যে বিনিয়োগে ব্যাংকের চেয়েও বেশি সুদ পাওয়া যাচ্ছে

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে এমনিতেই মানুষের হাতে উদ্বৃত্ত টাকা কমে গেছে। এ জন্য কমেছে সঞ্চয়ও। আবার যাঁদের সঞ্চয় করার সুযোগ আছে, তাঁরাও ভালো মুনাফা পাচ্ছেন না। দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংকে টাকা রেখে যে মুনাফা পাওয়া যায়, মূল্যস্ফীতি তার চেয়ে বেশি। ফলে ব্যাংকে টাকা রেখে যে মুনাফা মিলছে, তা খেয়ে ফেলছে মূল্যস্ফীতি। এ কারণে ব্যাংকে টাকা রাখা কমে যাচ্ছে। 

সম্প্রতি সুদহার গণনায় পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাতে বাড়তে শুরু করেছে ব্যাংকে আমানতের সুদ, যা এখন ৮ শতাংশ পর্যন্ত উঠেছে। তবে এখনো ব্যাংকের সুদের চেয়ে সরকারি বিনিয়োগ পণ্য ট্রেজারি বন্ডে সুদহার বেশি। বন্ডের সুদহার উঠেছে ৯ দশমিক ১০ শতাংশে। 

ফলে আপনি চাইলেই বেশি মুনাফার জন্য সরকারি বন্ডে বিনিয়োগ করতে পারেন। বন্ড, বিলের মতো সরকারি নানা ধরনের বিনিয়োগ পণ্য রয়েছে। এসব পণ্যের মাধ্যমে টাকা ধার করে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে সরকার। 

এখন পর্যন্ত ব্যাংকের পাশাপাশি বিমা প্রতিষ্ঠান ও করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারি বন্ডের মূল ক্রেতা।

ব্যক্তি হোক বা প্রতিষ্ঠান, সবাই চাই বেশি মুনাফা বা সুদ। পাশাপাশি টাকার নিরাপত্তা। টাকাও নিরাপদ থাকবে, আবার ভালো মুনাফাও মিলবে—এমন আর্থিক পণ্য দেশে খুব বেশি নেই। 

সাধারণ মানুষের কাছে সঞ্চয়ের জন্য প্রথম পছন্দ সঞ্চয়পত্র। এরপর রয়েছে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন সঞ্চয় স্কিম। সঞ্চয়পত্রে একজন গ্রাহক একক নামে ৫০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ করতে পারেন না। 

ব্যাংক ও সঞ্চয়পত্রের বাইরে সরকারের আরও একটি আর্থিক পণ্য রয়েছে, যেখানে আপনি বিনিয়োগ করতে পারেন। সেটি হলো সরকারি ট্রেজারি বন্ড। 

এই বন্ডে বিনিয়োগ থেকে যে মুনাফা আসবে, তার ওপর কোনো কর দিতে হয় না। ফলে মুনাফার পুরোটাই পাওয়া যায়। আবার সরকারি পণ্য হওয়ায় আর্থিক নিরাপত্তাও রয়েছে। তাই ট্রেজারি বন্ড হতে পারে নিরাপদ বিনিয়োগের জায়গা। 

এখন দেশের প্রতিটি ব্যাংক থেকে ‘সিকিউরিটি হিসাব’ খোলার মাধ্যমে এ বন্ড কেনা যায়। তবে এ বন্ডে বিনিয়োগ করতে হবে কমপক্ষে এক লাখ টাকা বা তার গুণিতক। আর চাইলে যখন-তখন বিক্রিও করে দেওয়া যায়। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২ বছর মেয়াদি বন্ডে মিলছে বছরে ৮ দশমিক ৯০ শতাংশ সুদ, ৪ বছর ৯ মাস মেয়াদি বন্ডে মিলছে ৯ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ সুদ, আর ৭ বছর মেয়াদি বন্ডে মিলছে ৯ দশমিক ১০ শতাংশ সুদ। 

তবে ১৩ বছর ৯ মাস ও ১৯ বছর ১০ মাস মেয়াদি বন্ডের সুদ হার এখনো ৯ শতাংশের কম, কারণ নতুন করে এই বন্ডের নিলাম হয়নি। নিলাম হলেই এ বন্ডের সুদও ৯ শতাংশের ওপরে চলে যাবে। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সব মিলিয়ে বর্তমানে ৩ লাখ ৬২ হাজার ৮৩২ কোটি টাকা বিনিয়োগ আছে ট্রেজারি বন্ডে। এ ধরনের বন্ড সবচেয়ে বেশি কিনেছে প্রাইমারি ডিলার ব্যাংকগুলো, প্রায় ৪৩ শতাংশ। অন্য ব্যাংকগুলো কিনেছে ৩০ শতাংশ বন্ড। ১৪ শতাংশ কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ৫ শতাংশ বন্ড কিনেছে জীবনবিমা কোম্পানিগুলো। 

প্রভিডেন্ট ফান্ড, ট্রাস্টগুলো কিনেছে প্রায় ৩ শতাংশ। আমানত বিমা ট্রাস্ট তহবিল কিনেছে প্রায় ৩ শতাংশ বন্ড। ১ শতাংশ বন্ড কিনেছে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো। ব্যক্তি পর্যায়ের বিনিয়োগকারীরা কিনেছেন প্রায় ১ শতাংশ বন্ড। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ব্যক্তি বিনিয়োগকারীরাও এখন ট্রেজারি বন্ড কিনছেন। সাধারণ মানুষ যাতে সহজে ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ করতে পারেন, এ জন্য নিয়মকানুনও সহজ করা হয়েছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কমপ্লেইন বক্স বন্ধ - dainik shiksha গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কমপ্লেইন বক্স বন্ধ পদত্যাগে বাধ্য করা অধ্যক্ষকে ফুলেল শুভেচ্ছায় ফেরালেন শিক্ষার্থীরা - dainik shiksha পদত্যাগে বাধ্য করা অধ্যক্ষকে ফুলেল শুভেচ্ছায় ফেরালেন শিক্ষার্থীরা শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কম দামে বিটিসিএলের ইন্টারনেট দেয়া হবে: তথ্য উপদেষ্টা - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কম দামে বিটিসিএলের ইন্টারনেট দেয়া হবে: তথ্য উপদেষ্টা শিক্ষকের ছোড়া স্কেলের আঘাতে শিক্ষার্থীর চোখ হারানোর অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষকের ছোড়া স্কেলের আঘাতে শিক্ষার্থীর চোখ হারানোর অভিযোগ দুই শিক্ষকের বহিষ্কারের দাবিতে বাউবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ - dainik shiksha দুই শিক্ষকের বহিষ্কারের দাবিতে বাউবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ হলগুলোকে সন্ত্রাসমুক্ত করে ছাড়বো : রাবি উপাচার্য - dainik shiksha হলগুলোকে সন্ত্রাসমুক্ত করে ছাড়বো : রাবি উপাচার্য কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0048151016235352