বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে বাজেটের ঋণ সহায়তা হিসেবে ৫০৭ মিলিয়ন ঋণ পেয়েছে বাংলাদেশ। এ অর্থ দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে যোগ হয়েছে। এজন্য এক দিনের মধ্যেই আবারও কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের রিজার্ভ। বুধবার (১০ মে) রিজার্ভ বেড়ে ৩০ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বিষয়াটা নিশ্চিত করেন।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক জানান, ঋণদাতা সংস্থাগুলো থেকে ঋণ চেয়েছিলাম। এরই মধ্যে বিশ্বব্যাংকের একটি কিস্তি আমাদের রিজার্ভে যোগ হয়েছে। এর যার ফলে রিজার্ভ বেড়ে ৩০ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলারে উন্নতি হয়েছে।
তিনি বলেন, আরও কয়েকটা সংস্থা থেকে খুব শিগগিরই আমরা তাদের থেকে ঋণ সহায়তা পাবো। আশা করছি এসব সহায়তা এলে আগামী জুনের মধ্যে আমাদের রিজার্ভ ৩২ বিলিয়ন ডলারে উন্নতি হবে।
জানা গেছে, দেশের মধ্যে বেশ আগেই ডলার সংকট শুরু হয়। মূলত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতির পরই এ সংকটে পড়ে দেশ। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংক এরই মধ্যে ডলার সাশ্রয়ে নানা উদ্যোগ নিয়েছে। বিলাসী আমদানিতেও কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। তবুও রিজার্ভের ওপর চাপ কমছে না। আমদানি বিল পরিশোধে প্রতিনিয়তই রিজার্ভ থেকে ডলার ছাড় করতে হচ্ছে। এতে চাপ কমার পরিবর্তে আরও বাড়ছে।
সবশেষ এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) বিল পরিশোধে বড় চাপে পড়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের মজুত। আকুর দায় বাবাদ ১১৮ কোটি ডলার (১ দশমিক ১৮ বিলিয়ন) ডলার পরিশোধের পরে রিজার্ভ নামে ২৯ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলারে। এটি গত ৭ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ম অবস্থান। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মানদণ্ড অনুযায়ী গণনা করায় রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের ৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার বাদ দিলে দেশের ব্যবহারযোগ্য মোট রিজার্ভের ছিল ২৪ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলারের ঘরে।
সবশেষ সোমবার আকুর দায় ১ দশমিক ১৮ বিলিয়ন পরিশোধের পরে রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৯ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন। এর আগে গত ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিলে প্রথমবারের মতো ২৯ বিলিয়ন ডলারের ঘর নেমেছিল বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। তবে ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের শেষের দিকে রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। আর ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের জুনে রিজার্ভ ৩৩ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করে। করোনাকালীন সময়ে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩২ থেকে ৩৩ বিলিয়ন ডলারের ঘরের মধ্যে ছিল। তবে ২০২১ আগস্ট মাসে প্রথমবারের মতো রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর ছাড়িয়েছিল।