দৈনিক শিক্ষাডটকম,নোবিপ্রবি: নোয়াখালীতে বান্ধবীর বাসা থেকে ক্যাম্পাসের ফেরার পথে রিকশাচালকের হাতে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) এক ছাত্রী। গতকাল শুক্রবার সকালে পৌর বাজারের পেছনে ল’ইয়ার্স কলোনি প্রভাতী স্কুল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। প্রশাসন বলছে, লিখিত অভিযোগ পেলে তারা জড়িত চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন।
ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে আবাসিক। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, গতকাল আনুমানিক সকাল দশটায় বান্ধবীর বাসা থেকে হলে আসার উদ্দেশ্যে বাসার সামনে থেকে একটি ব্যাটারি চালিত অটোরিকশায় উঠি। উঠার সময় রিকশাচালককে স্বাভাবিক মনে হলেও প্রভাতি স্কুল থেকে কিছু দূর সামনে আসার পর একটি ব্যাডমিন্টন কোর্টের সামনে রিকশাচালক হঠাৎ করে তার রিকশাটি থামান। জায়গাটি তখন নিরিবিলি ছিলো। রিকশাচালক রিকশায় সমস্যা হয়েছে বলে জানায় এবং রিকশা থেকে নেমে তাকে সাহায্য করতে বলে। এসময় রিকশাচালক পেছনের চাকার কাছে বসে পা দিয়ে রিকশা সাইডডে চাপ দিতে বলে।
তিনি আরো বলেন, রিকশাচালকের দেখানো জায়গায় পা দিয়ে চাপ দিলে রিকশাচালক এতে কাজ হচ্ছে না বলে জানান। পরে জুতা খুলে চাপ দিতে অনুরোধ করে। পরবর্তীতে জুতা খুলে চাপ দিলে একটু পর রিকশাচালক তার হাত দিয়ে পা ধরে এদিক ওদিক করতে থাকে এবং বলতে থাকে আপু একটু কষ্ট করে পা এদিকে নেন ওদিকে নেন। কিন্তু তখনো আমি কিছু বুঝতে পারেননি।
‘পরে বুঝতে পারি রিকশাচালক তার পায়ের মধ্যাঙ্গুল মুখে ঢুকাচ্ছেন। বৃদ্ধা আঙুল মুখে ঢুকানোর চেষ্টা করতে নিলে সাথে সাথে পা সরিয়ে নিই এবং রিকশা থেকে নামতে চাইলে রিকশা চালক তৎক্ষণাৎ রিকশায় উঠে রিকশা চালানো শুরু করে দেয়। এসময় ভয়ে কি করবো বুঝে উঠতে না পেরে এক পর্যায়ে বড় মসজিদ মোড় এলাকায় রিকশাটি এলে দ্রুত নেমে গিয়ে হলে চলে আসি।’
ক্যাম্পাস সংলগ্ন এলাকায় নোবিপ্রবি ছাত্রীরা প্রায়ই এমন হয়ারির শিকার হন বলে জানান শিক্ষার্থীরা। আব্দুল্লাহ আল নোমান নামে বিশ্ববিদ্যালয়টির এক শিক্ষার্থী বলেন, নোয়াখালীতে এ ধরনের ঘটনা সচরাচর না ঘটলেও প্রায়ই যৌন হয়রানির কথা শোনা যায়। এর আগেও বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে নোবিপ্রবির ছাত্রীরা হয়রানির শিকার হয়েছেন। অনেকজনকে শাস্তির আওতায় নেওয়া হয়েছিল। তবুও এ ধরনের ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. আনিসুজ্জামান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এসব ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করে। সেই যেই হোক, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে বা বাইরে। আমার শিক্ষার্থী যৌন হেনস্তার শিকার হবে আর আমরা বসে থাকবো প্রশ্নই আসে না। অভিযোগ পেলে আমরা এ ধরনের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।