জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষের ফেল করা শিক্ষার্থীরা রেজিস্ট্রেশন নবায়নের মাধ্যমে পরীক্ষায় অংশ নেয়ার দাবি জানিয়েছেন। তারা রেজিস্ট্রেশন কার্ডের মেয়াদ দুই বছর বাড়িয়ে পরীক্ষা দেয়া সুযোগ দাবি করেছেন। একইসঙ্গে বারবার পরীক্ষা দিয়েও ফেল করার প্রতিকার চেয়েছেন। ফেল করা শিক্ষার্থীরা তাদের পরীক্ষা নেয়ার ব্যয়ভার বহন করতে প্রস্তুত আছেন বলেও জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে রেজিস্ট্রেশন নবায়ন করে পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগসহ ৫ দফা দাবি জানান। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১০-১১, ২০১১-১২, ২০১২-২০১৩, ২০১৩-২০১৪ এবং ২০১৪-১৫ কয়েকজন শিক্ষার্থী এ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিতে তাদের দাবি তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন খুলনার খান সাহেব কোমরউদ্দীন ডিগ্রি কলেজে ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আমিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, করোনা মহামারির মতো বিপর্যয়ের মাঝে আমরা অনেকেই পরিবারের সদস্যদের হারিয়েছি। অধিকাংশ শিক্ষার্থীই এসময়ই আর্থিক ও মানসিক চাপের মধ্যে থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেও উত্তীর্ণ হতে পারিনি। করোনা মহামারিতে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের অটোপাস দেয়া হয়েছে এবং অন্যান্যদের সিলেবাস শর্ট করে দিয়েছে। আবার যারা অনার্স ও ডিগ্রি নতুন ভর্তি হয়েছে তাদেরও অটোপাস দিয়েছে। সেখানে আমাদের আইন করে রেজিস্ট্রেশন নবায়নের মাধ্যমে পরীক্ষার অংশগ্রহণের সুযোগ বাতিল করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আমরা যারা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১০-১১, ২০১১-১২, ২০১২-১৩, ২০১৩-১৪ এবং ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থী এক বা একাধিক বিষয়ে কোর্সে ‘এফ’ গ্রেড বা অনুপস্থিত আছে এবং যাদের রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ করোনার পরপরই শেষ হয়ে গেছে তাদের আর কোনো পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ দেয়নি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। যার কারণে আমরা এত বছর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেও অনার্স ও ডিগ্রির শিক্ষার্থীরা সার্টিফিকেট অর্জন করতে পারছি না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ৭ কলেজকে নবায়নের সুযোগ দেয়া হয়েছে, তাহলে আমাদের কেন সুযোগ দেয়া হচ্ছে না? শিক্ষা আমার অধিকার, তাহলে আমরা কেন আর কোন সুযোগ পাবো না। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কাছে আমাদের দাবি রেজিস্ট্রেশন নবায়নের মাধ্যমে আমাদের পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ করে দেয়া হোক।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে পাঁচ দফা দাবি জানানো হয়। দাবির বিষয়ে তারা বলেন, রেজিস্ট্রেশন কার্ডের মেয়াদ কমপক্ষে ২ বছর বৃদ্ধি করে পরীক্ষার সুযোগ দেয়া হোক। আমরা বারবার ভালো পরীক্ষা দেয়ার পরেও আমাদের ফেল আসে, খাতা চ্যালেঞ্জ করলেও ফলে পরিবর্তন আসে না, এর প্রতিকার দাবি করছি। আর তা না হলে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর যে ক্রেডিট অর্জন হয়েছে সেটা সিজিপএ উল্লেখসহ সার্টিফিকেট দেয়া হোক। সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের জরিমানা দিয়ে পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ দেয়া হয়েছিলো আমরাও জরিমানা প্রদান করে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে চাই। শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, পরীক্ষা নিতে যে টাকা ব্যয় হবে তার সমস্ত টাকা শিক্ষার্থীরা বহন করবে, তবুও যেন আমাদের সুযোগ দেয়া হয়।
এসময় উপস্থিত মনিরুল ইসলাম নামে এক অভিভাবক বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী কাছে আকুল আবেদন আমার ভাই-বোন এবং সন্তান যারা আছে তাদের যেন রেজিস্ট্রেশন নবায়নের মাধ্যমে পরীক্ষার সুযোগ দেয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. মাশকুরুল, মো. সুজন মিয়া, মো. ইলিয়াস, হাযরাসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।