাপ। এর সঙ্গে মানসিক ও শারীরিক সুস্থতাকে অবশ্যই অগ্রাধিকার দিতে হবে। এই কৌশলগুলোর যথাযথ প্রয়োগ করে সঠিক মানসিকতা, প্রস্তুতি ও সাপোর্টের মাধ্যমে পরীক্ষার চাপ ও উদ্বেগ কাটিয়ে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জন করতে পারবে।
গ্রন্থনা: আলভি আহমেদ