রাজশাহীর ৪২৪ কিন্ডার গার্টেনে ইচ্ছেমতো বেতন আদায়

রাজশাহী প্রতিনিধি |

সরকারি কোনো নীতিমালা না থাকায় রাজশাহীর ৪২৪ কিন্ডার গার্টেন স্কুলে লাগামহীন ভর্তি ফি ও বেতন গুনতে হচ্ছে অভিভাবকদের।

রাজশাহী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুস সালাম দৈনিক শিক্ষাকে জানান, রাজশাহী জেলায় এক হাজার ৫৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে পিটিআইসহ। আর এই জেলায় ৪২৪টি কিন্ডার গার্টেন (কেজি স্কুল) রয়েছে। শুধু রাজশাহী মহানগরীতে (বোয়ালিয়া) কিন্ডার গার্টেন রয়েছে ১৩৩টি, পবায় ৭৩টি, গোদাগাড়ীতে ৪৫টি, চারঘাটে ২৩টি, তানোরে ১৩টি, দুর্গাপুরে ১৮টি, পুঠিয়ায় ১৮টি, বাগমারায় ৫৪টি, বাঘায় ২৩টি ও মোহনপুরে ২৪টি।

এসব কিন্ডার গার্টেন স্কুলগুলোর একেকটির একেক রকম ভর্তি ফি ও বেতন। কোনোটির একশ, আবার কোনোটির হাজার ১৫শ টাকা। উপরের ক্লাসে গিয়ে আরও বেশি বেতন গুনতে হচ্ছে অভিভাবকদের। বেতনসহ বিভিন্ন বিষয়গুলো কিন্ডার গার্টেনের পরিচালকরা বেঁধে দেন। সেই অনুযায়ী পরিশোধ করতে হয় টাকা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, তার ছেলে নগরীর ইসলামপুর এলাকার শিমুল মেমোরিয়ালে কেজিতে পড়ে। গত জানুয়ারিতে ভর্তি করতে সাড়ে ৯ হাজার টাকা নিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। প্রতিমাসে ১৪শ টাকা বেতন দিতে হয়।

 তিনি বলেন, শিক্ষা আর গরীব মানুষের জন্য নেই। অল্প টাকায় পড়তে হলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করাতে হবে। আর ভালো স্কুলে পড়াতে হলে টাকা খরচ করতে হয় বেশি। তবে অন্য কিন্ডার গার্টেনের বেতন কম। এ বিষয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য না করে একজন শিক্ষক স্কুলে আসতে বলে ফোন রেখে দেন।

এছাড়া ন্যাশনাল ক্যাডেট কিন্ডার গার্টেনের সহকারী শিক্ষক লুনা বেতনের বিষয়টি শুনে অন্য শিক্ষককে ফোন ধরিয়ে দেন, তিনিও নাম পরিচয় জেনে ফোন রেখে দেন।

এছাড়া ফিরোজাবাদ সপুরা এলাকায় এস. এম. অ্যাকাডেমির প্রধান শিক্ষক মো. খালেদ দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কেজির শিক্ষার্থীদের ৪০০ টাকা বেতন নেয়া হয়। তবে তিনি ভর্তি ফি এর বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

শেফালী আক্তার নামের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, সরকারি প্রাথমিকের চেয়ে এসব স্কুলের লেখাপড়ার মান ভালো। তারা শিশুদের ক্লাসের পড়া মুখস্থ করিয়ে দেন। তাই অভিভাবককে অতিরিক্ত চাপে পড়তে হয় না। বছর-বছর ভর্তি ফি ও বেশি বেতনের বিষয়ে তিনি বলেন, শিশুকে ভালো স্কুলে পড়াতে হলে বেশি টাকা খরচ করতেই হবে।

সরেজমিনে নগরীর বিভিন্ন এলাকার কিন্ডার গার্টেন স্কুল ঘুরে দেখে গেছে, বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান ভাড়া বাড়িতে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে স্কুল শুরু করেছেন। স্কুলগুলোর সামনে নেই খেলার মাঠ। শিশুদের অনেকটাই বন্দি অবস্থায় পাঠদান করাচ্ছে শিক্ষকরা। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মহাসড়কের পাশে। ফলে থেকেই যায় দুর্ঘটনার শঙ্কা।

এমন এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাজশাহী-নাটোর মহাসড়ক সংলগ্ন ভবনে। কিন্ডার গার্টেনটির সামনে ফুটপাত। সেই ফুটপাতে লোহার পাইপ দিয়ে ঘিরে রেখেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। তার ভেতরে মূলত অভিভাবক ও শিশু শিক্ষার্থীদের বিচরণ। নিজেদের ইচ্ছেমতো চলছে এসব স্কুল। পাঠ্যসূচি থেকে শুরু করে ভর্তি ফি, টিউশন ফি, পরীক্ষা সবকিছু ঠিক করে স্কুল কর্তৃপক্ষ।

ভর্তি ফি ও লাগামহীন বেতনের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকলে সব স্কুলের জন্য ভালো হবে বলে বলছেন অভিভাবকরা। অভিভাবকরা এতে করে অতিরিক্ত টাকা খরচের খাতা থেকে রেহায় পাবে।

কিন্ডার গার্টেনগুলোর বেশি বেতন নেয়ার বিষয়ে দৈনিক শিক্ষাকে রাজশাহী কিন্ডার গার্টেন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি গোলাম সারোয়ার স্বপন কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0039031505584717