নুসরাত হত্যারুহুলের মুক্তি চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর ছবিসহ পোস্টার

ফেনী প্রতিনিধি |

ফেনীর সোনাগাজীতে নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যা সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে আলোচিত ও ঘৃণ্য ঘটনা। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া হত্যা মামলার অন্যতম আসামি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. রুহুল আমিন। আর কারাবন্দি এই রুহুল আমিনের মুক্তি দাবি করে সোনাগাজীতে দলের নাম ব্যবহার করে পোস্টারিং হয়েছে। উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও সব ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নাম উল্লেখ করা এই পোস্টারে ব্যবহার করা হয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয়ের ছবি।

সংগঠন ও এর শীর্ষস্থানীয় নেতাদের ছবি ব্যবহার করে চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার একজন আসামির মুক্তি দাবি করে পোস্টারিংয়ের এই ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বলছেন, এতে দল ও শীর্ষ নেতৃত্বের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে।

গত মঙ্গলবার রাত থেকে উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলে যত্রতত্র বিপুল পরিমাণ পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। বাদ যায়নি উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রধান কার্যালয়ও। পোস্টারে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি রুহুল আমিন ভাইয়ের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তি চাই।’

সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগসহ ভ্রাতৃপ্রতিম সব সংগঠনের নেতারা বলছেন, এই পোস্টারিংয়ের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবদুর রহমান বিকম বলেন, ‘রুহুল আমিনকে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি দাবি করে তাঁর মুক্তি চেয়ে পোস্টারিং করা ঠিক হয়নি। যারা পোস্টারিং করেছে তাদের উচিত ছিল তাঁকে সাবেক সভাপতি উল্লেখ করা। আমার জানামতে, তাঁর মুক্তির দাবিতে ছাপানো পোস্টারের সঙ্গে জেলা বা উপজেলা আওয়ামী লীগের কোনো সম্পর্ক নেই।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ‘রুহুল আমিন নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। এ ধরনের একজন বিতর্কিত রাজনৈতিক নেতার মুক্তির দাবির পোস্টারে জাতির জনক ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ব্যবহার করা কোনোভাবেই উচিত হয়নি।’

সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক মফিজুল হক বলেন, ‘এই পোস্টারিংয়ের সঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের কোনো সম্পর্ক নেই।’ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম খোকন বলেন, ‘কে বা কারা এই পোস্টারিং করেছে আমরা জানি না। এর সঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই।’

উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আজিজুল হক হিরন ও সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম ভুট্টো বলেন, ‘এই পোস্টারিংয়ের সঙ্গে যুবলীগের কেউ জড়িত নেই। সাংগঠনিকভাবে কাউকে এই পোস্টারিংয়ের দায়িত্বও দেওয়া হয়নি। আমরা জেনেছি, রাতের আঁধারে পোস্টারগুলো বিএনপির কর্মীদের দিয়ে লাগানো হয়েছে।’

নুসরাত হত্যা মামলার বাদী মাহমুদুল হাসান নোমান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই এ হত্যা মামলার দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি সব সময় মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছেন। এমন প্রেক্ষাপটে মামলার অন্যতম এক আসামির মুক্তির জন্য ছাপানো পোস্টারে প্রধানমন্ত্রীর ছবি ব্যবহার কোনোভাবেই উচিত হয়নি।’

নুসরাত হত্যা মামলায় পিবিআই গত ২৯ মে চার্জশিট দেয়। রুহুল আমিনসহ চার্জশিটভুক্ত ১৬ আসামি ফেনী কারাগারে বন্দি। এ অবস্থায় গত ৩০ মে জেলা আওয়ামী লীগের এক জরুরি সভায় অধ্যাপক মফিজুল হককে উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0044100284576416