যৌ*ন নিপীড়নে অভিযুক্ত জাবি শিক্ষকের শাস্তির দাবি

জাবি প্রতিনিধি |

যৌন নিপীড়নে অভিযুক্ত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান জনির বিরুদ্ধে গঠিত স্ট্রাকচার্ড কমিটির কার্যক্রম বেগবান ও অভিযুক্তের শাস্তি নিশ্চিত করাসহ চার দফা দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। দাবিগুলো হলো- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে সাংবাদিক আসিফ আল মামুনকে মারধরের ঘটনায় জড়িতদের বিচার করা, দ্রুত মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করে গাছ কাটা বন্ধ করা এবং জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি সৌমিক বাগচীর ওপর হামলার অভিযোগে চিহ্নিতদের বিচার নিশ্চিত করা।

বৃস্পতিবার দুপুর দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) কনফারেন্স কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। এছাড়া, আগামী সিন্ডিকেট সভায় এসব দাবি উত্থাপিত না হলে ওদিন অবস্থান কর্মসূচি পালন করাসহ লাগাতার আন্দোলনের হুঁশিয়ারি জানান তারা। 

ছবি: সংগৃহীত

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আবু রায়হান কবির রাসেল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসনের অধীনে সাংবাদিক লাঞ্চনার ঘটনা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এছাড়া নিপীড়নকারী, ভ্রূণহত্যাকারী ও নৈতিক স্খলনের দায়ে অভিযুক্ত ক্ষমতাধর শিক্ষক মাহমুদুর রহমান জনিকে প্রশাসন আগলে রেখেছে। তার বিরুদ্ধে স্ট্রাকচার্ড কমিটি গঠিত হলেও তিনি নিয়মবহির্ভূত ভাবে নিয়মিত শিক্ষকতা করছেন। তিনি মদ্যপ অবস্থায় উপাচার্যকে নিয়ে বিশ্রী মন্তব্য করলেও প্রশাসন তাকে কড়া জবাব দেওয়ার সাহস দেখাচ্ছেন না, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকলকে হতাশ করেছে।

তিনি আরো বলেন, বারবার গণরুম উচ্ছেদের আশ্বাস দিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে বিশ্বাসঘাতকতার প্রতীক হয়ে উঠেছে প্রশাসন। অবৈধ শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করার প্রক্রিয়ায় এক সিঁড়ি উঠতে না উঠতেই, পুরো প্রশাসনের কোমড় ভেঙ্গে গেছে। আবার আইআইটি ও আইবিএ’র ভবন নির্মানের নামে প্রাণপ্রকৃতির ক্ষতি করেছে প্রশাসন। পরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে, পুজার ছুটিতে আইআইটি ভবনের পিছনে এবং রাতের আঁধারে আইবিএ ভবনের জন্য কাটা গাছ নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করার কথা বললেও শুধুমাত্র আইবিএ ভবন নিয়ে কমিটি করেছে। আইআইটি ভবনকে বিশেষ যত্ন করেই এড়িয়ে যাচ্ছে প্রশাসন। এর পিছনে প্রশাসনিক ষড়যন্ত্র এতোটাই স্পষ্ট, যা পুনরায় উল্লেখের প্রয়োজন পড়ে না।

 

এসময় নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী কনৌজ কান্তি রায় বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের কাজকর্মে সুবিধাবাদী আচরণের বহিঃপ্রকাশ ঘটাচ্ছেন। যৌন নিপীড়নে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে বারবার তদন্ত কমিটি গঠন করেও বিচার করছেন না। সাংবাদিকের ওপর হামলার বিচার করছেন না। সংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মীকে মারধরের বিচারের আশ্বাস দিয়েও বিচার করছেন না। আমরা বলতে চাই, প্রশাসনের স্বেচ্ছাচারিতা সহ্য করব না।’

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের একাংশের আহ্বায়ক আলিফ মাহমুদ বলেন, ফাঁস হওয়া একটি অডিও রেকর্ডে মাহমুদুর রহমান জনি বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলে, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজনের মুখোশ খুলে দিবেন।’ ফলে তিনি যাদের মুখোশ খোলার হুমকি দিয়েছেন, তারাই তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে। জনির জায়গায় অন্য কোন শিক্ষক থাকলে অনেক আগেই শাস্তি দেওয়া হতো। যা আমরা এর পূর্বেও দেখেছি। অতিসত্বর অভিযুক্ত জনির শাস্তিসহ অন্য দাবিগুলো বাস্তবায়িত না হলে আমরা আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন সভাপতির একক স্বাক্ষরে - dainik shiksha অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন সভাপতির একক স্বাক্ষরে দুই শব্দে অধ্যক্ষের পদত্যাগ! - dainik shiksha দুই শব্দে অধ্যক্ষের পদত্যাগ! বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে পাকিস্তান - dainik shiksha বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে পাকিস্তান বিএনপি নির্বাচিত হলে গুম প্রতিরোধে আইন করব: তারেক - dainik shiksha বিএনপি নির্বাচিত হলে গুম প্রতিরোধে আইন করব: তারেক ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ইসহাক আলীর মৃত্যু শ্বাসরোধে: মেঘালয় পুলিশ - dainik shiksha ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ইসহাক আলীর মৃত্যু শ্বাসরোধে: মেঘালয় পুলিশ ঢাবিতে যোগ দিলেন চাকরিচ্যুত অধ্যাপক ড. সাইফুল - dainik shiksha ঢাবিতে যোগ দিলেন চাকরিচ্যুত অধ্যাপক ড. সাইফুল কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026087760925293