রাবির ডিনের বিরুদ্ধে সহকর্মীকে লা*ঞ্ছি*ত করার অভিযোগ

রাবি প্রতিনিধি |

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক ডিনের বিরুদ্ধে ‘অযোগ্য, অপদার্থ ও বেহায়া’ বলে অপমানিত করার অভিযোগ করেছেন একটি বিভাগের চেয়ারম্যান। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে সৌহার্দ্যপূর্ণ কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করার স্বার্থে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার অনুরোধ জানিয়ে উপাচার্য বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগকারী হলেন- রাবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী। তিনি সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. ইলিয়াছ হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন।

উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগে অধ্যাপক মামুন লিখেছেন, 'গত ১৮ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টায় সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ১১২তম সভা ছিল। উক্ত সভায় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের কিছু একাডেমিক বিষয় উপস্থাপন করার জন্য আমি উপস্থিত হই। এ বিষয়ে কিছু আইনগত ত্রুটি-বিচ্যুতির ব্যাপারে আলোচনা হচ্ছিলে। ডিন মহোদয় এ ব্যাপারে কিছু পরামর্শমূলক কথা বলার এক পর্যায়ে আমাকে ব্যক্তিগতভাবে অশালীন ভাষায় আক্রমণ করেন।’

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি জানান, 'তিনি (অধ্যাপক ইলিয়াছ হোসেন) বলেন যে, "তুমি একজন অযোগ্য চেয়ারম্যান, তুমি কোনো নিয়ম-কানুন জানো না, আমার জীবনে এমন অযোগ্য ও অপদার্থ চেয়ারম্যান দেখিনি।’’ আমি প্রতিবাদ করে বলি যে, `এ রকম একটি একাডেমিক সভায় আপনি এ ধরণের ভাষা প্রয়োগ করতে পারেন না। আপনি আপনার আলোচনা একাডেমিক বিষয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখুন।’’ তিনি এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তিনি বলেন যে, `তোমার সাথে কীভাবে কথা বলব? তুমি তো একজন বেহায়া চেয়ারম্যান। কেউই তোমাকে চায় না তবুও তুমি বেহায়ার মতো চেয়ারম্যান পদ আকঁড়ে আছো।’’ 

আমি তাকে বলি যে, "আপনি কিন্তু শিষ্টাচার রক্ষা করছেন না। আপনি এভাবে আমাকে অপমান করে কথা বলতে পারেন না।’’ কিন্তু তিনি অত্যন্ত অশালীন ভাষায় আমাকে অপমান করেন।’

অধ্যাপক মামুন আরও লিখেছেন, 'ঘটনার আকস্মিকতায় উপস্থিত সকলে হতভম্ব হয়ে যায়। পরবর্তীতে বিভাগের কারিকুলাম কমিটি সংক্রান্ত জটিলতার সমাধানের বিষয়ে তার সাথে কথা বলতে তার অফিসে গেলে তিনি আমকে বলেন যে, "তুমি আমার অফিসে ঢুকবে না।’’ আমি বলি, "এটা আপনি বলতে পারেন না। একজন চেয়ারম্যান ডিনের অফিসে আসবে, ডিন তাকে এভাবে চলে যেতে বলতে পারে না।’’ তিনি উত্তেজিত হয়ে বলেন যে, `যদি তুমি না যাও তবে তোমাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেব।’’ তার এ অশালীন আচরণে উপস্থিত সকলে হতভম্ব হয়ে যায়। অতঃপর আমি চলে আসি।’’

অপমানিত করার কারণ প্রসঙ্গে অধ্যাপক মামুন লিখেছেন, 'তিনি (ড. মো. ইলিয়াছ হোসেন) আমার বিভাগে একসময় খণ্ডকালীন শিক্ষক ছিলেন। অর্থনীতি বিভাগের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ওয়াদুদ যখন চেয়ারম্যান ছিলেন, তখন খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে তার নাম প্রস্তাব করে পাঠালে উক্ত বিভাগের সভাপতি চিঠিটি ফেরত পাঠান; ফলে আমরা প্রফেসর ড. মো. ইলিয়াছ হোসেনকে খণ্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ দিতে পারিনি। প্রফেসর ইলিয়াছ হোসেন তখন আমাকে এ ব্যাপারে তার পক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু আমি এ বিষয়ে কিছু করতে পারিনি। এছাড়া আরও কিছু বিষয়ে সম্ভবত তিনি আমার উপর প্রসন্ন ছিলেন না।’’

এঘটনায় তিনি মানসিকভাবে আহত হয়েছেন উল্লেখ করে লিখেছেন, 'একটি একাডেমিক সভায় এবং লোকজনের উপস্থিতিতে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ডিন এ ধরণের ভাষা প্রয়োগ করতে পারেন- এ আমার বোধের বাইরে। তার এ ধরণের অশালীন ব্যবহার কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়। এতে আমি অত্যন্ত অপমানিত বোধ করছি। এ ধরণের অপমানজনক ব্যবহারের মুখোমুখী হয়ে আমি মানসিকভাবে এতোটাই আহত যে, কোনো কাজে সহজে মনোসংযোগ করতে পারছি না। আমি এর প্রতিকার চাই। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সৌহাদ্যপূর্ণ কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করার স্বার্থে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করছি।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ইলিয়াছ হোসেন বলেন, এই বিষয়ে আমি কথা বলব না। এই বিষয়ে ওকেই জিজ্ঞেস করেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ঢাকা বোর্ডে জিপিএ-৫ বেড়েছে ২০০ - dainik shiksha ঢাকা বোর্ডে জিপিএ-৫ বেড়েছে ২০০ ‘আহতদের আমৃত্যু চিকিৎসা ও পূনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে’ - dainik shiksha ‘আহতদের আমৃত্যু চিকিৎসা ও পূনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে’ ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা জোরদার করার পরামর্শ ইউজিসির - dainik shiksha ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা জোরদার করার পরামর্শ ইউজিসির পুরনো পদ্ধতিতে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা - dainik shiksha পুরনো পদ্ধতিতে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক জাবির প্রশাসনিক ভবন থেকে ‘শেখ মুজিবের’ ছবি অপসারণ - dainik shiksha জাবির প্রশাসনিক ভবন থেকে ‘শেখ মুজিবের’ ছবি অপসারণ ইএফটি সংক্রান্ত নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha ইএফটি সংক্রান্ত নতুন নির্দেশনা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন - dainik shiksha এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0045969486236572