রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে যোগ্যতা অর্জন করতে না পারলেও তিন শিক্ষার্থীকে ভর্তির জন্য মনোনীত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন পরীক্ষাতে পাসই করতে পারেননি। বাকি দুইজন মেধাক্রমের ভিত্তিতে বিষয় পছন্দক্রম ফরম পূরণেই যোগ্য হননি। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, বিশেষ বিবেচনায় তাদেরকে ভর্তির সুযোগ দেয়া হয়েছে।
ওই তিন শিক্ষার্থী ‘বি’ ইউনিটে (ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছিলেন। তিন শিক্ষার্থীর একজন নার্গিস খাতুন (রোল-১৩৬৭২) এমসিকিউ পরীক্ষায় ৬০ নম্বরের মধ্যে ২১ পেয়েছেন। নিয়ম অনুযায়ী, ইউনিটে যতটি আসন রয়েছে তার দশগুণ সংখ্যক শিক্ষার্থীর প্রাপ্ত এমসিকিউ নম্বরের ক্রমানুসারে লিখিত পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নের জন্য বিবেচিত হবে। সে হিসেবে নার্গিসের লিখিত পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নযোগ্য হয়নি বলে জানা গেছে। তবে মূল্যায়নের জন্য নির্ধারিত সর্বনিম্ন নম্বর জানা যায়নি।
দ্বিতীয়জন মো. আশিকুর রহমান (রোল-১৪১৪৮) এমসিকিউতে ৩৪ ও লিখিত পরীক্ষায় সাড়ে সাতসহ ৪১ দশমিক ৫০ পেয়েছেন। তার মেধাক্রম তিন হাজার ৮৮৩ হওয়ায় বিষয় পছন্দক্রম ফরম পূরণে যোগ্য হননি। তৃতীয়জন রিন্টু তঞ্চঙ্গ্যা (রোল-১৪৫২৪) এমসিকিউতে ৩৩ ও লিখিত পরীক্ষায় ১৬ সহ মোট ৪৯ পেয়েছেন। মেধাক্রম দুই হাজার ৪১৯ হওয়ায় তিনিও বিষয় পছন্দক্রম ফরম পূরণের যোগ্য হননি। তবে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে তিন শিক্ষার্থীকে ২ জানুয়ারির মধ্যে ভর্তি হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, রিন্টু তঞ্চঙ্গ্যা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী কোটায় ভর্তি হয়েছেন। তবে ফরম পূরণের সময় কোটা নির্বাচন বৃত্ত ভরাট করেননি। তাই তিনি বিষয় পছন্দক্রম ফরম পূরণে যোগ্য বিবেচিত হননি। পরে ভর্তি উপ-কমিটির সিদ্ধান্তে তাকে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হয়। এ ছাড়া নার্গিস খাতুন অনুর্ধ্ব-১৯ দলের খেলোয়াড় হওয়ায় বিশেষ বিবেচনায় ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। তবে আশিকুর রহমানের ব্যাপারে কিছু জানা সম্ভব হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রধান সমন্বয়ক অধ্যাপক একে শামসুদ্দোহা বলেন, নার্গিস অনুর্ধ্ব ১৯ জাতীয় ফুটবল দলের হয়ে অনেক ম্যাচ খেলেছে। সে ক্রীড়াঙ্গনে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সুনাম নিয়ে আসবেন। তাই তাকে ভর্তির সুযোগ দেয়া হয়েছে। আর রিন্টু একজন উপজাতি। সে পরীক্ষায় ভালো করেছে, মেধাক্রমও ভালো। কিন্তু আবেদনের সময় ভুলবশত উপজাতি কোটার ঘরটি পূরণ করতে পারেনি। তাই সুযোগ দেয়া হয়েছে। তবে আশিকুর রহমানের বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া এমন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তাদের পরিচিত অনেকেই ভর্তি পরীক্ষায় ৪৯ নম্বরের চেয়ে বেশি এবং কোটা বৃত্ত ভরাট করলেও তারা ভর্তির সুযোগ পাননি। তাই ভর্তি কার্যক্রমের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।