রাবিতে নিয়োগ বাণিজ্য : সাবেক-বর্তমান উপাচার্যপন্থী শিক্ষকদের মধ্যে কাঁদা ছোড়াছুড়ি

রাবি প্রতিনিধি |

বিভিন্ন অনিয়মকে কেন্দ্র করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষকদের মধ্যে বিভাজনের সৃষ্টি হচ্ছে। বিশেষ করে সম্প্রতি রাবিতে নজিরবিহীন নিয়োগ বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা বাড়ছে। এরই মধ্যে শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার ঘটনাও ঘটেছে দেশের অন্যতম এই বিদ্যাপীঠে।

বিশ্ববিদ্যালয়টির বর্তমান প্রশাসনকে দুর্নীতিগ্রস্ত উল্লেখ করে তাদের অপসারণ, শিক্ষক নিয়োগে স্বজনপ্রীতি, ঢাকায় অতিথি ভবন ক্রয়ে আর্থিক অনিয়মসহ বিভিন্ন অভিযোগ তোলা হয়। এসবকে কেন্দ্র করে সাবেক ও বর্তমান উপাচার্যপন্থী শিক্ষকদের মধ্যে কাঁদা ছোড়াছুড়ি বেড়েই চলেছে।

অন্যদিকে দুর্নীতি অনুসন্ধানে মাঠে নেমেছে দুদক। এরই মধ্যে বেশ কিছু নথিপত্র তারা জব্দ করেছে। আরো নথিপত্র চেয়ে সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু বলার পর জয় হিন্দ বলে বক্তব্য শেষ করেন। এরপর ৩০ সেপ্টেম্বর উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়ার সঙ্গে এক চাকরিপ্রত্যাশীর স্ত্রীর টাকা চেয়ে কথোপকথনের অডিও ফাঁস হয়। এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়।

পরে ৩ অক্টোবর থেকে প্রগতিশীল শিক্ষকদের মধ্যে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মুহম্মদ মিজানউদ্দিনপন্থী বেশ কয়েকজন আন্দোলন শুরু করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে অধ্যাপক সোবহানপন্থী প্রগতিশীল শিক্ষকরা আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। গত ৪ জানুয়ারি অধ্যাপক সোবহানের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও দুদকে ৩০০ পৃষ্ঠার অভিযোগ দাখিল করেন মিজানউদ্দিনপন্থী শিক্ষকরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম টিপু বলেন, নিজেদের মধ্যে এই বিভাজনের অন্যতম কারণ ব্যক্তিগত স্বার্থ।

অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ইলিয়াছ হোসেন বলেন, ‘দুর্নীতি-অনিয়মের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন।’

এদিকে অধ্যাপক সোবহানপন্থী শিক্ষকদের দাবি, কয়েকজন শিক্ষক শুধু বর্তমান প্রশাসনের অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে কথা বলছেন। কিন্তু সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মিজানউদ্দিনের আমলে ঘটে যাওয়া ১০ কোটি টাকার অতিথি ভবন দুর্নীতি, শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলক নির্মাণে আর্থিক অনিয়ম, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের অনিয়ম এড়িয়ে যাচ্ছেন। নিজেদের দুর্নীতি ঢাকতে তারা বর্তমান প্রশাসনের বিরুদ্ধে নানা কূটকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছেন।

প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের আহ্বায়ক অধ্যাপক এম মজিবুর রহমান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিকার চায় প্রগতিশীল শিক্ষকসমাজ। আমরা নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে এসব অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদ জানিয়েছি।’

সার্বিক বিষয়ে জানতে উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহানের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করলেও নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা - dainik shiksha ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ - dainik shiksha কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে - dainik shiksha প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033760070800781