অবৈধ এবং ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দ থেকে লাইসেন্স পাওয়া বৈধ সব অস্ত্র থানায় জমা দিতে হবে আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যার মধ্যে। এরপর আগামীকাল বুধবার থেকে যৌথ অভিযানে মাঠে নামবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারের পাশাপাশি, প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনাকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন অপরাধ বিশ্লেষকেরা। মানুষের আস্থা ফেরাতে এ অভিযানের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতের তাগিদ তাঁদের।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে থানাগুলোতে চলে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ। লুট করা হয় পুলিশের অস্ত্র-গোলাবারুদ। পরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে কিছু উদ্ধার হলেও পাওয়া যায়নি বেশিরভাগই।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, গত ৬ আগস্ট থেকে সোমবার পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে ৪ হাজার অস্ত্র ও ৩ লাখ গোলাবারুদ। এছাড়া ২৩ হাজার রাউন্ড টিয়ার শেল এবং ২ হাজার ১৩৯টি সাউন্ড গ্রেনেডও উদ্ধার হয়।
লুট হওয়া অস্ত্রসহ সব অবৈধ অস্ত্রের খোঁজে এবার মাঠে প্রশাসন। ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দ থেকে লাইসেন্স পাওয়া সব বৈধ অস্ত্রও জমা দিতে হবে থানায়। পুলিশের বিশেষ শাখার তথ্য, চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত সারা দেশে বৈধ অস্ত্রের সংখ্যা ৫০ হাজারের বেশি।
তবে নিরাপরাধ কেউ যেনো হয়রানির মুখে না পড়ে, সেদিকে লক্ষ্য রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন সাবেক পুলিশ কর্মকর্তারা। আর অভিযানের স্বচ্ছতা নিশ্চিতের তাগিদ অপরাধ বিশ্লেষকের।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক আব্দুল্লাহ আল-আজাদ চৌধুরি বলেন, ‘ডিপার্টমেন্টের হারানো ভাবমূর্তি উদ্ধারে এবার সবাই তৎপর। সবাই আন্তরিক। এবারের যৌথ অভিযান আশা করছি যথাযথ হবে।’
সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক বলেন, ‘অপরাধপ্রবণ যেসব ব্যক্তি সমাজের বিশৃঙ্খল করতে চায় তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।’
যৌথ বাহিনীর অভিযান যাতে প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, সেদিকে সর্বোচ্চ সতর্কতা রাখতে হবে- বলছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘ক্ষমতার অপব্যবহার বা বিনাকারণে মানুষকে হয়রানি করা হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি যতটুকু আস্থা এখন আছে তা তলানিতে চলে যাবে।’