দিনের শুরুতেই যে এমন চমক অপেক্ষা করছে সেটা আগে জানতেন না আদ্রিয়ানা। প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবারও ঠিক সময়ে ঘুম থেকে উঠেছিলেন। ২২ কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে পৌঁছেছিলেন নিজের কাজের জায়গায়। তারপরই বদলে গেল সবকিছু। চমক না বলে বরং স্বপ্নপূরণ বলাই ভালো। কারণ আদ্রিয়ানা বলেছেন, এই ঘোর কাটতেই চাইছে না তার। খবর সিএনএন, নিউইয়র্ক পোস্টের।
আদ্রিয়ানা এডওয়ার্ড। যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের বাসিন্দা এই তরুণী গালভেস্টনের ডেন্নি’স রেস্তোরাঁয় ওয়েটারের কাজ করেন। গালভেস্টনের যেখানে ওই রেস্তোরাঁ আছে সেখান থেকে আদ্রিয়ানার বাড়ির দূরত্ব প্রায় ২২ কিলোমিটার। পাঁচ ঘণ্টা হেঁটে প্রতিদিনই কাজে যেতেন তিনি। তাও একেবারে সঠিক সময়। কাজে গাফিলতিও দেখা যায়নি কখনও। ‘একটা গাড়ি কিনব বলে পয়সা জমাচ্ছিলাম। তবে আমার দেনা রয়েছে অনেক। টানাটানির সংসার, নিজের পড়ার খরচ, পরিবারের খরচ মিলিয়ে সঞ্চয়ের ভাঁড়ার শূন্যই ছিল’, বলছেন আদ্রিয়ানা। ভাগ্যকে দোষারোপ করেননি কখনও, কারণ পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার জেদ ছিল অদম্য। আদ্রিয়ানার কথায়, ‘একদিন জানতাম ঠিক স্বপ্ন সত্যি হবে। তবে এভাবে হবে আগে ভাবিনি। ঈশ্বরের আশীর্বাদ।’ আদ্রিয়ানার ভাগ্য বদলে যায় দিনকয়েক আগে।
ডেন্নি’স রেস্তোরাঁয় প্রাতঃরাশ সারতে আসেন টেক্সাসেরই এক দম্পতি। ব্রেকফাস্টের থালা সাজিয়ে পরিবেশন করেন আদি য়ানাই। তার মিষ্টি ব্যবহারে মুগ্ধ হন দম্পতি। বিল মিটিয়ে ফিরে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর ফের তারা রেস্তোরাঁয় ফিরে আসেন। আদ্রিয়ানাকে বলেন, তার জন্য একটা উপহার অপেক্ষা করছে রেস্তোরাঁর বাইরে। হতবাক আদ্রিয়ানা বাইরে বেরিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে যান। এ কী দেখছেন তিনি! রেস্তোরাঁর দরজায় দাঁড়িয়ে রয়েছে ঝা চকচকে নতুন গাড়ি। আদ্রিয়ানার জন্য উপহার- ২০১১ নিসান সেন্ত্রা। ‘আমি ভাবতেও পারিনি এমন উপহার পাব। তার থেকেও বড় কথা এমন সুন্দর, নিঃস্বার্থ মনের মানুষের দেখা পাওয়াটা সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার’, বলেছেন আদ্রিয়ানা। ওই দম্পতি অবশ্য তাদের নাম, পরিচয় সামনে আনতে চাননি। তারা বলেছেন, ‘আদ্রিয়ানার প্রতিদিনের সংগ্রাম আমাদের আশ্চর্য করেছিল। পেশার প্রতি কোনো কুণ্ঠা ছিল না তরুণীর। হাসিমুখে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিল। তাই আমরা এই উপহার তাকে দেব ঠিক করি।’ তবে উপহারেরও একটা শর্ত আছে, জানিয়েছেন আদ্রিয়ানা। ওই দম্পতি চান তিনিও যেন একইভাবে অন্যদের সাহায্য করেন, নিজের সাধ্যমতো। দুস্থদের পাশে দাঁড়ান।