রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) সংলগ্ন বিনোদপুরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের ঘটনায় ক্যাম্পাস দুই দিন বন্ধ রাখার পর আজ মঙ্গলবার থেকে আবারও ক্লাস-পরীক্ষা চলবে।
সোমবার (১৩ মার্চ) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে এ ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নেয়া হবে বলেও জানান উপাচার্য।
উপাচার্য বলেন, ‘তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমাদের শিক্ষার্থীদের ওপর কতিপয় স্থানীয় লোকজন যেভাবে চড়াও হয়েছিল আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
এসময় তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো নিয়ে আমার প্রশাসন কাজ করছে। সবচেয়ে বড় দাবি হলো শিক্ষার্থীদের আবাসন নিশ্চিত করা। আমাদের দশতলা করে দুটি ভবনের কাজ চলমান। খুব শিগগির ভবনগুলোর কাজ শেষ হবে। এছাড়াও চারটি আবাসিক হল নির্মাণের জন্য আমরা ওপর মহলে আবেদন জানিয়েছি।’
‘আমরা এরইমধ্যে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছি। এ কমিটি সব বিষয়ে খুঁটিয়ে দেখবে এবং আমাদের কাছে প্রতিবেদন দেবে। আমরা অজ্ঞাতপরিচয় ৫০০ জনের নামে মামলাও করেছি।’
এসময় বহিরাগত প্রবেশে নিষেধাজ্ঞাও জারি করেন রাবি উপাচার্য। তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিরাগতদের দৌরাত্ম্য বেড়ে গেছে। ক্যাম্পাসে মাইকিং করে বহিরাগত প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে। সন্ধ্যার পর থেকে কোনো বহিরাগত ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবে না। শিক্ষার্থীদের চলাচলের ক্ষেত্রেও তাদের আইডি কার্ড দেখাতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিরিক্ত গেট থাকায় এমন সমস্যাগুলো সৃষ্টি হচ্ছে। আমরা গেটের সংখ্যা কমিয়ে আনার জন্য কাজ করছি।’
শনিবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যায় বাসের ভাড়া নিয়ে এক রাবি শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা-কাটাকাটির জের ধরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এরপর রাতভর দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে। ব্যবসায়ীদের ইটপাটকেল এবং পুলিশের টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। এদের মধ্যে শতাধিক শিক্ষার্থী রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
এ ঘটনায় তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম হুমায়ুন কবীরকে প্রধান করা হয়েছে।
এরআগে অজ্ঞাতপরিচয় ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। রোববার (১২ মার্চ) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবদুস সালাম বাদী হয়ে নগরীর মতিহার থানায় মামলাটি করেন।
একই ঘটনায় মামলা করেছে মতিহার থানা পুলিশ। এতে ৩০০ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে।