রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে কাঙ্ক্ষিত পদ না পেয়ে দ্বিতীয় দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ছাত্রলীগের একাংশের নেতাকর্মীরা৷ তারা বলছেন, এ কমিটি বিলুপ্ত না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে৷ এদিকে কমিটি ঘোষণার ৪৮ ঘণ্টা পার হলেও ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারেনি ছাত্রলীগের সদ্য ঘোষিত কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। এ ছাড়া ক্যাম্পাসের দুটি হলের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে।
এর আগে গত শনিবার রাতে মোস্তাফিজুর রহমান বাবুকে সভাপতি ও আসাদুল্লা-হিল-গালিবকে সাধারণ সম্পাদক করে ৩৯ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এতে কাঙ্ক্ষিত পদ না পেয়ে নতুন কমিটিকে 'অবাঞ্ছিত' ঘোষণা করে ছাত্রলীগের একাংশের নেতাকর্মীরা৷ পর দিন সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পেছনে ছাত্রলীগের দলীয় টেন্টে অবস্থান নেন তারা৷ দফায় দফায় বিক্ষোভ ও শোডাউন করে নতুন নেতৃত্বকে ক্যাম্পাসে ঢুকতে না দেওয়ার হুঁশিয়ারি দের তারা।
বিক্ষুব্ধ নেতাদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় কমিটি কোনো প্রকার যাচাই-বাছাই না করে টাকার বিনিময়ে এ কমিটি ঘোষণা করেছে৷ যেখানে একজন এইচএসসি পাস করা ছাত্র, বিএনপি পরিবারের সন্তান ও সনদ জালিয়াতি করে সান্ধ্যকোর্সে ভর্তি হওয়া একজনকে ছাত্রলীগের একটি বড় ইউনিটের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে৷ নবগঠিত কমিটিকে 'অবাঞ্ছিত' ঘোষণা করাদের মধ্যে রয়েছেন বর্তমান কমিটির সহসভাপতি সরকার শাহিনুল ইসলাম ডন ও তাওহিদুল ইসলাম দুর্জয় ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ মোরশেদ।
এ ছাড়া কাঙ্ক্ষিত পদ না পাওয়া নেতাদের মধ্যে রয়েছেন সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সহসভাপতি কাজী আমিনুল হক লিংকন, কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য সাকিবুল হাসান বাকি ও অনিক মাহমুদ বনি। অবস্থান কর্মসূচি বিষয়ে শাহিনুল ইসলাম সরকার ডন বলেন, 'দ্বিতীয় দিনের মতো ক্যাম্পাসে আমরা অবস্থান করছি। এ কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি না দেওয়া পর্যন্ত আমরা ক্যাম্পাসে অবস্থান করব। নতুন কমিটির কোনো নেতাকর্মীকে ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করতে দেওয়া হবে না।'
বর্তমান কমিটিকে বিলুপ্ত করে নতুন 'স্বচ্ছ ইমেজের' ছাত্র নেতাদের নিয়ে নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানিয়ে তাওহিদুল ইসলাম দূর্জয় বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের সঠিক নেতৃত্ব ধরে রাখতে ছাত্রলীগের স্বচ্ছ ইমেজের নেতৃত্ব প্রয়োজন। সে লক্ষ্যেই আমরা ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়েছি, যাতে করে অবাঞ্ছিত নেতৃত্ব ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে না পারে। এই কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি না দেওয়া পর্যন্ত আমরা ক্যাম্পাসে অবস্থান অব্যাহত রাখব। ছাত্রলীগকে সঠিক নেতৃত্ব প্রদান করাই আমাদের লক্ষ্য।'
এ বিষয়ে জানতে সদ্য ঘোষিত কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে কয়েকবার কল করা হলেও তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে৷