প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে যখন বিএনপি ক্ষমতায় ছিল তখন রিজার্ভ ছিল শূন্য দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলার, এখন ৩১ বিলিয়ন ডলার আছে। দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। আমাদের সব জমি আবাদ করব, আমরা অন্যের উপর নির্ভর করব না। আমরা নিজেদেরটা দিয়ে নিজেরা চলব।’ জাপান, যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য সফর নিয়ে সোমবার বিকেলে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা আমাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেবে, আমরা তাদের কাছ থেকে কিছু কেনাকাটা করব না। ভয়ের কিছু নেই, অনাবাদী জমি সব চাষ করে, যা আসে। বিশ্বব্যাপী খাদ্যের অভাব। উন্নয়নশীল না উন্নত দেশেও খাদ্যের সমস্যা। একটার বেশি টমেটো কেনা যাবে না, ছয়টার বেশি ডিম কেনা যাবে না। রোজায় তো কোনো হাহাকার শোনা যায়নি। কেউ কি আসছে, আপনাদের কাছে ভিক্ষা চাইতে? আসেনি। সবাই ইফতারের জন্য এগিয়ে এসেছে। আমাদের দল ও নেতাকর্মীদের এজন্য ধন্যবাদ জানাই।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘কথা নাই বার্তা নাই, আমাদের নিষেধাজ্ঞার ভয় দেখাবে, আমরা ভয় নিয়ে বসে থাকব। কেন? আমাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ, আমাদের দেশের মানুষই নিজের দেশের বিরুদ্ধে বদনাম করে।’
ঘূর্ণিঝড় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা এমনই প্রস্তুতি নিলাম যে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানারই সাহস পেল না। তবে হ্যাঁ, ঘূর্ণিঝড় একটার পর আবার আসে। সতর্ক থাকতে হবে।’
ঢাকা থেকে ১৫টি নদী হারিয়ে গেছে, পানির স্তর নেমে গেছে। জাতীয় নদী কমিশন যে নদী খেকোদের যে তালিকা প্রকাশ করেছে। আগামী নির্বাচনে নদীখেকোরা অংশ নিতে পারবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নদীখেকোদের কথা বলতে হলে স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান ও এরশাদের কথা বলতে হবে। তারাই কিন্তু নদীগুলো দখলের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ অনেকগুলো পুকুর, খাল আমরা উদ্ধার করে দিয়েছি। আমরা ১৯৯৬ সালে দখলমুক্ত করে রেখে গিয়েছি তা পরে বিএনপি সরকার এসে দখলে চলে গেছে। আমরা সবসময় পরিবেশ রক্ষার দায়িত্ব নিয়েছি। আইয়ুব খান আসার পর মতিঝিলের বিশাল বিল বন্ধ করে দেওয়া হয়। জায়গাটা মতিঝিল, কিন্তু ঝিলের কোনো অস্তিত্ব নাই। হাতিরঝিল কেউ কেউ পৈতৃক সম্পত্তি বলে দখল করে নিতে চেয়েছিল। কেউ কেউ দলিলও বের করে নিয়ে এসেছিল। কিন্তু আমি বলেছিলাম, না এটা দখলমুক্ত করতে হবে। পরে সুসজ্জিত করে দিয়েছি।’
ত্রিদেশীয় সফরে গত ২৫ এপ্রিল জাপানের রাজধানী টোকিও পৌঁছান শেখ হাসিনা। সেখানে জাপান ও বাংলাদেশের মধ্যে আটটি চুক্তি হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ-বিশ্বব্যাংক অংশীদারিত্বের ৫০ বছর পূর্তির অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ২৯ এপ্রিল ওয়াশিংটন ডিসিতে পৌঁছান। যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে আরও কয়েকটি কর্মসূচিতে যোগ দেন তিনি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী ও শেখ ফজলুল করিম সেলিম, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।