রাজমিস্ত্রি বিশ্বজিৎ মণ্ডল পড়াবেন কলকাতার কলেজে

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

একসময় কলেজে প্রথম হতেন। স্নাতক হয়ে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তরেও ফার্স্ট ক্লাস ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। ভেবেছিলেন যেমন স্বপ্ন দেখেছেন তেমনভাবেই নিজের জীবনটাকে গড়বেন।

রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করা বিশ্বজিৎ এখন অন্যের বাড়ি নির্মাণ করার কাজে মনোনিবেশ করেন।

বারবার সরকারি চাকরির পরীক্ষায় অংশ নিয়েও ব্যর্থ হয়েছেন বিশ্বজিৎ। শেষ পর্যন্ত সংসারের হাল ধরতে তাকে বেছে নিতে হয়েছে রাজমিস্ত্রির কাজ।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের পূর্ব বর্ধমানের বড়শুলের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ মণ্ডল মনোবল হারাননি। অবশ্য তার বিশ্বাস তাকে কাঙ্ক্ষিত পথে ধাবিত করেছে। কলকাতার একটি কলেজ তাকে অস্থায়ী লেকচারার হিসেবে যোগদান করতে বলেছে।

রাজমিস্ত্রির কাজেও যথেষ্ট দক্ষ বিশ্বজিৎ। শক্তিগড়, বড়শুল, কলানবগ্রামের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নাগরিকরা তার সাথে যোগাযোগ করে তাকে নিজেদের অট্টালিকা গড়ে তোলার ভার দেন। তিনি একা নন, অভাবের তাড়নায় তার বুড়ো বাবা রবিন এবং মা টুনি মন্ডলকেও তার সঙ্গে দিনমজুরের কাজ করতে যেতে হতো। ২৭ বছর বয়সী বিশ্বজিৎ টিনের চাল দেওয়া দুই কামরার ছোট্ট করে নিজের মা-বাবাকে নিয়ে থাকেন।  

গত সোমবার কলকাতার চিত্তরঞ্জন কলেজ থেকে ফোন আসে তার কাছে। তাকে সেই কলেজে অধ্যাপনার কাজের প্রস্তাব দেন কলেজের প্রিন্সিপাল। পার্টটাইম অধ্যাপনার কাজের জন্য নিজের প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসহ তাকে দ্রুত কলেজ কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

বিশ্বজিতের মা জানিয়েছিলেন কিভাবে অভাবের সংসারে কোনো দিনও একবেলা কোনো দিন আধপেটা খেয়ে পড়াশোনা সম্পূর্ণ করেছেন বিশ্বজিৎ। ছেলেকে এভাবে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে দেখে ভালো লাগে না; কিন্তু কিছু করারও ছিল না। প্রতিবেশীরা জানিয়েছিলেন, রাজমিস্ত্রির কাজ করলেও আজ তার কোনো অফিসের চেয়ার অলংকৃত করার কথা ছিল। অবশেষে তাদের কথা সত্যি হতে চলেছে। তার মা জানিয়েছেন, 'ওর শিক্ষক হওয়ার শখ ছিল, অনেক স্কুলে আবেদনও করেছিল। আজ ওর সেই স্বপ্ন সত্যি হওয়ার পথে। ' 

চাকরির ফোন পেয়ে তাই মিষ্টি নিয়ে বাড়িতে এনে মা-বাবাকে সুখবর দেন বিশ্বজিৎ। শুনে স্বাভাবিকভাবেই আনন্দিত তার বাবা রবিন এবং মা টুনি মন্ডল।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান - dainik shiksha সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! - dainik shiksha শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা - dainik shiksha লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষক কেনো বদলি চান - dainik shiksha শিক্ষক কেনো বদলি চান ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে - dainik shiksha ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0037469863891602