রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারারের পদত্যাগ

দৈনিকশিক্ষাডটকম, সিরাজগঞ্জ |

সম্প্রতি ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন সিরাজগঞ্জের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের (রবি) ট্রেজারার অধ্যাপক ড. ফিরোজ আহমদ। অভিযোগ উঠেছে, উপাচার্যের বিভিন্ন অনিয়মের প্রতিবাদে পদটি ছাড়তে চাইছেন তিনি। তবে সব অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে দাবি করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শাহ্ আজম। 

শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ইউজিসি ও রবি সূত্র জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রেজারারের জন্য বরাদ্দকৃত গাড়িটি দীর্ঘদিন অধ্যাপক ড. ফিরোজ আহমদকে না দিয়ে উপাচার্যের স্ত্রী ব্যবহার করেছেন।

এ নিয়ে বেশ অসন্তুষ্ট ছিলেন ট্রেজারার ড. ফিরোজ আহমদ। এছাড়া ট্রেজারারকে এড়িয়ে বিধি বহির্ভূতভাবে অর্থ উত্তোলন করার অভিযোগ রয়েছে উপাচার্যের বিরুদ্ধে। এমনকি শিক্ষক নিয়োগে যোগ্য প্রার্থীদের বাদ দিয়ে উপাচার্যের পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দেয়া নিয়েও ট্রেজারারের ঘোর আপত্তির কথা শোনা যায়।

পদত্যাগপত্রটি গ্রহণ না করে গত ১০ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে বিষয়টির সমাধানের জন্য জানিয়েছে মন্ত্রণালয়। এখন বিশ্ববিদ্যালয়টির সিন্ডিকেটে আলোচিত হয়ে সিদ্ধান্ত আকারে যাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে।

নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়টির একাধিক শিক্ষক ও কর্মকর্তা অভিযোগ করে বলেন, উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগে একটি বিশেষ এলাকাকে গুরুত্ব দেন। এছাড়াও আর্থিক বিভিন্ন বিষয়েও তিনি অনিয়ম করেছেন। পাশাপাশি তিনি সহকর্মীদের সাথে সহযোগিতার বিপরীতে চরম অসহযোগিতা করছেন। ফলে অনেকটা অভিমান জমিয়ে সময়সীমা শেষ না করেই বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়ছেন ট্রেজারার অধ্যাপক ড. ফিরোজ আহমদ।

ট্রেজারার অধ্যাপক ড. ফিরোজ আহমদ বলেন, এটা আসলে মিডিয়াতে আসা কোনো বিষয় নয়। বিষয়টি সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত। আমি মন্ত্রণালয়ের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি। তবে মন্ত্রণালয় সেটি গ্রহণ না করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট হয়ে আসার জন্য বলেছে। তবে সেখানে সুনির্দিষ্ট কোনো প্রসেসের কথাও বলা হয়নি। লিখিতও কোনো কিছু থাকবে বিষয়টি এমন নয়। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শীর্ষ ব্যক্তির অসহযোগিত কিংবা প্রতিবন্ধকতার কারণে এই সিদ্ধান্ত কিনা—এমন প্রশ্নে ট্রেজারার অধ্যাপক ড. ফিরোজ আহমদ জানান, এরকম কিছু নয়। তবে আমার ব্যক্তিগতভাবে মনে হচ্ছে—দায়িত্বে থাকা উচিত নয়। সেজন্য আমি এখন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যেতে চেয়েছি। আমার এখানে ভালো লাগছে না।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. শাহ্ আজম জানান, যেসব অভিযোগ করা হয়েছে তার কোনো ভিত্তি নেই। তিনি বলেন, ট্রেজারার সাহেব আমাকে জানিয়েছেন—তিনি আবারও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে যেতে চান। সেজন্য তিনি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। এখন মন্ত্রণালয় যেহেতু সিন্ডিকেটে আলোচনার জন্য জানিয়েছে—আমরা তাই করবো।

এর মধ্যে তিনি (ট্রেজারার) যদি তার মতামত বদলান তাহলে তিনি থেকে যাবেন জানিয়ে উপাচার্য বলেন, ট্রেজারার সাহেব তার গাড়িটি নিজেই ব্যবহার করছেন। এছাড়াও আমার ওয়াইফ সেখানে থাকেন না, তিনি ঢাকায় থাকেন। ফলে তিনি ট্রেজারার সাহেবের গাড়ি ব্যবহারের কোনো প্রশ্নই আসে না। ট্রেজারার মহোদয় বর্তমানে নিজের গাড়ি নিয়ে ঢাকায় রয়েছেন। যেসব অভিযোগ জানানো হয়েছে—তার কোনো সত্যতা নেই।

২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ আগস্ট ৪ বছরের জন্য খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ডিসিপ্লিনের এই অধ্যাপককে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার হিসেবে নিয়োগ দেয় সরকার। সে হিসেবে চলতি বছরের আগস্টে তার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
আইনের মারপ্যাঁচে অনিশ্চিত ১৯তম শিক্ষক নিবন্ধন - dainik shiksha আইনের মারপ্যাঁচে অনিশ্চিত ১৯তম শিক্ষক নিবন্ধন ‘ঢাবির ক্লাস ও পরীক্ষা শুরু হচ্ছে শিগগিরই’ - dainik shiksha ‘ঢাবির ক্লাস ও পরীক্ষা শুরু হচ্ছে শিগগিরই’ হাই-টেক পার্কের নাম হবে জেলার নামে: উপদেষ্টা নাহিদ - dainik shiksha হাই-টেক পার্কের নাম হবে জেলার নামে: উপদেষ্টা নাহিদ দীপু মনির নামে আরেক মামলা, আসামি ৬০০ - dainik shiksha দীপু মনির নামে আরেক মামলা, আসামি ৬০০ স্কুল-কলেজে বিশৃঙ্খলা : কোথাও জবরদস্তি কোথাও পালিয়ে থাকা - dainik shiksha স্কুল-কলেজে বিশৃঙ্খলা : কোথাও জবরদস্তি কোথাও পালিয়ে থাকা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028188228607178