সবাইকে বাকরুদ্ধ করে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সাবের হোসেন রাজু। আজ শনিবার (১৩ মে) ভোর ৩টার দিকে রাজধানীর গ্রীন লাইফ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রক্তের এলার্জি জনিত রোগে তিনি মারা যান।ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রজিউন।
মৃত্যুর সময় সাবেরের বয়স হয়েছিল ২৪ বছর। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলশিক্ষার্থী, তার বিভাগসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে। তার জানাজা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তার পৈতৃক বাড়িতে অনুষ্ঠিত হবে। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে জানাজার সঠিক সময় জানানো হয়নি।
সকালে তার লাশ জহুরুল হক হল গেটে আনা হলে আবাসিক শিক্ষার্থীদের মাঝে কান্নার রোল পড়ে। সিনিয়র, ব্যাচমেট কিংবা জুনিয়র সবারই চোখের কোণায় জল চলে আসে সাবেরের নিথর দেহ দেখে। কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তার বন্ধু ও রুমমেটরা।
সাবেরের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলায়। শিক্ষাজীবনে তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের ১৪৩ নাম্বার রুমের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি। ছাত্র রাজনীতির সঙ্গেও জড়িত ছিল।
সাবের দীর্ঘদিন ধরেই রক্তে এলার্জিজনিত রোগে ভুগছিলেন। হঠাৎ রোগ জটিল হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার রক্তের blood igE বেড়ে 1000+ হয়ে গিয়েছিলো। ফলে বেড়েছিল বিভিন্ন রোগের সংক্রমণ। এটি রক্তে ক্যান্সারের সৃষ্টি করে।
এর আগে গত ২৮ এপ্রিল সাবের হোসেন রাজু অসুস্থ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে ৩ মে তাকে ঢাকা মেডিকেলের মেডিসিন বিভাগে স্থানান্তর করা হয়। সর্বশেষ গতকাল তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে গ্রীন লাইফ হাসপাতালের আইসিইউতে জরুরি ভিত্তিতে স্থানান্তর করা হয়।
সাবের হোসেন রাজুর রুমমেট ও বন্ধু সাইফ আকরান কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, দীর্ঘদিন আমরা বন্ধু ছিলাম এবং অনেক দিন ধরেই আমার রুমমেট ছিল সাবের। সে এভাবে চলে যাবে সেটা ভাবতে পারিনি। সাবেরও বুঝতে পেরেছিল তার মৃত্যুর ক্ষণ ঘনিয়ে আসছে তাই তো তার কাছে যারা টাকা পেত সবাইকে তিনি ঋণ পরিশোধ করেছিলেন। আমরা তার গ্রামের বাড়ি যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সবার দোয়া চাই যেন আল্লাহ যেনো তাকে জান্নাতুল ফেরদৌসের মেহমান বানিয়ে নেন।