দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। তাকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) প্রজ্ঞাপন জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রাষ্ট্রপতি পদে আর কোনো প্রার্থী না থাকায় তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২৩ এপ্রিল। সে অনুযায়ী আগামী ২৪ এপ্রিল সাহাবুদ্দিনের নতুন রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার কথা।
রাষ্ট্রপতির মেয়াদ কার্যভার গ্রহণের তারিখ থেকে পাঁচ বছর। তবে রাষ্ট্রপতি পদের মেয়াদ শেষ হওয়া সত্ত্বেও তার উত্তরাধিকারী কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত তিনি নিজ পদে বহাল থাকবেন। একই ব্যক্তি দুই মেয়াদের বেশি রাষ্ট্রপতি হতে পারবেন না।
রাষ্ট্রপতি কী কী ক্ষমতা ও সুযোগ-সুবিধা পান তা দেশের সংবিধান ছাড়াও ‘দ্য প্রেসিডেন্টস (রেমুনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজ) (সংশোধন) অ্যাক্ট, ১৯৭৫’-এ বলা আছে। ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে প্রণয়ন করা হলেও প্রয়োজন অনুযায়ী আইনটি বিভিন্ন সময়ে সংশোধন করা হয়েছে।
‘দ্য প্রেসিডেন্টস (রেমুনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজ) (সংশোধন) অ্যাক্ট, ১৯৭৫’ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির মাসিক বেতন হবে এক লাখ ২০ হাজার টাকা। তার স্বেচ্ছাধীন তহবিল বছরে দুই কোটি টাকা। রাষ্ট্রপতি বিমানে ভ্রমণ করলে বিমা সুবিধার ব্যবস্থা থাকবে। এই বিমা সুবিধা এখন বছরে ২৭ লাখ টাকা।
রাষ্ট্রপতি আপ্যায়নের (এন্টারটেইনমেন্ট) জন্য বছরে ভাতা পান। এই টাকার নিরীক্ষা হবে না। তার জন্য সরকারি বাসভবন হিসেবে থাকবে ‘বঙ্গভবন’। এর সাজসজ্জা ও রক্ষণাবেক্ষণের খরচ বহন করবে সরকার। স্বাভাবিকভাবে রাষ্ট্রপতি পরিবহন (গাড়ি) সুবিধা পাবেন। তিনি অফিশিয়াল কাজে দেশের বাইরে গেলে সরকার নির্ধারিত ভাতা পাবেন।
রাষ্ট্রপতি নিজের বাড়িতে বা সরকারি বাসভবন ছাড়া অন্য কোনো বাড়িতে বসবাসের সিদ্ধান্ত নিলে সেই বাড়ি সজ্জিত করা হবে এবং এর খরচ সরকার দেবে।
রাষ্ট্রপতি ও তার পরিবারের সদস্যদের খাবার, আবাসন, চিকিৎসা, পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসসহ সেবা খাতের সব ধরনের ব্যয় রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে ব্যয় করা হয়।
রাষ্ট্রপতি ও তার পরিবারের সদস্যরা দেশের যে কোনো হাসপাতালে বিনা খরচে চিকিৎসা সুবিধা পাবেন। চিকিৎসকদের পরামর্শে দেশের বাইরে চিকিৎসার প্রয়োজন হলে সেই খরচও সরকার দেবে।
সংবিধান অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের অন্য সব ব্যক্তির ঊর্ধ্বে। তিনি রাষ্ট্রের প্রধান। তিনি কেবল প্রধানমন্ত্রী ও ৯৫ অনুচ্ছেদের (১) দফা অনুসারে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্র ছাড়া অন্য সব দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী পালন করবেন। তবে প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতিকে আদৌ কোনো পরামর্শ দিয়েছেন কি না এবং দিলে কোনো আদালত সে সম্পর্কে কোনো প্রশ্নের তদন্ত করতে পারবেন না।
প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় ও পররাষ্ট্রনীতি সংক্রান্ত বিষয় সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত রাখবেন এবং রাষ্ট্রপতি অনুরোধ করলে যে কোনো বিষয় মন্ত্রিসভায় বিবেচনার জন্য পেশ করবেন।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে ক্ষমা করার অধিকার আছে রাষ্ট্রপতির। কোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের দেওয়া দণ্ড মার্জনা, বিলম্ব ও স্থগিত করতে পারেন রাষ্ট্রপতি।