র‌্যাগিং নির্মূলে কঠোর অবস্থানে হাবিপ্রবি প্রশাসন

হাবিপ্রবি প্রতিনিধি |

র‍্যাগিংয়ের নামে কোন প্রকার শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন রোধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদেরকে পরিচিত হওয়ার নামে কোন প্রকার হেনস্থার শিকার করা হলে নেয়া হচ্ছে নানাবিধ পদক্ষেপ।

 

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ক্যাম্পাসের প্রত্যেকটি একাডেমিক ভবনের সামনে ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে র‍্যাগিংয়ের কুফল সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে ব্যানার এবং ফেস্টুন লাগানো হয়েছে। সেই সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘র‍্যাগিং প্রতিরোধ ও প্রতিকার নীতিমালা-২০২১’ নীতিমালা বাস্তবায়নে কঠোর অবস্থানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ইতোমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ টি ফ্যাকাল্টিতে স্ব-স্ব ডিনের নেতৃত্বে এবং চেয়ারম্যানগণের সহযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ ও ২২ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের নিয়ে র‍্যাগিংয়ের কুফল সম্পর্কে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে র‍্যাগিং যে একটি অপসংস্কৃতি তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘র‍্যাগিং প্রতিরোধ ও প্রতিকার নীতিমালা ২০২১’ অনুযায়ী র‍্যাগিং অপরাধে যে সব শাস্তির কথা বলা হয়েছে তা হলো: সতর্কতা, বিভিন্ন মেয়াদে শিক্ষা কার্যক্রম হতে সাময়িক বহিষ্কার, শিক্ষা কার্যক্রম হতে স্থায়ী বহিষ্কার, আবাসিক হল হতে সাময়িক বহিষ্কার, আবাসিক হল হতে স্থায়ী বহিষ্কার, ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে প্রচলিত ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী আইন শৃঙ্খলা বাহিনী বরাবর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রেরণ করা।

র‍্যাগিং বলতে সাধারণত নবাগত বা জুনিয়র শিক্ষার্থীদেরকে বিভিন্নভাবে বিব্রত করা, ক্ষতি করা, অপমান করা, শারীরিক, মানসিক নির্যাতন করা ও আক্রমনাত্মক ব্যবহার করা বোঝায়। এছাড়াও কাউকে উদ্দেশ্য করে এমন কিছু বলা বা লেখা যা খারাপ কোন কিছুর প্রতি ইঙ্গিত বহন করে, উপহাস করা, খারাপ নামে সম্বোধন করা বা ডাকা, অশালীন শব্দ ব্যবহার করা, গালিগালাজ করা, হুমকি দেয়া ইত্যাদিকে মৌখিক র‍্যাগিং বলা হয়। কাউকে কোন কিছু দিয়ে আঘাত করা, চড়-থাপ্পর মারা, লাথি মারা, ধাক্কা মারা, খোঁচা দেয়া, থুথু মারা, বেঁধে রাখা, কোন বিশেষ ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে বা বসিয়ে বা বিশেষ অবস্থায় থাকতে নির্দেশ দেয়া অথবা বাধ্য করা, কারো কোনো জিনিপত্র জোর করে নিয়ে যাওয়া বা ভেঙ্গে ফেলা, মুখ দিয়ে অশালীন বা অসৌজন্যমূলক অঙ্গভঙ্গি করাকে শারীরিক র‍্যাগিং বলা হয়। এর পাশাপাশি রয়েছে সামাজিক র‍্যাগিং, সাইবার র‍্যাগিং, সেক্সুয়াল র‍্যাগিং ও জাতিগত র‍্যাগিং।

র‍্যাগিং বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান জানতে চাইলে ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. মাহাবুব হোসেন বলেন, র‍্যাগিং একটি ফৌজদারি অপরাধ। র‍্যাগিং নির্মূলের অংশ হিসেবে আমরা র‍্যাগিং বিরোধী কাউন্সিলিংয়ের ব্যবস্থা করেছি। ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টোরিয়াল বডির সাথে র‍্যাগিং প্রতিরোধে একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের সকল ধরনের অভিযোগ গ্রহণ করার পাশাপাশি সেগুলোর সমাধানে সর্বদাই সচেষ্ট রয়েছি আমরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মামুনুর রশীদ বলেন, র‍্যাগিং একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বিশ্ববিদ্যালয় হলো মুক্তবুদ্ধি এবং জ্ঞানচর্চার অবাধ ও স্বাধীন জায়গা। এখানে শিক্ষার্থীরা বিশ্বমানের জ্ঞান ও প্রযুক্তির সাথে পরিচিত হয়ে নিজেকে যোগ্য এবং দক্ষ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবে। এরূপ বিদ্যাপীঠে র‍্যাগিংয়ের মতো অপসংস্কৃতির স্থান নেই।

তিনি আরও বলেন, র‍্যাগিংয়ের মতো অপসংস্কৃতির চর্চা থেকে বেরিয়ে সুস্থ সংস্কৃতির চর্চা করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সম্পর্ক হবে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ভালোবাসা এবং স্নেহের। জুনিয়র শিক্ষার্থীদের পরিচয় পর্বের নামে সিনিয়র শিক্ষার্থী কতৃর্ক র‍্যাগিং দেয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে র‍্যাগিং এর কুফল সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইতোমধ্যে নানাবিধ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। যারা র‍্যাগিং দেয়ার চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। র‍্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নে আমরা সর্বদা সোচ্চার।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
পুরনো পদ্ধতিতে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা - dainik shiksha পুরনো পদ্ধতিতে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা শিক্ষায় কী হলো তিন মাসে - dainik shiksha শিক্ষায় কী হলো তিন মাসে মাদরাসায় চলে যায় প্রাথমিকের ২৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ শিক্ষার্থী - dainik shiksha মাদরাসায় চলে যায় প্রাথমিকের ২৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ শিক্ষার্থী কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক অবশেষে কপাল খুললো পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তিতে বাদপড়াদের - dainik shiksha অবশেষে কপাল খুললো পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তিতে বাদপড়াদের শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: ১৫তম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি - dainik shiksha শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: ১৫তম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে গণঅভ্যুত্থানে আহতদের তোপের মুখে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা - dainik shiksha গণঅভ্যুত্থানে আহতদের তোপের মুখে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা দপ্তরসহ সাবেক শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রীকে চালাতেন পিয়ন! - dainik shiksha দপ্তরসহ সাবেক শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রীকে চালাতেন পিয়ন! ৬১০ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর শিক্ষা অধিদপ্তরে নিয়োগ চূড়ান্ত! - dainik shiksha ৬১০ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর শিক্ষা অধিদপ্তরে নিয়োগ চূড়ান্ত! দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0055379867553711